Print Date & Time : 24 June 2025 Tuesday 10:00 am

চুয়াডাঙ্গায় সরষের ভালো ফলনের আশা

মফিজ জোয়ার্দ্দার, চুয়াডাঙ্গা: চুয়াডাঙ্গায় চলতি মৌসুমে প্রায় দুই হাজার একর জমিতে সরষের আবাদ হয়েছে। বর্তমানে ফুলে ফুলে হলুদ বর্ণ ধারণ করেছে সরষেক্ষেত। প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে ভালো ফলনের আশা করছেন কৃষক ও কৃষিবিভাগ।
চুয়াডাঙ্গা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, ২০১৭-১৮ মৌসুমে চুয়াডাঙ্গায় তিন হাজার ১০০ হেক্টর জমিতে সরষের আবাদ হয়েছিল। চলতি মৌসুমে জেলার এক হাজার ৭০০ হেক্টর জমিতে সরষের আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে সদর উপজেলায় ১৫০ হেক্টর, আলমডাঙ্গায় এক হাজার ২১০ হেক্টর, দামুড়হুদায় ১৬৫ হেক্টর ও জীবননগরে ১৭৫ হেক্টর জমিতে সরষে আবাদ করা হয়েছে। এবার চাষিরা টরি-৭ এবং বারি-৯, ১৩ ও ১৪ জাতের সরষে বেশি আবাদ করেছেন। সরষে ফসল উঠতে ৮৫ থেকে ৯০ দিন সময় লাগে।
চুয়াডাঙ্গা উপজেলার উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা নাজমুল হক জানান, চুয়াডাঙ্গার মাটি সরষে চাষের জন্য বেশ উপযোগী। টরি-৭ জাতের সরষে প্রতি বিঘায় তিন থেকে সাড়ে তিন মণ, রাই-৫ জাতের সরষে বিঘাপ্রতি সোয়া তিন থেকে সাড়ে তিন মণ, বারি জাতের ৭-৮ সরষে প্রতি বিঘায় সাড়ে ছয় থেকে আট মণ, বারি-৯-১০ জাতের সরষে প্রতি বিঘায় ছয় থেকে আট মণ, বারি-১১ জাতের সরষে প্রতি বিঘায় সাড়ে ছয় থেকে আট মণ, বারি সরষে ১২ জাতের প্রতি বিঘায় পাঁচ থেকে ছয় মণ, বারি-১৩, ১৪ জাতের সরষে প্রতি বিঘায় সাত থেকে ৯ মণ উৎপাদিত হয়।
আলমডাঙ্গা উপজেলার মাজহাদ গ্রামের আবদুস সালাম ২৫-৩০ বছর ধরে সরষে আবাদ করছেন। এবার তিনি দুই বিঘা জমিতে বারি-২ জাতের সরষে আবাদ করেছেন। সরষের ক্ষেত এ বছর খুব ভালো হয়েছে। বিঘাপ্রতি তার সরষের ফলন সাত-আট মণ হতে পারে। তিনি জানান, এবার বীজ, সার ও সরষে ঘরে তোলা পর্যন্ত ব্যয় হবে তিন হাজার টাকা। এখন সরষে প্রতিমণ বিক্রি হচ্ছে দুই হাজার ৪০০ টাকায়। নতুন সরষে উঠলে দাম কমতে পারে।
একই গ্রামের আরিফুর রহমান মল্লিক জানান, তিনি এ বছর আগাম বারি-৯ জাতের সরষের আবাদ করেছেন। তার ক্ষেত বর্তমানে হলুদ বর্ণে পরিপূর্ণ। তিনি সরষে বপনের পর একবার সেচ ও সার দিয়েছেন।
সদর উপজেলার বোয়ালমারী গ্রামের সাজিবার রহমান জানান, তিনি গত বছর দেশি সরষের আবাদ করেছিলেন। ফলন কম হওয়ায় তিনি এ বছর কৃষি বিভাগের পরামর্শ নিয়ে বারি-১৪ জাতের সরষের আবাদ করেছেন।
চুয়াডাঙ্গা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক নাঈম আস সাকীব জানান, বারি-৯, ১৩ ও ১৪ জাতের সরষে আবাদে চাষিদের উদ্বুদ্ধ করতে সরকারিভাবে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এজন্য চাষিদের সঙ্গে সমন্বয় করা হচ্ছে। দেশি সরষে মাড়াই করে ২৫০ থেকে ৩০০ গ্রাম, টরি-৭ জাতের সরষে প্রতিকেজি মাড়াই করে ৩৮০ থেকে ৪১০ গ্রাম, রাই-৫ জাতের সরষে প্রতিকেজি মাড়াই করে ৩৯০ থেকে ৪০০ গ্রাম এবং বারি-৮, ৯, ১০, ১১, ১২, ১৩ ও ১৪ জাতের সরষে প্রতি কেজি মাড়াই করে ৪৩০ গ্রাম থেকে ৫০০ গ্রাম তেল পাওয়া যায়।