শেয়ার বিজ ডেস্ক: চীনা আবাসন খাতের অন্যতম বড় প্রতিষ্ঠান এভারগ্রান্ড গ্রুপ যুক্তরাষ্ট্রে দেউলিয়া ঘোষণার জন্য আবেদন করেছে। এর মধ্য দিয়ে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ চীনের আবাসন খাতের সংকট নতুন করে সামনে এসেছে। এ সঙ্কট থেকে উত্তরণে বৃহস্পতিবার নিউইয়র্কের একটি আদালতে সুরক্ষার আবেদন করেছে এই চীনা কোম্পানি। খবর: বিবিসি।
মার্কিন আইনে দেউলিয়া হওয়া থেকে সুরক্ষা পেলে ঋণে জর্জরিত এভারগ্র্যান্ড যুক্তরাষ্ট্রে তাদের সম্পদ রক্ষা করতে পারবে। দুর্দশা থেকে উদ্ধার পেতে আরো কয়েক বিলিয়ন ডলার ঋণের জন্য ঋণদাতাদের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে এভারগ্র্যান্ড।
চীনা এই রিয়েল এস্টেট কোম্পানি ২০২১ সালে ঋণ খেলাপি হলে বিশ্বজুড়ে আর্থিক বাজারে তার ধাক্কা লাগে। তখন থেকেই ঋণ পুনর্গঠনের জন্য আলোচনা চালিয়ে আসছে এভারগ্র্যান্ড।
বিবিসি লিখেছে, এভারগ্র্যান্ডের ঋণের পরিমাণ ৩০০ বিলিয়ন ডলারের বেশি। আবাসন খাতে বিশ্বে আর কোনো কোম্পানির এত বেশি ঋণ নেই। এভারগ্র্যান্ড গত মাসে জানিয়েছে, গত দুই বছরে সব মিলিয়ে ৮০ বিলিয়ন ডলার লোকসান হয়েছে তাদের।
পরিস্থিতি সামাল দিতে ২০২২ সালের মার্চ থেকে এ কোম্পানির শেয়ার লেনদেন স্থগিত রাখা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, ১৯৯৭ সালে ব্যবসায়ী হুই হু ইয়ান এই কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করেন। এভারগ্র্যান্ড চীনের ২৮০টি শহরে ১৩০০টির মতো আবাসিক ও বাণিজ্যিক ভবন তৈরি করেছে। ক্রেতাদের কাছ থেকে আগে অর্থ নিয়ে ফ্ল্যাট তৈরি করতো এভারগ্র্যান্ড। মূলত ক্রেতার অর্থ দিয়েই ফ্ল্যাট তৈরি করা হতো। এভাবে আবাসন ব্যবসা চীনের প্রবৃদ্ধির অন্যতম বড় চালিকাশক্তি হয়ে ওঠে কোম্পানিটি।
‘থ্রি রেড লাইনস’ নামের ওই আইনে প্রপার্টি ডেভেলপারদের ঋণের ক্ষেত্রে বেশ কিছু শর্ত আরোপ করা হয়। ফলে আগের মত চাইলেই ঋণ পাওয়ার সুযোগ বন্ধ হয়ে যায়।
আর তাতে সবচেয়ে বেশি বিপদে পড়ে এভারগ্র্যান্ডের মত কোম্পানিগুলো, ঋণ পাওয়া কঠিন হয়ে যাওয়ায় তাদের বড় প্রকল্পগুলোর কাজ শেষ করা অনিশ্চিত হয়ে পড়ে।
চীনের আরেক বড় রিয়েল এস্টেট কোম্পানি কান্ট্রি গার্ডেন গত সপ্তাহে জানিয়েছে, বছরের প্রথম ছয় মাসে তাদের লোকসানের পরিমাণ সাড়ে সাত বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যেতে পারে।
অর্থনীতির গবেষণা সংস্থা মুডি’স অ্যানালিটিকসের স্টিভেন কোচরান বলছেন, এই সঙ্কট থেকে বের হওয়ার একমাত্র উপায় হল, অসমাপ্ত আবাসন প্রকল্পগুলোর নির্মাণ কাজ শেষ করা। কারণ তাতে অর্থের লেনদেন কিছুটা হলেও বজায় থাকবে।