শরীরের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ চোখ। দেহের অন্যান্য অঙ্গের মতো চোখেরও নানা রোগ রয়েছে। শারীরিক ও মানসিক সুস্থতার পাশাপাশি চোখের সুস্থতাও জরুরি। অথচ চোখের ব্যাপারে আমরা খুব একটা সচেতন নই। এমনকি চোখের মারাত্মক রোগের লক্ষণ দেখা দিলেও আমরা অনেক সময় অবহেলা করি। চোখ লাল হওয়া মারাত্মক রোগের লক্ষণ হিসেবে দেখা দিতে পারে। আসুন জেনে নেওয়া যাক চোখ লাল হওয়ার কারণ ও প্রতিকারের কয়েকটি উপায়। নানা কারণে চোখ লাল হতে পারে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য কিছু রোগ, যেমন চোখের অ্যালার্জি, প্রদাহ বা ইউভাইটিস, চোখ ওঠা, চোখের ঘা, এমনকি চোখের উচ্চচাপ বা গ্লুকোমাও রয়েছে।
অ্যালার্জিজনিত সমস্যা
অনেকের চোখে অ্যালার্জি থাকে। এ কারণে চোখ লাল হতে পারে। বড়দের তুলনায় শিশুদের এটি বেশি দেখা যায়। ধুলাবালি, রাসায়নিক পদার্থ, প্রসাধনী প্রভৃতির কারণে অ্যালার্জি তুলনামূলকভাবে বেশি হয়। অ্যালার্জির মাত্রা বেশি হলে চোখের মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে। তাই অবহেলা না করে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ খান।
চোখের ঘা
চোখের অন্যতম একটি মারাত্মক রোগ চোখের ঘা। আঘাতের ফলে সাধারণত এ রোগ হয়। এছাড়া ভিটামিন এ-এর অভাবে শিশুদের এই রোগ হতে পারে। চোখ লাল ও ব্যথা অনুভ‚ত হওয়া, দৃষ্টিশক্তি কমে যাওয়া, চোখের মণিতে সাদা দাগ হওয়া, আলোতে সমস্যা প্রভৃতি এ রোগের লক্ষণ।
সঠিক সময়ে এ রোগের চিকিৎসা না করা হলে আক্রান্ত ব্যক্তি চিরদিনের জন্য অন্ধ হয়ে যেতে পারে। তাই লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত ডাক্তারের শরণাপন্ন হোন।
চোখ ওঠা
চোখ লাল হওয়ার অন্যতম একটি কারণ চোখ ওঠা। আমরা কম-বেশি অনেকে এ রোগের সঙ্গে পরিচিত। সাধারণত ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়া আক্রমণের ফলে এ রোগ হয়। চোখ লাল হওয়া, চোখের মধ্যে ফুটছে এমন অনুভব করা, চোখের কোণে ময়লা জমা, ঘুম থেকে ওঠার সময় চোখ মেলতে সমস্যা হওয়া, চোখ ফুলে যাওয়া প্রভৃতি এ রোগের লক্ষণ। এটি একটি ছোঁয়াচে রোগ। ডাক্তারের পরামর্শ মেনে চললে এ রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
চোখের প্রদাহ বা ইউভাইটিস
চোখ লাল হওয়া, আলো সহ্য করতে না পারা, চোখে প্রচণ্ড ব্যথা হওয়া, কখনও চোখে কম দেখা এ রোগের লক্ষণ। সাধারণত চোখে আঘাতের জন্য এটি হয়। বাত রোগে আক্রান্তদের জন্য এটি বেশ ঝুঁকিপূর্ণ। ডাক্তারের পরামর্শ ও সময়মতো চিকিৎসা করা গেলে সুস্থ হওয়া সম্ভব। অন্ধত্ব থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব।
চোখের উচ্চচাপ বা গ্লুকোমা
চোখ দিয়ে পানি পড়া, চোখে ব্যথা, আলো অসহ্য লাগা, মাথাব্যথা ও বমি বমি ভাব হওয়া এ রোগের লক্ষণ। চোখের অপটিক স্নায়ুকে ক্ষতিগ্রস্ত করে চিরদিনের জন্য মানুষকে অন্ধ করে দেয় এ রোগ। আমেরিকাতে অন্ধত্বের এক নম্বর কারণ এটি। সঠিক সময়ে চিকিৎসা করা গেলে এটি ঠিক হয়।
গ্রন্থনা: মো. হাসানুজ্জামান পিয়াস