চোখে ছানি: ওষুধ নাকি অস্ত্রোপচার

অনেকেই মনে করেন শুধু বয়স্ক ব্যক্তিদেরই চোখে ছানি পড়ে। এ ধারণা পুরোপুরি ঠিক নয়। ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ বা অন্যান্য অসুখের কারণে কারও কারও অল্প বয়সেও চোখে ছানি হতে পারে। এমনকি শিশুদেরও হতে পারে। চোখে ছানি নিয়েও জন্মাতে পারে শিশু। তবে ছানি পড়ার ঝুঁকিতে তুলনামূলকভাবে বেশি থাকে বয়স্ক ব্যক্তিরা। অন্ধত্বের অন্যতম কারণ চোখে ছানি পড়া। ছানি চোখের এমন এক রোগ, যাতে চোখের লেন্স ধীরে ধীরে ঘোলা বা অস্বচ্ছ হতে শুরু করে। 

কেন পড়ে: চোখে দুই ধরনের ছানি পড়ে। জš§গত ও অর্জিত। গর্ভধারণের প্রথম তিন মাসের মধ্যে কোনো নারী এক্স-রে বা অন্য কোনো বিকিরণ রশ্মির সংস্পর্শে এলে তার সন্তান চোখে ছানি নিয়ে জš§ানোর ঝুঁকিতে থাকে। যারা ওয়েল্ডিংয়ের কাজ করেন, তাদের চোখেও ছানি পড়তে পারে।

এ ছাড়া আরও যেসব কারণে চোখে ছানি পড়তে পারে: বার্ধক্যজনিত কারণ; দীর্ঘমেয়াদি ডায়াবেটিস; ঘনঘন চোখের প্রদাহ; দীর্ঘদিন স্টেরয়েডজাতীয় ওষুধ খাওয়া; চোখে আঘাত পাওয়া;  ধূমপান ও মদ্যপানে আসক্তি এবং বংশগত কারণ।

উপসর্গ: ধীরে ধীরে দৃষ্টিশক্তি কমে যাওয়া; চোখের লেন্সের রং ঘোলা হয়ে আসা; আলোতে গেলে চোখ থেকে পানি পড়া; রং চিনতে অসুবিধা হওয়া; বারবার চশমার পাওয়ার পরিবর্তন হওয়া; একই জিনিসকে একের অধিক দেখা; আলোর চারদিকে রংধনু দেখা; আলোতে চোখ বন্ধ হয়ে আসা প্রভৃতি।

ওষুধ নাকি অস্ত্রোপচার: চোখে ছানির সুনির্দিষ্ট চিকিৎসা হচ্ছে অস্ত্রোপচার। ওষুধের মাধ্যমে পুরোপুরি ছানি নিরাময় করা সম্ভব নয়। ছানি পড়া চোখের রেটিনা ও ভিট্রিয়াসে যদি বিশেষ কোনো সমস্যা না থাকে, তাহলে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে আবার আগের মতো দৃষ্টিশক্তি ফিরিয়ে আনা সম্ভব। অনেকে মনে করেন ছানি বড় না হলে বা নির্দিষ্ট সময় পার না হলে অস্ত্রোপচার করা ঠিক নয়। এটি সম্পূর্ণ ভুল ধারণা। ছানির অস্ত্রোপচার কখন করা প্রয়োজন, সেটি চিকিৎসক রোগীর ছানি পরীক্ষা করে নির্ধারণ করবেন। বেশি দেরি হলে দৃষ্টি হারানোর মতো জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে। ছানি অস্ত্রোপচারের বিভিন্ন পদ্ধতি রয়েছে। বর্তমানে ফ্যাকোমালসিফিকেশন বা ছোট ছিদ্র করে বিশেষ যন্ত্রের মাধ্যমে ছানি অপসারণ করে কৃত্রিম লেন্স রোগীর চোখে স্থাপন করা হয়।

ডা. আনসারুল হক

চিফ কনসালট্যান্ট, ভিট্রিও-রেটিনাল ও লেজার সার্ভিস

ল্যাবএইড আই সেন্টার, ঢাকা

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০