Print Date & Time : 17 June 2025 Tuesday 11:21 pm

চুয়াডাঙ্গায় বাড়ছে ডায়রিয়ার প্রাদুর্ভাব

প্রতিনিধি, চুয়াডাঙ্গা : চুয়াডাঙ্গায় আবহাওয়ার পরিবর্তনজনিত কারনে বাড়ছে ডায়রিয়ার প্রাদুর্ভাব। বিশেষ করে শীতকালীন রোটা ভাইরাসের কারণে ডায়রিয়া আক্রান্ত হচ্ছে মানুষ। এদের মধ্যে শিশুর সংখ্যাই বেশি।

গত কয়েকদিন ধরে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে উপচেপড়া ভীড়। হাসপাতালে শয্যা সংখ্যা কম হওয়ায় চিকিৎসা নিতে এসে ভোগান্তিতে পড়ছেন সাধারণ রোগী। চিকিৎসকরা বলেছেন, আবহাওয়া পরিবর্তনের কারণে ডায়রিয়া আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে, রোগী বাড়লেও সংকট নেই স্যালাইন ও ওষুধের।

জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালটি ১০০ শয্যার হলেও নেই ডায়রিয়া ওয়ার্ড। রোগীদের সুবিধার্থে পুরাতন ভবনের নীচ তলায় সিড়ির পাশে দু’টি কক্ষে ডায়রিয়া রোগীদের চিকিৎসা দেয়া হয়। সেখানে ধারণ ক্ষমতা ২০ জন। ১ জন সিনিয়ার স্টাফ নার্স, ২ জন শিক্ষানবিশ নার্স ও একজন সেচ্ছাসেবী রোগীদের সেবা দিয়ে যাচ্ছেন।

শনিবার বিকালে হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ড ঘুরে দেখা গেছে, ওয়ার্ডের ভিতর জায়গা না পেয়ে বারান্দায়, র‌্যাম সিঁড়িতে এমনকি আবাসিক মেডিকেল অফিসারের কক্ষের সামনে ডায়রিয়া রোগীরা চিকিৎসা নিচ্ছে।

গত ৭ দিনে সদর হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ডে ভর্তি থেকে চিকিৎসা নিয়েছেন ২১৫ জন। এরমধ্যে শনিবার বিকাল ৫টা পর্যন্ত রোগী ভর্তি হয়েছেন ৩০ জন। বর্তমানে ভর্তি রয়েছেন ১০৪ জন। এছাড়া জরুরী বিভাগ ও আন্তঃবিভাগ থেকে চিকিৎসা নিয়েছেন ৩ শতাধিক রোগী। গত ১২তারিখে ভর্তি ছিল ৫৯ জন,১৩ তারিখে ৬৬জন,১৪ তারিখে ৫৬ জন , ১৫ তারিখে ৭১ জন,১৬ তারিখে ৮১ জন, ১৭ তারিখে ৮৬ জন ও ১৮ তারিখে ৮৮জন । হাসপাতালে ডায়রিয়া ওয়ার্ডে রোগীর সংখ্যা আরো বাড়বে বলে জানান ইনচার্জ কহিনুর বেগম।

চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার হাসনহাটি গ্রামের মরিয়ম জানান, আমার মেয়ের ঠান্ডা থেকে হঠাৎ ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হন। ওয়ার্ডে কোনও জায়গায় না পেয়ে শেষমেশ সিঁড়ির নিচে সামান্য জায়গা হয়েছে।

হাসপাতালে ভর্তি রোগী ও তাদের স্বজনরা জানিয়েছেন, একটি কক্ষে ১০-১২ জন রোগীর চিকিৎসা চলছে। এতেও অনেকে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। শিশুদের হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা দিয়ে বাড়ি নিয়ে গেলে আবারও তারা আক্রান্ত হচ্ছে।

শিশু বিশেষজ্ঞ ডাঃ মাহাবুবুর রহমান মিলন বলেন, আবহাওয়া পরিবর্তনের কারণে ডায়রিয়ার রোগী সংখ্যা বেড়েছে। বিশেষ করে শিশুরা আক্রান্ত বেশী হচ্ছে। এর থেকে প্রতিকার পেতে বাসি ও ঠান্ডা খাবার থেকে দূরে থাকতে হবে। টয়লেট করার পর সাবান দিয়ে ভালোভাবে হাত পরিস্কার করতে হবে। শিশুদের মায়ের বুকের দুধের পাশাপাশি পুষ্টিকর খাবার খাওয়াতে হবে। ঠান্ডায় শিশুদের ঘরের বাইরে বের হতে দেয়া যাবেনা। গরম কাপড় পরিধান করাতে হবে।

চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের তত্ত্ববধায়ক ডাঃ আতাউর রহমান মুন্সী বলেন, শীতজনিত কারণে ডায়রিয়ার রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। ডায়রিয়া রোগীদের চিকিৎসায় সব ধরণের ব্যবস্থা নেওয়া আছে। হাসপাতালে পর্যাপ্ত স্যালাইন ও প্রয়োজনীয় ওষুধ আছে।