Print Date & Time : 19 June 2025 Thursday 12:45 am

ছয়জনের চোখের চিকিৎসা হবে ঢাকায়

প্রতিনিধি, চট্টগ্রাম: সীতাকুণ্ডের বিএম ডিপোয় আগুন ও বিস্ফোরণের ঘটনায় আহতদের মধ্য ছয়জনের চোখের আঘাত গুরুতর হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য তাদের ঢাকায় পাঠানো হবে।

গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন ব্যক্তিদের দেখার পর জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের সাবেক পরিচালক ডা. দ্বীন মোহাম্মদ নুরুল হক সাংবাদিকদের এ কথা জানান।

তিনি বলেন, ‘এখানে ভর্তি ৬৩ রোগীকে আমি দেখেছি। তাদের কোনো না কোনোভাবে অন্যান্য ইনজুরির সঙ্গে চোখেরও সমস্যা রযেছে। কিছু রোগীর সিভিয়ার ইনজুরি রয়েছে। তাদের মধ্যে ছয়জনকে ঢাকায় পাঠাতে বলেছি। চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউটে তাদের চিকিৎসার জন্য প্রস্তুত আছে।

ছয়জনের মধ্যে একজনের কর্নিয়া পুরোপুরি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে উল্লেখ করে ডা. দীন মোহাম্মদ বলেন, ‘তার দৃষ্টিশক্তি ফিরে আসার সম্ভাবনা ক্ষীণ। প্রয়োজনে তাকে বিদেশ পাঠানো হবে। সব খরচ সরকার বহন করবে।’

অন্যান্য ওয়ার্ডে কিছু রোগী রয়েছেন, যাদের অন্য বড় সমস্যা আছে। চলাচল করতে পারার মতো হলে তাদেরও ঢাকায় পাঠানো হবে বলে জানান এই চিকিৎসক।

বিস্ফোরণে দুই ধরনের ঘটনা ঘটেছে বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘রাসায়নিক রিয়েকশনের সঙ্গে আঘাতও হয়েছে। দু-একজন দীর্ঘমেয়াদি সমস্যায় ভুগলেও ভালো হয়ে যাবে। তবে তাদের রুটিন চেকআপে রাখা হবে।’

গত শনিবার রাতে চট্টগ্রাম শহর থেকে ৩০ কিলোমিটার দূরে ওই কনটেইনার ডিপোয় আগুন লাগার পর ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা ছুটে গিয়ে কাজ শুরু করেন। কিন্তু এরপর বড় ধরনের বিস্ফোরণে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। দুই দিন পেরিয়ে গেলেও এখনও সেখানে কিছু কিছু কনটেইনার জ্বলছে। ফায়ার সার্ভিসের পাশাপাশি সেনাবাহিনী ও নৌবাহিনীর সদস্যরাও অংশ নিচ্ছেন অগ্নিনির্বাপণ ও উদ্ধার তৎপরতায়।

এর আগে সোমবার শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের প্রধান সমন্বয়ক ডা. সামন্ত লাল সেন চট্টগ্রামে এসে আগুনে পোড়া তিন রোগীকে ঢাকায় পাঠানোর পরামর্শ দিয়েছিলেন। বিএম কনটেইনার ডিপোয় রাসায়নিকের কারণে পরিস্থিতি ভয়াবহ মাত্রা পায় বলে জানিয়ে ফায়ার সার্ভিস বলছে, প্রায় দুই ডজন কনটেইনারে রাসায়িনক রাখা ছিল ওই ডিপোয়।

এ ঘটনায় রোববার পর্যন্ত ৪১ জনের মৃত্যুর খবর দিয়েছিল জেলা প্রশাসন। গতকাল মঙ্গলবার ডিপোর পোড়া ধ্বংসস্তূপ থেকে আরও দুটি ‘দেহাবশেষ’

 উদ্ধারের কথা জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস। সীতাকুণ্ডে বিস্ফোরণে আহতদের চিকিৎসায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সেবার প্রশংসা করে রোগীদের প্রয়োজনীয় চিকিৎসা পাওয়ার বিষয়ে আশ্বস্ত করেন ডা. দ্বীন মোহাম্মদ।

তিনি বলেন, ‘হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ রোগীদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে তাদের ঢাকায় পাঠানোর ব্যবস্থা করবেন। রোগী ও রোগীর পরিবার যাতে চিকিৎসা ব্যয় নিয়ে টেনশন না করেন।’ এ সময় অন্যান্যের মধ্যে হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম আহসান, চট্টগ্রাম বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. হাসান শাহরিয়ার কবির ও সিভিল সার্জন ডা. মো. ইলিয়াছ চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।