ক্রীড়া প্রতিবেদক: ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ মানেই বারুদের গন্ধ। ফলাফল যা-ই হোক, এ ম্যাচের উত্তাপ ছড়িয়ে পড়ে দুই দেশের সমর্থকদের মধ্যে। যদি আবার সেই ম্যাচটি হয় চ্যাম্পিয়নস ট্রফির ফাইনাল। তাহলে তো কথায় নেই। ঠিক এমন এক রুদ্ধশ্বাস উত্তেজনা নিয়ে আজ বাংলাদেশ সময় বিকাল ৩.৩০ মিনিটে ওভালে শিরোপা লড়াইয়ে নামছে পাকিস্তান ও ভারত।
রাজনৈতিক কারণে বেশ কয়েক বছর ধরেই পাকিস্তান-ভারত দ্বিপক্ষীয সিরিজ বন্ধ। যে কারণে দুই দেশের সমর্থকদের দৃষ্টি আইসিসি ইভেন্টে। মূলত সেখানেই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দেশ দুটো মিলিতো হয় ক্রিকেটযুদ্ধে। চলতি চ্যাম্পিয়নস ট্রফির গ্রুপ পর্বেও দেখা হয়েছিল বিরাট কোহলি ও সরফরাজ আহমেদের দলের। কিন্তু সেখানে কোনো রকম বাধা ছাড়ায় ১২৪ রানে জিতেছিল ভারত। কিন্তু এরপরই ঘুরে দাঁড়িয়েছে পাকিস্তান। শেষ পর্যন্ত সেই দলটিই জায়গা করে নিয়েছে এ টুর্নামেন্টের ফাইনালে। প্রতিপক্ষ হিসেবে পেয়েছে চির ‘শত্রু’ ভারতকে।
এর আগে আইসিসির কোনো টুর্নামেন্টে একবারই ২০০৭ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে মুখোমুখি হয়েছিল পাকিস্তান-ভারত। জোহানেসবার্গের সেই ম্যাচে মিসবাহ-উল-হককে শেষ ওভারে আউট করে ইতিহাসের পাতায় নাম তুলেছিলেন মহেন্দ্র সিং ধোনিরা। ১০ বছর পর আরও একটা আইসিসি টুর্নামেন্টের ফাইনালে মুখোমুখি দেশ দুটি। যে কারণে আলাদা মাত্রা ছড়িয়েছে ম্যাচটি।
চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে ফাইনালে উঠবে পাকিস্তান, এটা হয়তো টুর্নামেন্ট শুরুর আগে কেউ ভাবতেই পারেনি। কিন্তু দলটি সেটাই করে দেখিয়েছে। মূলত বোলিং নৈপুণ্য দিয়েই আইসিসির এ টুর্নামেন্টের শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচে জায়গা করে নিয়েছে সরফরাজ আহমেদের দল। তাই প্রতিপক্ষকে বেশ সমীহ করছেন ভারত অধিনায়ক বিরাট কোহলি। ‘ওরা (পাকিস্তান) খুব ভালোভাবেই সব হিসাব বদলে দিয়েছে। ওদের কৃতিত্ব দিতেই হবে। এমন সব দলকে হারিয়ে সেমিফাইনালে উঠে এসেছে, আপাতদৃষ্টিতে যেসব দলকে পাকিস্তানের চেয়ে অনেক শক্তিশালী বলে মনে হচ্ছিল। এতেই বোঝা যাচ্ছে, ওরা কতটা আত্মবিশ্বাসী।’
এদিকে চ্যাম্পিয়নস ট্রফির ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন ভারত দারুণ খেলে উঠেছে ফাইনালে। গ্রুপ পর্বে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ৭ উইকেটে হার ছাড়া আর কোনো ক্ষত নেই দলটির। সেমিফাইনালে বাংলাদেশকে ৯ উইকেটের বড় ব্যবধানে হারিয়েই শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচে জায়গা করে নিয়েছে দলটি।
এখন পর্যন্ত ১২৮ ওয়ানডেতে মুখোমুখি হয়েছে পাকিস্তান-ভারত। যেখানে ৭২টিতে পাকিস্তান ও ৫২টিতে জিতেছে ভারত। চারটি ম্যাচে ফল হয়নি তবে এ পরিসংখ্যান আজকের ফাইনালে কোনো কাজে আসবে না। কেননা, দল দুটির চোখে শুধুই শিরোপার স্বপ্ন।
ভারতের বিপক্ষে এখনও কোনো আইসিসি টুর্নামেন্টে জেতা হয়নি পাকিস্তানের। আজ তা থেকে বের হতে নিশ্চয় চাইবে সরফরাজ আহমেদের দল। অন্যদিকে ভারত চাইবে অতীতের মতো পাকিস্তানকে হারিয়ে শিরোপা নিজেদের ঘরে রাখতে। এখন দেখার বিষয় আসলে কী হয়।