Print Date & Time : 21 June 2025 Saturday 5:42 pm

চীনে প্রতিনিধি অফিস খুলছে ইবিএল

নিজস্ব প্রতিবেদক: চীনে প্রতিনিধি অফিস খুলছে বেসরকারি ইস্টার্ন ব্যাংক লিমিটেড (ইবিএল)। আজ রোববার দেশটির গুয়াংঝুতে প্রতিনিধি অফিস উদ্বোধন করার কথা রয়েছে। ব্যাংকটির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের একটি দল সেখানে প্রতিনিধি অফিস উদ্বোধন করবে।
জানা গেছে, ইবিএলই বাংলাদেশের প্রথম ব্যাংক যারা চীনে তাদের কার্যক্রম শুরু করতে যাচ্ছে। ব্যবসা ক্ষেত্রে সম্ভাব্য সুযোগ কাজে লাগানো এবং ক্রমবর্ধমান বাংলাদেশ-চীন বাণিজ্যে অবদান রাখার লক্ষ্যে এ উদ্যোগ গ্রহণ করেছে ব্যাংকটি।
এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, হংকং ও মিয়ানমারের পর দেশের বাইরে এটি ইবিএলের তৃতীয় অফিস। ২০১৩ সালে হংকংয়ে নিজস্ব ফাইন্যান্স কোম্পানি-ইবিএল ফাইন্যান্স (এইচকে) লিমিটেড চালুর মাধ্যমে ইবিএল বিদেশে তাদের কার্যক্রম শুরু করে। পেশাদার ও দক্ষ ব্যবস্থাপনা কাজে লাগিয়ে ইবিএল ফাইন্যান্স (এইচকে) লিমিটেড সফলভাবে কার্যক্রম পরিচালনা ও নিয়মিতভাবে মুনাফা অর্জনে সমর্থ হয়েছে। প্রাথমিকভাবে মাত্র এক কোটি ৪৭ লাখ ৮০ হাজার টাকা মূলধন নিয়ে কার্যক্রম শুরু করলেও ২০১৮ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রতিষ্ঠানটির অর্জিত মোট মুনাফার পরিমাণ প্রায় ৪২ কোটি ৫০ লাখ টাকা। অর্জিত মুনাফা থেকে এরই মধ্যে ২৩ কোটি ৫০ লাখ টাকা বাংলাদেশে নিয়ে আসা হয়েছে। সম্পদ ও রাজস্ব আয়ের হিসাবে ইবিএল ফাইন্যান্স (এইচকে) হংকংয়ে কার্যরত বৃহত্তম বাংলাদেশি আর্থিক প্রতিষ্ঠান।
ইবিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী আলী রেজা ইফতেখার এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘আন্তর্জাতিক ব্যবসা ও ট্রেড ফাইন্যান্সিংয়ের ক্ষেত্রে শক্তিশালী অবস্থানের জন্য আমরা বিশেষভাবে পরিচিত। আমাদের সক্ষমতার মূলে রয়েছে প্রশংসনীয় ক্রেডিট ওয়ার্দিনেস (ক্রেডিট যোগ্যতা), করেসপন্ডেন্ট ব্যাংকিং নেটওয়ার্কের মাধ্যমে বিশ্ববাজারের সঙ্গে যোগাযোগ। বাংলাদেশ দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে এবং আমরা মনে করি, আন্তর্জাতিক ব্যবসা এবং ট্রেড ফাইন্যান্সিংয়ে নিজস্ব অভিজ্ঞতা ও দক্ষতা কাজে লাগিয়ে ইবিএল বাংলাদেশের অর্থনীতিতে ভূমিকা রাখতে পারে।’
বাংলাদেশে কার্যক্রম পরিচালনাকারী নেতৃস্থানীয় বিভিন্ন চীনা ব্যাংক ও করপোরেট প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ইস্টার্ন ব্যাংকের সম্পর্ক অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ। শীর্ষস্থানীয় চীনা ব্যাংক যেমন ব্যাংক অব চায়না, চায়না কনস্ট্রাকশন ব্যাংক, ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যান্ড কমার্শিয়াল ব্যাংক অব চায়না, এগ্রিকালচার ব্যাংক অব চায়নাসহ অন্যদের সঙ্গে ইবিএল কাজ করে আসছে।
ইবিএল সম্প্রতি চায়না ইউনিয়ন পে’র সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করেছে এবং চায়না থেকে উৎপত্তি লাভকারী ব্যবসায় সহযোগিতা প্রদানের লক্ষ্যে ‘চীনা ডেস্ক’ চালু করা হয়েছে। বাংলাদেশে চীনা দূতাবাস তাদের ব্যাংকিংয়ের জন্য ইবিএলকে বেছে নিয়েছে। ইস্টার্ন ব্যাংকের মাধ্যমে দূতাবাস চীনা ভিসা ফি সংগ্রহ করছে। চীনা কারেন্সিতে এলসি ব্যবসার জন্য ইবিএল আরএমবি অ্যাকাউন্ট (ব্যাংক অব চায়নার সঙ্গে চীনা কারেন্সিতে ‘নসট্রো’ অ্যাকাউন্ট) চালু করেছে। বাংলাদেশের মেগা প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত বিভিন্ন শীর্ষস্থানীয় চীনা করপোরেট প্রতিষ্ঠান, যেমন: পাওয়ার চায়না, সিএন টেক, চায়না রেলওয়ে, সিএমইসি ও হিউম্যান প্রিন্টিংয়ের সঙ্গেও কাজ করছে ইবিএল।
চীন বর্তমানে বাংলাদেশের বৃহত্তম ট্রেডিং পার্টনার। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে দ্বিপক্ষীয় ট্রেডের পরিমাণ ছিল এক হাজার ২৪০ কোটি ডলার। অর্থনীতিবিদদের মতে, ২০২১ সাল নাগাদ এটির পরিমাণ এক হাজার ৮০০ কোটি ডলারে উন্নীত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।