বেলায়েত সুমন, চাঁদপুর: চাঁদপুর জেলা পরিষদে ২০১৬-১৭ অর্থবছর থেকে ২০২১-২২ অর্থবছরের ছয় বছরে চাঁদপুরে অবকাঠামো উন্নয়নে সর্বমোট ১০৩ কোটি ২৮ লাখ ২৭ হাজার ৫৫ টাকার উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে। এর মধ্যে এডিপি খাত থেকে বরাদ্দকৃত ৪০ কোটি ৭৬ লাখ ৫১ হাজার টাকা ব্যয়ে ১ হাজার ৯৫৮টি প্রকল্প বাস্তবায়ন এবং রাজস্ব খাত থেকে বরাদ্দকৃত ৬২ কোটি ৫১ লাখ ৭৬ হাজার ৫৫ টাকায় ব্যয়ে ২ হাজার ৭১৯টি প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়েছে।
জেলা পরিষদ সূত্রে আরও জানা গেছে, ২০১৬-১৭ অর্থবছর থেকে ২০২১-২২ অর্থবছর পর্যন্ত ১ কোটি ৮৫ লাখ ৯৪ হাজার টাকা ব্যয়ে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ৬৮টি শহিদ মিনার নির্মাণ, গরিব অসহায়দের কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে ৮৯ লাখ ২০ হাজার টাকা ব্যয়ে ৪০১টি রিকশাভ্যান বিতরণ, অসহায় নারীদের স্বাবলম্বী করতে ৩ কোটি ২২ লাখ ৭০ হাজার টাকা ব্যয়ে ৩ হাজার ২১৭টি সেলাই মেশিন বিতরণ এবং ২০২০-২১ অর্থবছরে জেলা পরিষদের নিজস্ব অর্থায়নে ১ কোটি ১৪ লাখ টাকা ব্যয়ে ৩৮টি বসতঘর এবং একই অর্থবছরে ১০ লাখ টাকা ব্যয়ে একটি বীরনিবাস নির্মাণ করা হয়েছে।
এছাড়া ২০১৬-১৭ অর্থবছর থেকে ২০২১-২২ অর্থবছরে ২২৬ জন বীর মুক্তিযোদ্ধাকে ১০ লাখ ৮১ হাজার টাকার আর্থিক অনুদান প্রদান করা হয়েছ। ৫ হাজার ৫০০ জন গরিব ও অসহায় শিক্ষার্থীকে প্রায় ১ কোটি টাকার শিক্ষা অনুদান এবং ১৬শ’ মেধাবী শিক্ষার্থীকে ৩২ লাখ টাকার শিক্ষাবৃত্তি প্রদান করা হয়েছ। মসজিদ, ঈদগাহ, কবরস্থান, মন্দির, শ্মশান, এতিমখানা, পাকা ঘাটলা নির্মাণ, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সীমানা প্রাচীর নির্মাণ, পাকা রাস্তা নির্মাণ, ড্রেন নির্মাণ, কালভার্ট, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, পাঠাগার, নলকূপ, শৌচাগার, শহিদ মিনার, যাত্রীছাউনি, নিজস্ব প্রতিষ্ঠান সংস্কারসহ অসংখ্য উন্নয়নমূলক কাজ করেছে চাঁদপুর জেলা পরিষদ।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভিশন-২০৪১ বাস্তবায়নে একজন কর্মদক্ষ এবং পরিশ্রমী জনপ্রতিনিধি হিসেবে ২০১৬-১৭ অর্থবছর থেকে ২০২১-২২ অর্থবছরে সাফল্যের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করে আসছেন চাঁদপুর জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও বর্তমান প্রশাসক ওসমান গণি পাটওয়ারী। তার নেতৃত্বে চাঁদপুর জেলা পরিষদ এখন জেলার গণমানুষের আস্থার অন্যতম কেন্দ্রস্থলে পরিণত হয়েছে। গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়নের পাশাপাশি চাঁদপুর জেলা পরিষদ কর্তৃক জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সর্বোচ্চ সম্মান জানানো, গরিব অসহায়দের স্বাবলম্বী করা, গৃহহীনদের গৃহ নির্মাণ করে দেয়া, গরিব মেধাবী শিক্ষার্থীদের শিক্ষাবৃত্তি প্রদান এবং কভিডকালীন এক লাখ উন্নত মাস্কসহ সুরক্ষাসামগ্রী বিতরণ করে জেলার গণমানুষের আস্থা ভালোবাসা অর্জন করেছেন বর্তমান জেলা পরিষদের প্রশাসক ওসমান গণি পাটওয়ারী। এছাড়া জেলা পরিষদ প্রাঙ্গণে জেলার প্রথম বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল নির্মাণ, চাঁদপুর শহরের প্রবেশদ্বারে দৃষ্টিনন্দন বঙ্গবন্ধু গেট নির্মাণ, জেলা পরিষদ স্টাফ কোয়ার্টার নির্মাণ, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার বাসভবন নির্মাণ, চাঁদপুর প্রেস ক্লাব ভবন নির্মাণ এবং হাজীগঞ্জ সুপার মার্কেট নির্মাণ জেলা পরিষদের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের মধ্যে অন্যতম।
এ বিষয়ে চাঁদপুর জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও বর্তমান প্রশাসক ওসমান গণি পাটওয়ারী শেয়ার বিজকে বলেন, প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর আর্থিক সামাজিক ও জীবনযাত্রা ব্যবস্থাপনার অবকাঠামো উন্নয়নের মাধ্যমে একটি উন্নত জীবন ব্যবস্থা গড়ে তুলে জেলা পরিষদ কাজ করে চলেছে। রাস্তাঘাটের উন্নয়নের মধ্য দিয়ে জনপদে উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে অর্থায়ন করে থাকে জেলা পরিষদ। জেলা পরিষদের কাজই হলো গ্রামীণ জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন করা।
তিনি আরও বলেন, চাঁদপুর জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে পরিষদে দায়িত্ব নেয়ার পর থেকে আমি আন্তরিকতার সঙ্গে আমার ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করেছি। আমাদের বিগত পরিষদের দায়িত্বকালীন চাঁদপুর জেলা পরিষদ জেলাবাসীর কাছে আস্থা ও বিশ্বাসের জায়গা হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে।
আসন্ন জেলা পরিষদ নির্বাচন সম্পর্কে জানতে চাইলে ওসমান গনি পাটওয়ারী শেয়ার বিজকে বলেন, ১৯৭৩ সালে স্কুল ছাত্রলীগের সভাপতি থেকে রাজনীতিতে আসি। ১৯৯২ সাল থেকে জেলা আওয়ামী লীগের সঙ্গে সম্পৃক্ত। দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নির্দেশনা মেনে কাজ করেছি। ২০১৬ সালের ২৮ ডিসেম্বর জেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এ নির্বাচনে জেলার ৮টি উপজেলা, ৬টি পৌরসভা ও ৮৯ ইউনিয়নে মোট ভোটার রয়েছেন ১২৬০ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৯৬৮ জন এবং মহিলা ভোটার ২৯২ জন। সব ভোটারসহ জেলার মানুষের জন্য নিজের সাধ্যমতো আন্তরিকভাবে মানুষের জন্য উন্নয়নমূলক কাজ করেছি। আগামী জেলা পরিষদ নির্বাচনে দলীয় নেতাদের আমাকে মনোনয়ন দিলে আবারও জেলার মানুষের জন্য কাজ করার সুযোগ পাবো বলে আমি আশাবাদী।