প্রতিনিধি, চুয়াডাঙ্গা: চুয়াডাঙ্গায় নিখোঁজের ২৬ দিন পর আবু হুরায়রা (১১) নামে তৃতীয় শ্রেণির এক স্কুলছাত্রের অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
রোববার রাত আড়াইটার দিকে চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার ৬নং ওয়ার্ডের তালতলা গ্রামের গোরস্তান পাড়ার পুরাতন একটি কবর থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়।
হুরায়রার চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার ৬নং ওয়ার্ডের তালতলা গ্রামের গোরস্তানপাড়ার আব্দুল বারেকের ছেলে। সে চুয়াডাঙ্গা ভিজে সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ের ৩য় শ্রেণীর ছাত্র ছিলো।
নিহতের পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, গত ১৯ জানুয়ারি বিকেলে ওই স্কুলছাত্র নিজ বাড়ি থেকে একই গ্রামের শিক্ষক রঞ্জুর কাছে প্রাইভেট পড়তে যায়। এরপর থেকে সে নিখোঁজ হয়। এই ঘটনায় তার পিতা চুয়াডাঙ্গা সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী করে।
পরে ২৯ জানুয়ারি তার পরিবারের কাছে মুক্তিপণ বাবদ চিরকুট দিয়ে ১০ লাখ টাকা দাবি করে অপহরণকারীরা। এরপর ১ ফেব্রুয়ারি চিরকুট দিয়ে অভিযুক্তরা মোবাইল ফোনে নাম্বার দেয়। এছাড়া এসএমএস দিয়ে পুনরায় চাঁদা দাবি। পরের দিন স্কুলছাত্রের পরিবার মুক্তিপণ বাবদ ৫ লাখ টাকা দিতে চাইলে তারা ১০ লাখ টাকা দাবি করে। ৩ ফেব্রুয়ারি তারা একটি মোবাইল নাম্বার থেকে ফোন দিয়ে চাঁদা চায়। ৪ ফেব্রুয়ারি মুক্তিপণের জন্য ৬ লাখ টাকা দাবি করে অভিযুক্তরা। পরে হুরায়রার পরিবারের পক্ষ থেকে চিরকুট ও মোবাইল ফোন নাম্বার পুলিশকে দেয়া হয়। পুলিশ তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার করে অভিযুক্তদের সনাক্ত করে মোমিনকে আটক করলে হত্যা রহস্য উদঘাটন হয়।
চুয়াডাঙ্গা সদর থানার ওসি মোহাম্মদ মহাসিন বলেন, গত ২৬ জানুয়ারি আবু হুরায়রার পিতা বাদী হয়ে ৫ জনের নাম উল্লেখ করে সদর থানায় অপহরণ মামলা দায়ের করেন। এ মামলায় পুলিশ দুই জনকে গ্রেপ্তার করে।
রোববার রাতে চুয়াডাঙ্গা সদর থানা পুলিশ তালতলা গ্রামের গোরস্তানপাড়া থেকে শহিদুল ইসলামের ছেলে মোমিনকে আটক করে থানায় নেয়া হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে আবু হুরায়রাকে শ্বাসরোধ করে হত্যার পর লাশ গ্রামের গোরস্তানের একটি পুরাতন কবর খুঁড়ে গুম করে রাখার কথা স্বীকার করে। পরে রাতেই মোমিন লাশ গুম করে রাখা কবরটি পুলিশকে দেখিয়ে দিলে কবর খুঁড়ে হুরায়রার অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করা হয়।
৬ বোনের একমাত্র ছোট ভাই ছিল আবু হুরায়রার। সন্তান হারানোর শোকে পাগল প্রায় পরিবারের সদস্যরা।