নিজস্ব প্রতিবেদক: বিচারাধীন পারিবারিক বিষয়ে ‘মিথ্যা খবর’ প্রকাশ করার অভিযোগে বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল ২৪-এর বিরুদ্ধে ১০০ কোটি টাকার মানহানি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এক প্রতিমন্ত্রীর ছেলে মুশফেক আলম সৈকত ২৫ অক্টোবর ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিমের আদালতে মামলাটি দায়ের করেন।
মামলায় গুলশান-২-এর ইকবাল কামালের মেয়ে তাসনোভা ইকবাল, তার স্ত্রী নাজমা সুলতানা, বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল ২৪ কর্তৃপক্ষ, চ্যানেলটির বার্তা সম্পাদক এবং রিপোর্টার মাসুদুর রহমানকে আসামি করা হয়েছে।
মামলার বাদীর আইনজীবী ব্যারিস্টার জুয়েল সরকার জানান, ‘প্রতিমন্ত্রীর ছেলের বিরুদ্ধে দেড় বছর ধরে স্ত্রীকে সন্তানের মুখ না দেখানোর অভিযোগ’ শিরোনামে গত ২২ অক্টোবর চ্যানেল ২৪ একটি খবর প্রচার করে। এতে বিশিষ্ট নাগরিক প্রতিমন্ত্রীর পরিবারের ১০০ কোটি টাকার মানহানি হয়েছে। বিচারাধীন বিষয় নিয়ে মিথ্যা, আক্রমণাত্মক ও মানহানিকর খবর প্রকাশ করা হয়েছে।
মামলার এজহার সূত্রে জানা যায়, ২০১৫ সালের ২০ অক্টোবর বাদী মুশফেক আলম সৈকত এক নম্বর আসামি ইকবাল কামালের মেয়ে তাসনোভা ইকবালকে বিয়ে করেন। ২০১৬ সালের ১৮ ডিসেম্বর তাদের এক কন্যাসন্তান জš§ নেয়। শিশুসন্তানের কথা চিন্তা না করে তাসনোভা উচ্চশিক্ষা নিতে বিদেশ যেতে পিড়াপিড়ি করেন। তখন বাদীসহ তারা মালয়েশিয়ায় যান। সেখানে শিশুসন্তানের লালনপালন বাদীকে করতে হতো। এক নম্বর আসামি লেখাপড়ায় ব্যস্ত থাকতেন। একপর্যায়ে মেয়েকে নিয়ে দেশে ফিরে যেতে স্বামীকে বাধ্য করেন তাসনোভা। ২০১৮ সালের ৫ অক্টোবর মেয়েকে নিয়ে দেশে ফিরে আসেন বাদী মুশফেক আলম সৈকত। এরই মধ্যে তাসনোভা অন্য পুরুষের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করেন। কনফারেন্স ও বিনোদনমূলক ভ্রমণের নামে ইন্দোনেশিয়া ও থাইল্যান্ডে যান। ১১ মাস পর দেশে আসেন এক নম্বর আসামি।
এক নম্বর আসামি ২০২০ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি বাদীর বাসায় এসে ঝগড়া ও ভাঙচুর করেন। এক বছর ৯ মাস পর তাসনোভা সন্তানের দাবি করে হাইকোর্টে ভিসি রিট পিটিশন (১১৯/২০২০) দায়ের করেন। পরে এক নম্বর আসামি দ্বিতীয় অতিরিক্ত সহকারী জজ ও পারিবারিক আদালতে মামলা (৬৭০/২০২০) দায়ের করেন।
বাদী মুশফেক আলম সৈকত ও তার পরিবারকে হেয় প্রতিপন্ন ও তালাক কার্যক্রম স্থগিত করতে এক নম্বর আসামি ঢাকার তৃতীয় অতিরিক্ত সহকারী জজ ও পারিবারিক আদালতে মামলা করেন। মুশফেক আলম সৈকতের বিরুদ্ধে ৫৬ লাখ ৬৮ হাজার টাকা দেনমোহর ও খোরপোশ দাবি করে ঢাকার দ্বিতীয় অতিরিক্ত সহকারী জজ ও পারিবারিক আদালতে আরেকটি মামলা করেন। এসব বিষয় এখনো আদালতের এখতিয়ারভুক্ত। এমন বিচারাধীন বিষয় নিয়ে চ্যানেল ২৪ খবর প্রকাশ করে। এতে প্রতিমন্ত্রী ও তার পরিবারের সম্মান হানি হয়েছে বলে বাদীর আইনজীবী মনে করেন। এ পরিপ্রেক্ষিতে মানহানির মামলা দায়ের করা হয়েছে।