চীন-মার্কিন বাণিজ্যিক দ্বন্দ্ব সমাধানের ইঙ্গিত

শেয়ার বিজ ডেস্ক: চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিরা বাণিজ্য বিষয়ে বেশ কয়েকটি ক্ষেত্রে একমত হয়েছেন। তবে অন্যান্য বিষয়ে বড় ধরনের মতানৈক্য দেখা গেছে। দু’দেশের মধ্যকার বৈঠক শেষে শুক্রবার চীনের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা সিনহুয়া এ তথ্য জানিয়েছে। খবর রয়টার্স, সিএনএন।
দু’দেশই তাদের বাণিজ্যিক দ্বন্দ্ব সমাধানের ক্ষেত্রে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে বলে জানায় সিনহুয়া। চীনের টেলিকমিউনিকেশন কোম্পানি জেডটিই’র কাছে মার্কিন কোম্পানিগুলোর যন্ত্রপাতি ও সফটওয়্যার বিক্রির বিষয়ে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার বিষয়ে মার্কিন আলোচকরা রাজি হয়েছেন বলে সিনহুয়ার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। এর আগে মার্কিন চুক্তি লঙ্ঘনের দায়ে জেডটিই’র ওপর সাত বছরের নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল ট্রাম্প প্রশাসন।
ওই প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, দুদেশের বাণিজ্যিক আলোচনা স্পষ্ট, ফলপ্রসূ ও গঠনমূলক হয়েছে। তবে কী কী বিষয়ে একমত হয়েছে সে বিষয়ে বিস্তারিত কিছু বলা হয়নি।
শুল্ক ও অশুল্কবিষয়ক সমস্যার সমাধান, দু’দেশের মধ্যে বিনিয়োগ সম্প্রসারণ, বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পদের সুরক্ষা, চীনে যুক্তরাষ্ট্রের রফতানি বাড়ানো এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যসেবার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। তবে আলোচনার ওপর ভিত্তি করে কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, তা স্পষ্ট করে বলা হয়নি প্রতিবেদনে।
এ বিষয়ে হংকংয়ের একজন জ্যেষ্ঠ অর্থনীতিবিদ কেলভিন লাই বলেন, ‘আমার ধারণা ছিল এ আলোচনা খুব ভালো কিছু দিতে পারবে না। এখনও আমার মনে হয় বড় ধরনের মতানৈক্য থেকে গেছে।’ তবে এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যিক প্রতিনিধিদল কোনো বক্তব্য দেয়নি।
বৈঠক শেষে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিদল বেইজিং ছেড়েছে বলে একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন। বিশ্বের সবচেয়ে বড় অর্থনীতির এ দু’দেশের মধ্যে চলমান উত্তেজনা প্রশমনে বুধবার দুদিনের সফরে চীনে পৌঁছে যুক্তরাষ্ট্রের উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিদল। আলোচনার জন্য চীনে যাওয়া যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিদলের মধ্যে ছিলেন দেশটির অর্থমন্ত্রী স্টিভেন মানিউচিন ও বাণিজ্যমন্ত্রী উইলবার রসসহ হোয়াইট হাউজের উচ্চপর্যায়ের কয়েকজন কর্মকর্তা।
যুক্তরাষ্ট্র ও চীন কয়েক মাস ধরেই পরস্পরের পণ্যের ওপর পাল্টাপাল্টি শুল্কারোপের প্রতিযোগিতায় নামে। এছাড়া আরও নতুন নতুন পণ্যে শুল্কারোপের হুমকি দিয়েছিল। যুক্তরাষ্ট্রের বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পদ রক্ষার নামে তথাকথিত ‘সেকশন ৩০১’র অধীনে চীনা পণ্যের ওপর ৫০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার শুল্কারোপের প্রস্তাব করেছিল এবং তা জুন থেকে কার্যকরের কথা বলেছিল। এদিকে চীনও পাল্টা সয়াবিন ও জাহাজশিল্পসহ যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যের ওপর শুল্কারোপের ঘোষণা দিয়েছিল। এ নিয়ে দুদেশের বাণিজ্যে ব্যাপক অস্থিরতার পাশাপাশি সারা বিশ্বে বাণিজ্যযুদ্ধ শুরুর মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়। এরই মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে আলোচনায় স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছে আন্তর্জাতিক মহল।