নিজস্ব প্রতিবেদক: মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় ১০৮ একর জমিতে অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তুলতে চূড়ান্ত অনুমোদন (লাইসেন্স) পেয়েছে সিটি গ্রুপ; এর নাম দেওয়া হয়েছে ‘হোসেন্দি ইকোনমিক জোন’। সম্প্রতি রাজধানীর কারওয়ান বাজারে বেজা কার্যালয়ে হোসেন্দি ইকোনমিক জোনের চেয়ারম্যান শম্পা রহমানের হাতে চূড়ান্ত অনুমোদন তুলে দেন বেজার নির্বাহী চেয়ারম্যান পবন চৌধুরী।
হোসেন্দি ইকোনমিক জোন বাংলাদেশে বেসরকারি খাতে চূড়ান্ত অনুমোদন পাওয়া একাদশ অর্থনৈতিক অঞ্চল। এ নিয়ে সিটি গ্রুপের দুটি অর্থনৈতিক অঞ্চল চূড়ান্ত অনুমোদন পেল। এর আগে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে সিটি ইকোনমিক জোনকে চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছিল সরকার।
এছাড়া এর আগে সিরাজগঞ্জ ইকোনমিক জোন, আবদুল মোনেম ইকোনমিক জোন, আমান ইকোনমিক জোন, বে ইকোনমিক জোন, মেঘনা ইকোনমিক জোন, মেঘনা ইন্ডাস্ট্রিয়াল ইকোনমিক জোন, কর্ণফুলী ড্রাই ডক স্পেশাল ইকোনমিক জোন, ইস্ট ওয়েস্ট স্পেশাল ইকোনমিক জোন ও কিশোরগঞ্জ ইকোনমিক জোনকে চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। সরকারিভাবে ছয়টি অর্থনৈতিক অঞ্চলের কাজ চূড়ান্ত ধাপে রয়েছে।
১০০ অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে যাত্রা শুরু করা বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ ইতোমধ্যে শিল্পাঞ্চল প্রতিষ্ঠার জন্য ৮৮টি জায়গা চিহ্নিত করেছে। এসব স্থানে জিটুজি, পিপিপি ভিত্তিতেও অর্থনৈতিক অঞ্চল হচ্ছে।
অনুষ্ঠানে বেজা চেয়ারম্যান পবন চৌধুরী বলেন, প্রথম দিকে ব্যবসায়ীদের আকৃষ্ট করার জন্য অনেক উদার দৃষ্টিভঙ্গির পরিচয় দিয়েছিল বেজা। এখন ধীরে ধীরে নিয়ম-কানুনের বিষয়ে কঠোর হতে হচ্ছে। এখন শিল্পাঞ্চলে পরিবেশ, বর্জ্য শোধানাগার, শ্রমিক কল্যাণের দিকগুলোতে কঠোর হতে হবে। উন্নয়ন কিংবা প্রবৃদ্ধি সবাইকে সঙ্গে নিয়ে করতে হবে।
সরকারি অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোতে জমির চাহিদা বেড়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা এখন জমির ইজারা মূল্য বাড়ানোর চিন্তা করছি। কারণ এতদিনের মূল্য ছিল প্রমোশনাল। এখন প্রতিযোগিতামূলক মূল্য নির্ধারণ করা হবে।
হোসেন্দি ইকোনমিক জোনের চেয়ারম্যান শম্পা রহমান বলেন, মুন্সীগঞ্জ জেলার গজারিয়া উপজেলার চর বেতাকি, ভবানীপুর, রঘুরচর ও হোসেন্দি মৌজার ১০৮ জমি নিয়ে হবে হোসেন্দি ইকোনমিক জোন। ক্রমান্বয়ে তা ১৫০ একরে উন্নীত করা হবে। এ অর্থনৈতিক অঞ্চলে ১০ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করা হবে, অন্তত ১৫ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান হবে। চীন, জাপান, জার্মানি ও থাইল্যান্ডের বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণে এ অর্থনৈতিক অঞ্চলে লবণ ও রাসায়নিক কারখানা, সিমেন্ট, জাহাজ নির্মাণ শিল্প, সিরামিক ইন্ডাস্ট্রি, পেপার মিল ও অন্যান্য হালকা শিল্প স্থাপন করা হবে বলে জানান তিনি।
মেঘনা নদীর তীরে হোসেন্দি ইকোনমিক জোনের অবস্থান হবে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের জামালদি বাসস্ট্যান্ড থেকে দুই দশমিক সাত কিলোমিটার, শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ৪৩ কিলোমিটার, চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ২১৭ কিলোমিটার দূরে।
বেজা জানিয়েছে, এ শিল্প পার্কের মাস্টারপ্ল্যানে ৬৩ শতাংশ শিল্প এলাকা, পাঁচ শতাংশ বিশেষ অবকাঠামো, ইউটিলিটির জন্য ১৭ শতাংশ এবং প্রমোদ এলাকা হিসেবে ১৫ শতাংশ এলাকা রাখা হয়েছে। পরিবেশবান্ধব হিসেবে গড়ে তুলতে ইটিপি, এসটিপি নির্মাণসহ পর্যাপ্ত পরিমাণ উম্মুক্ত স্থান রাখা হয়েছে পরিকল্পনায়।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বেজার নির্বাহী সদস্য হারুনুর রশীদ, আশোক কুমার বিশ্বাস ও সিটি গ্রুপের চেয়ারম্যান ফজলুল রহমান।