শেয়ার বিজ ডেস্ক: চিনির বিকল্প হিসেবে জিরো ক্যালরির ‘কৃত্রিম চিনি’ ইরিথ্রিটলের ব্যবহার বিশ্বে এখন বেশ জনপ্রিয়। কোমল পানীয় থেকে শুরু করে অনেক খাদ্যপণ্যে ইরিথ্রিটল ব্যবহার করা হচ্ছে দেদার। তবে এসব কৃত্রিম চিনি হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ায় বলে দীর্ঘ তিন বছরের এক গবেষণায় এমন তথ্য পেয়েছেন একদল গবেষক। সোমবার ন্যাচার মেডিসিন নামক একটি জার্নালে এ গবেষণার তথ্য প্রথম প্রকাশ করা হয়েছে। খবর: এবিসি নিউজ।
গবেষকরা জানিয়েছেন, যেসব বয়স্ক ব্যক্তি অতিমাত্রায় ইরিথ্রিটল গ্রহণ করেন এবং এরই মধ্যে হার্টের রোগে ভুগছেন তারা সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে রয়েছেন।
তিন বছরের পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, যারা হার্ট ও রক্ত সঞ্চালন-সংক্রান্ত জটিল রোগ হার্ট অ্যাটাক, রক্ত জমাট বাঁধা, স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়েছেন যেসব রোগী এবং তাদের মধ্যে যারা মৃত্যুবরণ করেছেন, তাদের মধ্যে ইরিথ্রিটলের মাত্রা বেশি ছিল।
তবে গবেষকরা আবার বলেছেন, এ বিষয়ে নিশ্চিত হতে আরও অনেক বেশি গবেষণা প্রয়োজন। এখনই শতভাগ নিশ্চিত হয়ে কোনো কিছু বলা যাবে না এবং ইরিথ্রিটলকেই দোষারোপ করা যাবে না। বিশেষ করে যেহেতু এই গবেষণার ফলাফল সবার কাছে সাধারণীকরণযোগ্য নয়।
যুক্তরাষ্ট্রের খাদ্য ও ওষুধ প্রশাসনের (এফডিএ) তথ্য অনুযায়ী, ইরিথ্রিটল হলো একটি ‘চিনি অ্যালকোহল’ যেটি প্রাকৃতিকভাবে তরমুজ, নাশপাতি ও আঙ্গুরে পাওয়া যায়। কিন্তু পরে কৃত্রিম ইরিথ্রিটল খাবারের মিষ্টতা ও স্বাদ বৃদ্ধির জন্য ব্যবহার করার প্রচলন ঘটে।
এফডিএর অধীনে হওয়া যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় স্বাস্থ্য ও পুষ্টি পরীক্ষায় উঠে এসেছে, যুক্তরাষ্ট্রের কিছু মানুষ গড়ে প্রতিদিন ৩০ গ্রামের বেশি ইরিথ্রিটল গ্রহণ করেন।
বিশ্বব্যাপী এই কৃত্রিম চিনি অধিক জনপ্রিয় হওয়ায় কোমল পানীয়, ডায়েট খাবার ও অন্যান্য খাবারে ইরিথ্রিটল ব্যবহার একটি সাধারণ উপকরণে পরিণত হয়েছে। অবশ্য এফডিএর মতো যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলো এখন পর্যন্ত বলেছে, ইরিথ্রিটল বা কৃত্রিম চিনি স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে ঝুঁকিপূর্ণ নয়। তবে এগুলোর দীর্ঘকালীন প্রতিক্রিয়ার বিষয়টি নিশ্চিত নয়।
ইরিথ্রিটলের বিকল্প: যুক্তরাষ্ট্রের একজন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি প্রতিদিন গড়ে ১৭ চা চামচ চিনি অথবা ২৭০ গ্রাম ক্যালরি গ্রহণ করেন বলে এক গবেষণায় জানিয়েছে হার্ভাড বিশ্ববিদ্যালয়।
মার্কিন ডায়েটিশিয়ান আন্না টেইলর ক্লেভল্যান্ড ক্লিনিককে বলেছেন, খাবার অথবা পানীয়কে মিষ্টি করার ক্ষেত্রে সবচেয়ে স্বাস্থ্যকর হলো তাজা অথবা হিমায়িত ফল।