চোখ মানব শরীরের একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। চলাফেরা, পড়ালেখা, খাবার খাওয়াসহ জীবন চলার সব স্তরে চোখের প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম। এ পৃথিবীতে আমরা সুন্দর, সিøম ও সুস্থভাবে বেঁচে থাকার জন্য কত কিছুই না করি। অথচ অবহেলিত থেকে যায় আমাদের চোখ দুটো। চোখের বাহ্যিক সৌন্দর্যের জন্য বিভিন্ন ধরনের কসমেটিক্সের ব্যবহার করা হয় কিন্তু চোখের ভেতরের স্বাস্থ্যের বিষয়ে তেমন গুরুত্ব দেওয়া হয় না। তাই দৃষ্টিশক্তি হারালে কিন্তু এই সুন্দর ভুবনের প্রায় সবই মনে হবে বৃথা। জীবনকে মনে হবে মূল্যহীন।
এই চোখে বিভিন্ন কারণে সমস্যা দেখা দিতে পারে। বিশেষ করে পুষ্টির অভাবে, দীর্ঘদিনের কোষ্ঠকাঠিন্যে। দীর্ঘদিন সর্দি-কাশি প্রভৃতি কারণে দৃষ্টিশক্তি কমে যায়। এছাড়া প্রযুক্তির উন্নয়নে সময়ের সঙ্গে তাল মেলাতে কম্পিউটার, ল্যাপটপ, মোবাইল ফোন প্রভৃতি ব্যবহারের কারণেও মূল্যবান এ অঙ্গটির ওপর পড়ছে বাড়তি চাপ। এতে অতি অল্প সময়ে নিতে হচ্ছে চশমা। আবার অনেকেই অল্প বয়সেই চোখের সমস্যায় ভোগেন। এ সমস্যা থেকে পরিত্রাণ পেতে চশমা ব্যবহার করা হয়। তাই দৃষ্টিশক্তি স্বাভাবিক রাখা খুবই জরুরি। দৃষ্টিশক্তি স্বাভাবিক রাখতে, চোখ ও তার দৃষ্টিশক্তির কার্যকারিতা বাড়ানোর উপযোগী রয়েছে কিছু খাবার।
গাজর
গাজর স্বাস্থ্যকর ও পুষ্টিকর একটি সবজি। এটি কাঁচা বা রান্না করে দু’ভাবেই খাওয়া যায়। এতে রয়েছে ভিটামিন ‘এ’ ও বিটা ক্যারোটিন, যা চোখকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। বিটা ক্যারোটিন শক্তিশালী অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট। এটি ছানি পড়া ও বয়সের কারণে চোখের জ্যোতি কমে যাওয়ার সমস্যা প্রতিরোধে সাহায্য করে। এছাড়া গাজরে রয়েছে ফাইবার ও পটাশিয়াম, যা শরীরের জন্য ভালো
সবুজ শাক
সবুজ শাকে রয়েছে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট। ম্যাঙ্গানিজের খুব ভালো উৎস সবুজ শাক, যা চোখের সমস্যা সমাধানে সাহায্য করে। এছাড়া সূর্যের ক্ষতিকারক অতিবেগুনি রশ্মি থেকে চোখের রেটিনাকে রক্ষা করে। দৃষ্টিশক্তি ভালো করতেও সাহায্য করে। দেশে বিভিন্ন ধরনের সবুজ শাক রয়েছে। বিশেষ করে পালং, পুঁই, কচু, লাউ প্রভৃতি।
ভুট্টা
এতে রয়েছে আয়রন, ভিটামিন বি১২, ভিটামিন এ, সি ও লাইকোপিন। এসব উপাদান দৃষ্টিশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে। তাই নিয়মিত ভুট্টা খেতে পারেন। আর নিয়মিত ভুট্টা খেলে চোখের হলুদ পিগমেন্টের ঝুঁকি ও ছানি পড়ার ঝুঁকি কমে।
টমেটো
এতে রয়েছে ভিটামিন-এ, বি, সি, কে, ক্যালসিয়াম, পটাসিয়াম, লাইকোপিন, ক্রোমিয়ামসহ নানা উপাদান। এর লাইকোপিন থাকা চোখের রেটিনাকে রক্ষা করে। এটি সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি থেকে চোখকে সুরক্ষা দেয়।
মিষ্টি আলু
এটি পুষ্টিগুণে ভরপুর। এতে রয়েছে
বিটা-ক্যারোটিন, ভিটামিন-সি, ই ও ডি। চোখের যতেœ এটি গুরুত্বপূর্ণ একটি খাবার। এটি চোখের স্বাস্থ্য ভালো রাখে। দৃষ্টিশক্তি ধরে রাখতে সাহায্য করে। এটি শুধু চোখের যতœই নয়, হাড়ের ক্ষয়রোধ ও রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতেও বেশ উপকারী।
মুরগির মাংস
মুরগির মাংসে রয়েছে জিঙ্ক ও ভিটামিন ‘বি’। এগুলো চোখের স্বাস্থ্য রক্ষায় বিশেষ ভূমিকা রাখে।
কমলালেবু
এতে রয়েছে লুটিন ও ভিটামিন ‘সি’। এসব উপাদান চোখের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। ভিটামিন ‘সি’ চোখের দৃষ্টি স্বাভাবিক রাখতে সহায়তা করে।
ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড
ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড চোখের জন্য উপকারী। বিশেষ করে স্যামন, সার্ডিন, ম্যাকরেল, কড, টুনা-জাতীয় মাছ
চোখের দৃষ্টিশক্তি স্বাভাবিক রাখতে সহায়তা করে। চোখকে নানা সমস্যা থেকে দূরে রাখে।
বাঁধাকপি
বাঁধাকপি শীতকালীন একটি সবজি। এতে রয়েছে প্রচুর ভিটামিন ‘সি’, যা চোখের জন্য খুবই ভালো। এছাড়া প্রতিদিন নিয়মিত চোখ ধোয়া উচিত। চোখে ঠাণ্ডা পানির ঝাপটা দিয়ে ভালো করে ধুয়ে নিন। দিনে তিন থেকে চারবার পানির ঝাপটা দিয়ে চোখ ধুতে পারলে ভালো।
ইন্টারনেট অবলম্বনে শিপন আহমেদ