চীনের বাণিজ্যনীতি লঙ্ঘনের তদন্ত করবে যুক্তরাষ্ট্র

শেয়ার বিজ ডেস্ক: যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চীনের যে বাণিজ্য চুক্তি রয়েছে চীন তার মেধাস্বত্ব লঙ্ঘন করছে বলে দাবি করছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। চীনের বাণিজ্য চুক্তি লঙ্ঘনের ফলে দিন দিন যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য ঘাটতি বৃদ্ধি পাচ্ছে বলেও মনে করেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট। আর এ জন্য চীনের বাণিজ্য ‘মেধাস্বত্ব’ আইন লঙ্ঘনের তদন্তের ঘোষণা দিয়েছেন ট্রাম্প। স্থানীয় সময় আজ সোমবার এ-সংক্রান্ত এক নির্বাহী আদেশে সই করবেন ট্রাম্প। প্রেসিডেন্টের এ আদেশ এমন সময় এলো যখন উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক ইস্যুতে ট্রাম্পের চীনের সাহায্য খুব প্রয়োজন। খবর রয়টার্স, সিএনএন।

শনিবার হোয়াইট হাউজের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা জানান, চীন মেধাস্বত্ব আইন লঙ্ঘন করে যুক্তরাষ্ট্রে বাণিজ্য করছে। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এ ব্যাপারে দৃঢ় পদক্ষেপ নিতে চলছেন। ট্রাম্প ১৯৭৪ সালের বাণিজ্য আইনের ৩০১ ধারা অনুযায়ী তদন্ত করবেন বলে জানান যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধি রবার্ট লাইটিজার।

ট্রাম্প বলেন, ‘চীনের সঙ্গে বাণিজ্য ঘাটতিতে বছরে আমরা বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি। তাদের (চীনের) বোঝা উচিত, তারা যদিও আমাদের সাহায্য করে, আমরা বাণিজ্যের ব্যাপারে আরও ভিন্ন পন্থা বের করবো।’

যুক্তরাষ্ট্র-চায়না ইকোনমিক অ্যান্ড সিকিউরিটি রিভিউ কমিশনের মাইকেল ভিসেল বলেন, ‘এটি একটি ক্রিটিকাল ও বিলম্বিত একটা পদক্ষেপ মাত্র।’

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন, ট্রাম্প চীনকে শিক্ষা দিতে এ পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছেন। যাতে চীন পরমাণু ইস্যুতে কোরিয়ার বিরুদ্ধে কথা বলে।

প্রসঙ্গত, সাম্প্রতিক সময়ে পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্র ও উত্তর কোরিয়া কাউকে ছাড় দিতে চাচ্ছে না। এরই মধ্যে প্রশান্ত মহাসাগরে যুক্তরাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রিত গুয়াম দ্বীপে হামলার হুমকি দিয়েছে কোরিয়া। যেখানে যুক্তরাষ্ট্রের বৃহৎ সামরিক ঘাঁটি রয়েছে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ট্রাম্প কোরিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞাসহ বিভিন্ন হুমকি দিচ্ছেন। এ সময় চীনকে কাছে পাচ্ছেন না ট্রাম্প। আর তাই চীনের ওপর ক্ষেপেছেন ট্রাম্প।

তবে বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, ‘চীন যদি উত্তর কোরিয়ার (নিউক্লিয়ার উইপন্স) পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচি ধ্বংস করতে সাহায্য করে, তবে ট্রাম্প চীনকে আরও বেশি সহজ করে দেবে যুক্তরাষ্ট্রে বাণিজ্য করতে।’

এর আগে উত্তর কোরিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞার ব্যাপারে চীন একসঙ্গে কাজ করবে বলে যুক্তরাষ্ট্রকে আশ্বস্ত করেছে বেইজিং। যদিও ট্রাম্প বেইজিংকে যথেষ্ট মনে করছেন না।

হোয়াইট হাউজ জানায়, শুক্রবার ট্রাম্পের সঙ্গে চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিং পিংয়ের টেলিফোনে কথা হয় কোরীয় দ্বীপ নিয়ে। সেখানে তারা তাদের আগের আলোচনা নিয়ে কথা বলেন। উভয় প্রেসিডেন্ট কোরিয়ার ব্যাপারে একসঙ্গে কাজ করার কথা বলেন। তবে অন্য সূত্রে জানা যায়, চীনা প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে আরও ‘সাবধান’ হয়ে কথা বলার জন্য বলেছেন। যদিও যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন, জাপান, কানাডা ও জার্মানি সবাই চীনের মেধাস্বত্ব চুরি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিল। বিশেষ করে চীন প্রযুক্তি ক্ষেত্রে মেধাস্বত্ব নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করছে। আর চীন বলে আসছে তারা সঠিক পথেই বাণিজ্য করছে।

চীনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের ঘাটতি বাণিজ্য দ্বিগুণের বেশি। চীন কম দামে যুক্তরাষ্ট্রে স্টিল, কল-কারখানার যন্ত্রপাতি বাণিজ্য করে। ক্ষমতায় আসার পর ট্রাম্প চীনের সঙ্গে ঘাটতি বাণিজ্য বন্ধের তাগিদ দেন যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য দফতরকে।

Add Comment

Click here to post a comment

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০