Print Date & Time : 22 June 2025 Sunday 5:43 pm

চিনি-মুরগির দাম কমেছে বেড়েছে সবজির

নিজস্ব প্রতিবেদক: সপ্তাহের ব্যবধানে দাম বেড়েছে সবজির। অপরদিকে কমেছে চিনি ও মুরগির দাম। এছাড়া অপরিবর্তিত রয়েছে অন্যান্য পণ্যের দাম। গতকাল সকালে রাজধানীর মিরপুরের ১১ নম্বর বাজার, মিরপুর কালশী বাজার ও পল্লবী এলাকা ঘুরে এসব চিত্র উঠে এসেছে।

বাজারে বেশিরভাগ সবজির দাম কেজিতে ১০ থেকে ২০ টাকা বেড়েছে। এসব বাজারে প্রতিকেজি শিম ১৪০, গোল বেগুন ৮০, লম্বা বেগুন ৬০, ফুলকপি প্রতিটি ৫০, পাতাকপি প্রতিটি ৬০, করলা ৬০, টমেটো ১৬০ ও বরবটি ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। গাজর প্রতিকেজি ১২০, চালকুমড়া প্রতিটি ৪০, লাউ প্রতিটি আকারভেদে ৬০ থেকে ৮০, মিষ্টিকুমড়ার কেজিপ্রতি ৪০, চিচিঙ্গা ৬০, পটোল ৬০, ঢেঁড়স ৬০, লতি ৬০, কাঁকরোল ৮০, মুলা ৬০, কচুর লতি ৬০ ও পেঁপে কেজিপ্রতি ৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

মিরপুর ১১ নম্বর বাজারের সবজি বিক্রেতা আল আমিন বলেন, শীতের সময় যে পরিমাণ সবজি বাজারে আমদানি হয়, সে অনুযায়ী অনেক কম থাকায় দাম বেড়েছে। তেলের দাম বাড়ায় পরিবহন খরচের সঙ্গে বেড়েছে সবজির দাম।

এসব বাজারে আলুর দাম বিক্রি হচ্ছে ২৫ টাকা কেজিতে। দেশি পেঁয়াজের দাম কেজিপ্রতি ৬০ টাকা। ইন্ডিয়ান ও মিয়ানমারের পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকায়। এসব বাজারে গত সপ্তাহের দামে বিক্রি হচ্ছে কাঁচামরিচ, যা প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকায়। 

কাঁচা কলার হালি বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকায়। পেঁপে প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকায়। শসা বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকায়। লেবুর হালি বিক্রি হচ্ছে ১৫ টাকায়। এছাড়া শুকনা মরিচ প্রতি কেজি ১৫০ থেকে ২৫০, রসুন ৮০ থেকে ১৩০ ও দেশি আদা ৭০ থেকে ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। চায়না আদার কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৬০ টাকায়। হলুদের কেজি ১৬০ থেকে ২২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ইন্ডিয়ান ডাল কেজিপ্রতি বিক্রি হচ্ছে ৯০ টাকায়। দেশি ডাল কেজিপ্রতি বিক্রি হচ্ছে ১১০ টাকায়।

এসব বাজারে ভোজ্যতেলের প্রতি লিটার খুচরা বিক্রি হচ্ছে ১৬০ টাকায়। এছাড়া বাজারে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের তেলের লিটার বিক্রি হচ্ছে ১৫৫ থেকে ১৬০ টাকায়।

কমেছে চিনির দাম। বাজারে প্রতি কেজি চিনি বিক্রি হচ্ছে ৭৫ থেকে ৮০ টাকায়। এছাড়া প্যাকেট চিনি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৮৫ টাকায়। আটা প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩৫ টাকায়। 

বাজারে অপরিবর্তিত আছে ডিমের দাম। লাল ডিমের ডজন বিক্রি হচ্ছে ১১০ টাকায়। হাঁসের ডিমের ডজন বিক্রি হচ্ছে ১৮০ টাকায়। সোনালি (কক) মুরগির ডিমের ডজন বিক্রি হচ্ছে ১৮০ টাকায়। 

