Print Date & Time : 20 June 2025 Friday 11:31 am

চুরি হয়ে যাচ্ছে পরিত্যক্ত ভবনের সরঞ্জাম

তৈয়ব আলী সরকার, নীলফামারী: নীলফামারীর সৈয়দপুর ২০ মেগাওয়াট গ্যাস টারবাইন বিদ্যুৎকেন্দ্রের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বসবাস না করায় আবাসিক এলাকাটি এখন পরিত্যাক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। ফলে ভবনগুলো মাদকসেবী ও অপরাধীদের অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছে। পাশাপাশি কোয়ার্টারগুলোর মূল্যবান দরজা-জানালা ও ফিটিংস চুরি হয়ে যাচ্ছে।

জানা যায়, ১৯৫৬ সালে পূর্ব বোতলাগাড়ি মৌজায় প্রায় ৬১ একর জমি অধিগ্রহণ করে তাতে গড়ে তোলা হয় ১০ মেগাওয়াট ডিজেল বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র। পরে কেন্দ্রের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বসবাসের জন্য ১৯৬৮ সালে ৩০ ইউনিটের তিনটি চারতলা ও একটি দ্বিতল ভবন নির্মাণ করা হয়।

একই স্থানে ১৯৮৮ সালে নতুন করে ২০ মেগাওয়াট গ্যাস টারবাইন বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপিত হয়। এতে জনবলের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় কর্মকর্তাদের আরও ১২ ইউনিটের দুটি দ্বিতল ভবন ও কর্মচারীদের জন্য ৩২ ইউনিটের চারতলা ভবন নির্মাণ করা হয়। এর মধ্যে পুরোনো দুটি চার তলা ভবন রাখা হয় ব্যাচেলরদের (অবিবাহিত) জন্য।

এদিকে, অব্যাহত লোকসানের কারণে ২০০৮ সালে ডিজেলচালিত ১০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনকেন্দ্রটি বন্ধ করে দেয় সরকার। ফলে এর আওতাধীন কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অন্যত্র বদলি করা হয়। ফলে বিশাল আবাসিক এলাকায় কর্মকর্তাদের চারটি দ্বিতল ভবন ও কর্মচারীদের চারটি চারতলা ভবন পরিত্যক্ত রয়েছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, সীমানা প্রাচীর ঘেরা হলুদ রঙের চারতলা আবাসিক ভবনগুলো পড়ে আছে ফাঁকা। এর ১৬টি ইউনিটে কয়েকটি তালাবদ্ধ থাকলেও বাকিগুলো খোলা পড়ে আছে। পাশের লাল রঙের দ্বিতল ভবনগুলোর অবস্থা একই। ভবনগুলোর অধিকাংশের দরজা, জানালা, বিভিন্ন ফিটিংস চুরি হয়ে গেছে। ভবনগুলোর ভেতরে ময়লা-আবর্জনার স্তূপ আর বাইরে প্রাঙ্গণ ঢেকে গেছে ঝোঁপঝাড়ে। তবে প্রবেশ পথে পুলিশ ও নিরাপত্তা প্রহরী রয়েছে। সৈয়দপুর বিদ্যুৎ শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক (সিবিএ নেতা) কামরুজ্জামান সরকার অভিযোগ করেন, বিদ্যুৎকেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী তার নির্ধারিত সরকারি বাসভবনে বসবাস করেন না। তিনি বাইরে থেকে এসে সপ্তাহে দু’একদিন অফিস করেন। বিশেষ প্রয়োজনে সৈয়দপুরে থাকতে হলে তিনি রেস্ট হাউজে অবস্থান করেন। আর এ কারণে কর্মচারীরা ঢিলেঢালাভাবে (ইচ্ছেমত) দায়িত্ব পালন করছে।

সহকারী প্রকৌশলী শহিদুল ইসলাম জানান, তিনি এ ব্যাপারে কোনো কথা বলতে পারবেন না। ব্যবস্থাপকের (নির্বাহী প্রকৌশলী) সঙ্গে কথা বলতে বলেন। সৈয়দপুর ২০ মেগাওয়াট গ্যাস টারবাইন বিদ্যুৎকেন্দ্রের ব্যবস্থাপক (নির্বাহী প্রকৌশলী) আবুল কালাম আজাদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি।