নিয়মিত কম্পিউটারের দিকে তাকিয়ে কাজ করতে হয়, এমন মানুষের চোখে নানা সমস্যা হতে পারে। চোখ জ্বালাপোড়া, ব্যথা, ঘাড়ব্যথা, চোখে আলো অসহ্য লাগা প্রভৃতি সমস্যা একটানা কম্পিউটারে বা ল্যাপটপে কাজ করার ফলে হতে থাকে। এ কারণে অল্প বয়সে দৃষ্টিশক্তি নষ্ট হতে পারে। তাই কম্পিউটার ব্যবহারের সময় কয়েকটি বিষয় মেনে চললে কিংবা সতর্কতা অবলম্বন করলে চোখ ভালো রাখা সম্ভব। চোখের যতেœ দেখে নিতে পারেন:
সঠিক আলোর ব্যবহার: যে কক্ষে কম্পিউটার ব্যবহার করবেন, সেখানে সঠিক আলোর ব্যবহার জরুরি। ঘরের আলো কম কিংবা বেশি হলে চোখের ওপর চাপ পড়াটাই স্বাভাবিক। এ সময় ব্যথাও হতে পারে। এছাড়া কম্পিউটারের আলো সঠিকভাবে ব্যবহার করা গুরুত্বপূর্ণ।
চাকচিক্য বর্জন: চকচকে ফার্নিচার, কম্পিউটার স্ক্রিনে চাকচিক্যময় ছবি, বা গাঢ় রঙের দেওয়াল থেকে চোখে সমস্যা হতে পারে। তাই উজ্জ্বল আলো থেকে দূরে থাকতে হবে।
ডিসপ্লে পরিবর্তন: সিআরটি মনিটরের পরিবর্তে এলসিডি মনিটর ব্যবহার করুন। এলসিডি মনিটর চোখের জন্য আরামদায়ক। এর রিফ্লেকশন কম হওয়ায় কম্পিউটার চালাতে সুবিধা হয়। এছাড়া সিআরটি মনিটর ইমেজ বারবার নতুন করে তৈরি করে, যা এলসিডি থেকে তুলনামূলকভাবে বেশি। এটি চোখের জন্য ক্ষতিকর।
ডিসপ্লে সেটিংস: কম্পিউটারে সঠিক ডিসপ্লে সেটিংস আপনার চোখকে কিছুটা মুক্তি দিতে পারে। ডিসপ্লের ব্রাইটনেস আপনার কাজের জায়গার আলোর সঙ্গে সমান রাখতে হবে। ডিসপ্লের ব্রাইটনেস যাতে অতিরিক্ত আলোর না হয়, কিংবা অতিরিক্ত অন্ধকার না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। ব্রাইটনেস কম কিংবা বেশি হলে চোখের সমস্যা হতে পারে। লেখার আকার বড় বা ছোট, কিংবা রং কোনটি আপনার চোখের জন্য আরামদায়ক তা জানতে হবে। এভাবে তা ঠিক করে নিতে হবে। সাদা ব্যাকগ্রাউন্ডের ওপর কালো লেখা আরামদায়ক। হালকা কালার বা ভিন্ন রঙের লেখা চোখের ক্ষতি করে।
ঘন ঘন পলক ফেলুন: কাজ করার সময় ঘন ঘন পলক ফেললে চোখ কিছুটা বিশ্রাম পায়। অতিরিক্ত কাজের সময় পলক ফেলা না হলে চোখের ভেতরের পানি শুকিয়ে যায়। এতে চোখের ‘ড্রাই আই’ হওয়ার আশঙ্কা বেড়ে যায়। তাছাড়া অফিসে কাজের ফাঁকে চোখের ব্যায়াম করে নিতে পারেন। আস্তে আস্তে চোখের পলক ফেলুন, যাতে মনে হয় আপনি ঘুমিয়ে যাচ্ছেন, এভাবে কয়েকবার করুন। একটানা কাজের দিকে ঝুঁকে থাকবেন না, ঘণ্টাখানেক ২০ সেকেন্ডের জন্য কাজের বাইরে তাকিয়ে থাকুন। অন্যদিকে তাকানোর ফলে চোখের মাসল রিলাক্সড হয়।
কর্মক্ষেত্রের পরিবেশ পরিবর্তন: আলোর ব্যবহার, কম্পিউটারের দূরত্ব ও চারপাশের ইন্টেরিয়র পরিবর্তনে চোখ অনেকটাই সুরক্ষিত থাকবে।
আই গ্লাস: কম্পিউটার ব্যবহারের জন্য একপ্রকার আই গ্লাস পাওয়া যায়। এটা ব্যবহার করে কাজ করলে চোখের ওপর চাপ কম পড়ে এবং ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা অনেকটা কমে যায়।
চিকিৎসকের পরামর্শ: সব সময় মনিটরের দিকে তাকিয়ে কাজ করতে হয় এমন ব্যক্তিদের নিয়মিত ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত। নিয়মিত চোখের চেক আপ করাতে পারলে ভালো। কম্পিউটার থেকে আপনার দূরত্ব, লাইটিং, গ্লাস প্রভৃতি ব্যবহার সম্পর্কে ডাক্তারের পরামর্শ মেনে চলতে হবে।