শেয়ার বিজ ডেস্ক: নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ইরান ও উত্তর কোরিয়ায় অবৈধভাবে পণ্য চালানের অভিযোগে সম্প্রতি চীনের সবচেয়ে বড় টেলিকম কোম্পানি জেডটিই’র ওপর চড়াও হয় মার্কিন প্রশাসন। দেশটির বাণিজ্য বিভাগ যুক্তরাষ্ট্রে প্রতিষ্ঠানটির পণ্য বিক্রিতে সাত বছরের জন্য নিষেধাজ্ঞা দেয়। এরপর জেডটিই যুক্তরাষ্ট্রে তাদের কার্যক্রম বন্ধ করে। এতে প্রতিষ্ঠানটিতে কর্মরত চীনাদের চাকরি হুমকিতে রয়েছে। সবাইকে চমকে দিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নিজের অবস্থান থেকে সরে এসেছেন। গতকাল সোমবার তিনি বলেছেন, জেডটিইকে বাঁচাতে তিনি সাহায্য করতে চান। খবর বিবিসি।
এক টুইটে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প জানান, জেডটিইর সংকটের কারণে চীনের অনেক চাকরি ঝুঁকিতে রয়েছে। তাই প্রতিষ্ঠানটিকে ব্যবসায় ফিরিয়ে আনতে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে কাজ করতে চান তিনি।
টুইটে তিনি বলেন, ‘ফোন কোম্পানি জেডটিইকে দ্রুত ব্যবসায় ফেরাতে চীনের প্রেসিডেন্ট শি ও আমি একত্রে কাজ করছি। কারণ জেডটিই সংকটে চীন অনেক চাকরি হারাবে। বাণিজ্য বিভাগকে এ বিষয়ে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।’
প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার আগে থেকেই ট্রাম্প অভিযোগ করে আসছেন, প্রযুক্তির মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের কর্মসংস্থান চুরি করছে চীন। আর এখন তার টুইট ভিন্ন সুরের কথা বলছে। মার্কিন বিশ্লেষকরা বলছেন, এ টুইট ট্রাম্পের অবস্থানের নাটকীয় পরিবর্তের আভাস দেয়।
হোয়াইট হাউজের কর্মকর্তা লিন্ডসে ওয়াল্টার নিশ্চিত করেছেন, জেডটিই’র বিষয়ে চীনা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন মার্কিন কর্মকর্তারা। তিনি বলেন, ট্রাম্পের এ টুইট বাণিজ্য ইস্যুতে চীনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের মুক্ত ও ন্যায্য সম্পর্কের আভাস দেয়।
এদিকে ট্রাম্পের টুইটের পর জেডটিই’র কর্মীরা উল্লাস প্রকাশ করেছেন। প্রতিষ্ঠানটির ম্যানেজার তার উইচ্যাট অ্যাকাউন্টে বলেছেন, ‘কি দারুণ! এটি আমাদের জন্য খুবই আনন্দের খবর’। একইভাবে অন্য কর্মীরাও উল্লাস প্রকাশ করেছেন।
নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ইরানে অবৈধভাবে পণ্য রফতানির অভিযোগে গত মার্চে জেডটিই’র প্রস্তুতকৃত স্মার্টফোন ও অন্য সরঞ্জাম বিক্রিতে সাত বছরের নিষেধাজ্ঞা দেয় মার্কিন বাণিজ্য বিভাগ।
যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানিগুলো জেডটিই থেকেই ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ পণ্য ক্রয় করে। প্রতিষ্ঠানটি স্মার্টফোন ও তথ্যপ্রযুক্তি নেটওয়ার্ক তৈরির গিয়ার সরবরাহ করে আসছিল। যুক্তরাষ্ট্রের এ নিষেধজ্ঞায় চীনা প্রতিষ্ঠানটির জন্য বিপর্যয় বয়ে আনবে বলে আশঙ্কা করছিলেন বিশ্লেষকরা।
অবশ্য বিক্রির ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞাকে অন্যায্য দাবি করেছে প্রতিষ্ঠানটি। পাশাপাশি প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, এ নিষেধাজ্ঞায় তারা টিকে থাকার ঝুঁকিতে রয়েছে। তাই নিজেদের সুরক্ষায় আইনের আশ্রয় নেওয়া হবে।
প্রতিষ্ঠানটির দাবি, কোনো ধরনের তদন্তের আগে শুধু অভিযোগের ওপর ভিত্তি করে এত বড় শাস্তি গ্রহণযোগ্য নয়। এতে জেডটিই শুধু টিকে থাকার ঝুঁকিতেই পড়ছে না, বরং এর মূল কোম্পানিও বড় ধরনের ক্ষতিগ্রস্ত হবে।