ছবি তুলে আয়ের জন্য সময়ের আলোচিত অনলাইন মাধ্যম ‘শাটারস্টক’। শীর্ষস্থানীয় এ সাইট নিয়ে লিখেছেন শরিফুল ইসলাম পলাশ
শাটারস্টক স্বনামখ্যাত প্রযুক্তিনির্ভর একটি প্রতিষ্ঠান। মাত্র কয়েক বছরের মধ্যে বৈশ্বিক প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে শাটারস্টক। এখানে ছবি, ভিডিও থেকে সংগীত পর্যন্ত বিক্রির জন্য সংরক্ষণ করে রাখা হয়।
২০০৩ সালে জন অরিংগার নামের এক আলোকচিত্রী অনলাইনে ওই প্ল্যাটফর্ম প্রতিষ্ঠা করেন। জন অরিংগার একজন মার্কিন উদ্যোক্তা। শুরুতে তারই তোলা কয়েক হাজার ডিজিটাল ছবি দিয়ে সাজানো হয়েছিল ওয়েবসাইটটি। বিশ্বে তিনিই প্রথম ছবি তুলে আয়ের পথ দেখান। যুক্তরাস্ট্রের দ্য স্টেট ইউনিভার্সিটি অব নিউইয়র্ক অ্যাট স্টনি ব্রুক থেকে কম্পিউটার সায়েন্স ও গণিতে স্নাতক সম্পন্ন করেছেন তিনি। এরপর কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কম্পিউটার সায়েন্সে এমএস করেন। বর্তমানে আলোকচিত্রী, ভিডিওচিত্র নির্মাতা ও সংগীত অনুরাগীদের পছন্দের একটি মাধ্যম হয়ে উঠেছে শাটারস্টক। তিনিই প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহীর দায়িত্ব পালন করছেন।
অনলাইন ছবি ও ডিজাইন সংগ্রহশালা বলা হয় শাটারস্টককে। এ সাইটের মাধ্যমে আপনার তোলা ছবি বিক্রির জন্য রাখতে পারেন। এজন্য আপনাকে প্রথমে ওই ওয়েবসাইটে গিয়ে সাইন-আপ করতে হবে। তাদের সব শর্ত মানার পর ছবি আপলোড করতে পারবেন। সে ছবি ডাউনলোড করা হলে আপনি প্রতিটি ছবির জন্য ২৫ সেন্ট থেকে ২৮ ডলার পর্যন্ত আয় করতে পারবেন। ছবির মানের ওপর আয় নির্ভর করবে। একই সঙ্গে কী ধরনের লাইসেন্স ব্যবহার করছেন, তার ওপরও নির্ভর করছে আয়। বর্তমানে ইংরেজিসহ চেসটিনা, ড্যানিশ, জার্মান, স্প্যানিশ, ফ্রেঞ্চ, ইতালিয়ান, নরওয়েজিয়ান, পোলিশ, পর্তুগিজ, সুওমি, টার্কিশ, রুশ, চাইনিজ, জাপানিজসহ ২০টি ভাষায় পরিচালিত হচ্ছে শাটারস্টক।
কার্যক্রম বাড়াতে ও ফটোগ্রাফির মধ্যে শীর্ষ অবস্থানে থাকতে নানা সময় কয়েকটি প্রতিষ্ঠান যুক্ত করেছে শাটারস্টকে। যেমন বিগস্টকের মতো স্টক মিডিয়া এজেন্সি এখন শাটারস্টকের সঙ্গে কাজ করছে। উš§ুক্ত মিউজিক লাইব্রেরি প্রিমিয়ামবিট অধিগ্রহণ করেছে তারা। বিশ্বের নামকরা প্রেস এজেন্সির জন্য ফটো সরবরাহকারী রেক্স ফিচারস এখন শাটারস্টকের। একই সঙ্গে ক্লাউডভিত্তিক ডিজিটাল অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট প্ল্যাটফর্ম ওয়েবডাম কিনে নিয়েছে শাটারস্টক।
শুধু ব্যবসার পরিধি বৃদ্ধি নয়, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে নিজেদের ঝালিয়ে নেয় এ এজেন্সি বা ফটোগ্রাফি সংস্থা। গ্রাহক সন্তুষ্টি অর্জনে নিত্যনতুন ফিচার যুক্ত করে যাচ্ছে তারা। শাটারস্টকে থাকা প্রতিটি ফিচারই গুণগত মানে অনন্য। পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশনের কথাই ধরুন। এটি আকর্ষণীয় করে তুলতে ব্যাকগ্রাউন্ড ও ছবি ব্যবহারের জুড়ি নেই। এজন্য দীর্ঘদিন ধরেই অনলাইনে ছবি সংগ্রহের ওপর নির্ভর করে থাকতে হতো। এজন্য কপিরাইট আইন, ছবির কোয়ালিটি প্রভৃতি বিষয় এড়িয়ে কাজ চালাতে হতো। সময় লাগতো প্রচুর। এসব সমস্যা থেকে মুক্তি দিতে শাটার স্টক নতুন একটি প্লাগইন যুক্ত করেছে। মাইক্রোসফট পাওয়ার পয়েন্টের সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে এ প্লাগইন। সুতরাং কাজের সুবিধার জন্য এ প্লাগইন ইনস্টল করে নিতে পারেন। সহজে এখান থেকে ছবি, ব্যাকগ্রাউন্ড, ইলাস্ট্রেশন, ডিজাইনের কাজ সারতে পারবেন। প্লাগইনটি কয়েকটি ক্যাটাগরিতে বিভক্ত। ফলে অতি দ্রুত নানা সাইজের ছবি খুঁজে বের করতে পারবেন। চাইলে ছবি না কিনেও জলছাপযুক্ত ছবি ব্যবহার করতে পারবেন। এছাড়া আইফোন, আইপ্যাডেও শাটারস্টকের নানা সুবিধা রয়েছে। অ্যানড্রয়েড মোবাইল ফোন থেকে সহজে কাজ করার সুযোগ রয়েছে সেখানে।
প্রসঙ্গত, দেশে স্টক ফটোগ্রাফি নিয়ে ছবি প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয় গত বছর। সেখানে এ বিষয়ে গুরুত্বারোপ করা হয়। তবে এএফপি, রয়টার্স, আইএএনএস, শাটারস্টক কিংবা গেটি ইমেজের মতো কোনো এজেন্সি আমাদের দেশে নেই। তবে ফোকাস বাংলা, বাংলার চোখ, সেভেন্টি ওয়ান পিক্স ভালো কাজ করছে। হ