বাজারে কমেছে মুরগির দাম। ব্রয়লার মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৬০ টাকায়। গত সপ্তাহের থেকে ১০ টাকা দাম কমে বিক্রি হচ্ছে সোনালি মুরগি, কেজি ২৯০ থেকে ৩০০ টাকা। লেয়ার মুরগি আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে, কেজি ২২০ থেকে ২৩০ টাকা। 

১১ নম্বর বাজারের মুরগি বিক্রেতা মো. রুবেল বলেন, শীতকাল আসছে বলে কমেছে মুরগির দাম। শীতকালে ব্রয়লার মুরগির দাম কম থাকে, কিন্তু সোনালি মুরগির দাম বেশি থাকে। তেল-ডিজেলের দাম বাড়া সত্ত্বেও এখনও মুরগির বাজারে এর কোনো প্রভাব পড়েনি।

এদিকে হঠাৎ করেই জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর প্রতিবাদে শুক্রবার সকাল ৬টা থেকে শুরু হয়েছে অনির্দিষ্টকালের পরিবহন ধর্মঘট। ফলে বাজারে সবজিসহ নিত্যপণ্যের সরবরাহ কিছুটা কমেছে। দেশজুড়ে পণ্য পরিবহন বন্ধ হওয়ায় এ সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীরা।

শুক্রবার সকাল থেকে পরিবহন ধর্মঘট শুরু হলেও অন্যান্য দিনের তুলনায় বৃহস্পতিবার (৪ নভেম্বর) রাতে পণ্যবাহী ট্রাক কম এসেছে বলে জানিয়েছেন বিভিন্ন আড়তের ব্যবসায়ীরা।

সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, শুক্রবার দুপুরে ছোট ছোট পিকআপ ভ্যানে করে কিছু পণ্য বাজারে এসেছে। আর কয়েকটি ট্রাক এলেও সেগুলোর জন্য ব্যবসায়ীদের গুনতে হয়েছে অতিরিক্ত ভাড়া।

এদিকে পণ্য সরবরাহ কম হওয়ায় এবং পরিবহনে খরচ বাড়ায় কাঁচাবাজারে পণ্যের দাম বাড়তে পারে বলে জানিয়েছেন রাজধানীর কারওয়ান বাজারের পাইকারি ব্যবসায়ীরা। তাদের মতে, পণ্য পরিবহন বন্ধ হওয়ায় দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ঢাকায় আসতে পারছে না সবজি। সরবরাহ ব্যবস্থা ভেঙে পড়ায় বরাবরের মতোই সবজির দামও কিছুটা বাড়বে, এটাই স্বাভাবিক। আর তার সঙ্গে অতিরিক্ত পরিবহন খরচ তো আছেই।

রাজধানীর কারওয়ান বাজারের পাইকারি ব্যবসায়ী হাফিজুর রহমান বলেন, পচনশীল পণ্য হওয়ায় সরবরাহ সংকটের তাৎক্ষণিক প্রভাব পড়ে তরকারির বাজারে। কিন্তু চাল, ডালসহ অন্যান্য নিত্যপণ্যে প্রভাবটা পড়তে একটু সময় লাগে।

তিনি যোগ করেন, পণ্যের দামে এখনও অবরোধের প্রভাব পড়েনি। তবে অবরোধ উঠে গেলেই এই প্রভাবটা পড়বে। কারণ দুদিন যেসব মালিক ট্রাক চলাচল করতে দেবেন না, তারা বেশি দামে পণ্য পরিবহন করবেন। ফলে সামনে আরও বেশ কিছুদিন হয়তো ভুগতে হবে ক্রেতাদের।

এর আগে শুক্রবার সকাল ৬টা থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য সব ধরনের গণপরিবহন ও পণ্য পরিবহন চলাচল বন্ধ রাখার ঘোষণা দেয়া হয় বৃহস্পতিবার। ডিজেলের দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদে পণ্য পরিবহন ও গণপরিবহন মালিকরা এ সিদ্ধান্ত নেন।