শেয়ার বিজ ডেস্ক: যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চলমান বাণিজ্য উত্তেজনা বাড়তে থাকায় এবং দ্বিতীয় প্রান্তিকে প্রবৃদ্ধি কমায় অর্থনীতির গতি ধরে রাখতে বেশ কিছু উদ্দীপনামূলক ব্যবস্থা নিয়েছে চীনা সরকার। এ খবরে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে স্বস্তি ফিরে এসেছে। পাশাপাশি বিনিয়োগকারীদের চোখ এখন চলতি সপ্তাহে প্রকাশ হতে যাওয়া বড় কোম্পানিগুলোর আয়ের প্রতিবেদনের ওপর। এর প্রভাবে গতকাল মঙ্গলবার এশিয়ার পুঁজিবাজারে ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা দেখা গেছে। খবর এএফপি।
যুক্তরাষ্ট্র সাম্প্রতিক সময়ে চীন ও ইউরোপের সঙ্গে বাণিজ্য বিবাদে জড়িয়েছে। মেক্সিকো ও কানাডার সঙ্গেও নর্থ আমেরিকান ফ্রি ট্রেড এগ্রিমেন্ট নিয়ে বিবাদ দেশটির। সব মিলিয়ে বাণিজ্য উত্তেজনা যখন চরমে, এমন সময় গত ইউরোপিয়ান কমিশনের প্রেসিডেন্ট জ্যঁ-ক্লথ জাঙ্কার নতুন আশা দেখাচ্ছেন। তিনি বুধবার ওয়াশিংটন যাচ্ছেন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে তিনি বাণিজ্য ইস্যু নিয়ে আলোচনা করবেন। পাল্টাপাল্টি শুল্কারোপ না করে বাণিজ্য উত্তেজনা এড়াতে তিনি চেষ্টা করবেন বলে জানিয়েছেন।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য উত্তেজনা শুরুর পর গত সপ্তাহে চীনের দ্বিতীয় প্রান্তিকের প্রবৃদ্ধি প্রকাশ করা হয়। তাতে দেখা গেছে, আগের প্রান্তিকের তুলনায় প্রবৃদ্ধি কিছুটা কমেছে। কারখানার উৎপাদনেও দেখা গেছে নেতিবাচক প্রভাব। এমন পরিস্থিতিতে দেশটির পুঁজিবাজারেও দেখা দেয় অস্থিরতা। দেশটির মুদ্রা ইউয়ানের মান এক বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে পৌঁছায়। এর পরিপ্রেক্ষিতে প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে ও বাজারে প্রভাব এড়াতে কিছু উদ্দীপনামূলক উদ্যোগ নিয়েছে চীন সরকার। দেশটির প্রধানমন্ত্রী লি কেশিংয়ায় গতকাল এক দশমিক এক ট্রিলিয়ন ইউয়ান বা ১৬০ বিলিয়ন কর হ্রাসের প্রতি জোর দিয়েছেন। এছাড়া এক দশমিক ৩৫ ট্রিলিয়ন ইউয়ানের স্থানীয় সরকারের বিশেষ বন্ড ইস্যুর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।
এর প্রভাবে গতকাল চীনের সাংহাই সূচক এক দশমিক ৬১ শতাংশ বেড়ে দুই হাজার ৯০৫ পয়েন্টে পৌঁছায়। জাপানের নিক্কেই সূচক বেড়েছে এদিন দশমিক ৫১ শতাংশ। এছাড়া হংকংয়ের হ্যাং সেং সূচক বেড়েছে এক দশমিক ৪৪ শতাংশ ও ভারতের সেনসেক্স সূচক বেড়েছে দশমিক ২৯ শতাংশ।
বাজারের উন্নতিতে আরও একটি বিষয় কাজ করেছে। বিনিয়োগকারীদের দৃষ্টি বাণিজ্যযুদ্ধ থেকে করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলোর আয়ের প্রতিবেদনের দিকে গেছে। চলতি সপ্তাহে বড় প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে। ব্রিটেনের কোম্পানি গ্ল্যাসক্রোস্মিথক্লাইন, জাপানের গাড়ি কোম্পানি মিতসুবিসি মোটরস, মার্কিন উড়োজাহাজ নির্মাতা বোয়িং, ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান আমাজন ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকের মতো বড় প্রতিষ্ঠানগুলোর আয়ের প্রতিবেদন চলতি সপ্তাহেই প্রকাশ করা হবে বলে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
গত ৬ জুলাই তিন হাজার ৪০০ কোটি ডলারের পাল্টাপাল্টি শুল্কারোপ কার্যকর করা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চীনের আনুষ্ঠানিক বাণিজ্যযুদ্ধ শুরু হয়েছে। এরই মধ্যে গত সপ্তাহে হোয়াইট হাউজের পক্ষ থেকে অতিরিক্ত ২০ হাজার কোটি ডলারের চীনা পণ্যে ১০ শতাংশ শুল্কারোপের পরিকল্পনার কথা জানানো হয়েছে। প্রতিক্রিয়ায় চীন বলেছে, তারাও ট্রাম্পের এ শুল্কের পাল্টা জবাব দেবে। এর মাধ্যমে বিশ্বের বৃহত্তম দুই অর্থনীতির দেশের মধ্যে বাণিজ্যযুদ্ধ আরও জোরালো হচ্ছে।
