ছয় ব্যাংককে অভিযোগ থেকে অব্যাহতি, স্বপদে ফিরছেন ট্রেজারিপ্রধানরা

নিজস্ব প্রতিবেদক: সম্প্রতি ডলারে অতিরিক্ত মুনাফা করায় দেশি-বিদেশি ছয় ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের (এমডি) বিরুদ্ধে যে অভিযোগ উঠেছে, তা শর্ত সাপেক্ষে প্রত্যাহার করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ফলে ওই সব ব্যাংকের সরিয়ে দেয়া ট্রেজারি বিভাগের প্রধানরা আগের পদে ফিরতে পারবেন বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

গতকাল বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগের পরিচালক স্বাক্ষরিত চিঠিতে ব্যাংক ৬টিকে এ সিদ্ধান্ত জানানো হয়। ব্যাংকগুলো হলোÑ বিদেশি মালিকানার স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড, বেসরকারি ব্র্যাক, দি সিটি, সাউথইস্ট, ডাচ-বাংলা ও প্রাইম ব্যাংক। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম।

সিরাজুল ইসলাম বলেন, ব্যাংকের এমডিরা ভুল স্বীকার করে এ পরিস্থিতির জন্য ক্ষমা চেয়েছেন। ভবিষ্যতে তারা কখনও এমন কিছু করবেন না বলে জানিয়েছেন। এ জন্য বিষয়টি নিষ্পত্তি করা হয়েছে। ফলে এ ছয় ব্যাংকের ট্রেজারিপ্রধানদেরও কাজে ফিরতে সমস্যা নেই।

ছয় ব্যাংককে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়েছে, বৈদেশিক বাণিজ্য লেনদেনের মাধ্যমে গত মে ও জুনে যে পরিমাণ মুনাফা অর্জিত হয়েছে, তার অর্ধেক সামাজিক দায়বদ্ধতা খাতে (সিএসআর) ফান্ডে পৃথকভাবে সংরক্ষণ করতে হবে। অবশিষ্ট অর্থ ব্যাংকের আয় খাতে স্থানান্তর করা যাবে। এছাড়া সিএসআর ফান্ডের অর্থ (গত মে ও জুনের মুনাফার অর্ধেক) ব্যবহারের বিষয় পরবর্তী সময়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেয়া হবে।

এতে আরও বলা হয়, ভবিষ্যতে বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেনসহ ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালনার ক্ষেত্রে ব্যাংকিং সংক্রান্ত সব নিয়ম-নীতি অনুসরণসহ রাষ্ট্রের স্বার্থে নৈতিকতার বিষয়টি অনুসরণ নিশ্চিত করতে হবে। এছাড়া বৈদেশিক মুদ্রা বাজারসহ সার্বিক মুদ্রা বাজারকে অস্থিতিশীল করতে পারে, এমন কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকতে হবে।

এর আগে গত ৮ আগস্ট ডলারে অতিরিক্ত মুনাফা করার অভিযোগে দেশি-বিদেশি এই ছয় ব্যাংকের ট্রেজারি বিভাগের প্রধানদের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেয়া হয়। এরপর ডলার কেনাবেচায় অতিরিক্ত মুনাফা করে বাজার অস্থিতিশীল করার অভিযোগে গত ১৭ আগস্ট দেশি-বিদেশি ব্যাংকগুলোর ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের (এমডি) কাছ থেকে ব্যাখ্যা তলব করে বাংলাদেশ ব্যাংক।

ব্যাংকগুলোর এমডিদের কাছে যে চিঠি পাঠানো হয়েছে, তাতে ডলার কেনাবেচার বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। এতে দেখা যায়, যে দামে এক্সচেঞ্জ হাউস থেকে প্রবাসী আয় ও রপ্তানি আয়ের ডলার কেনা হয়েছে, তা ব্যাংকের ঘোষিত দামের চেয়ে অনেক বেশি। আবার আমদানিতে ডলারের যে দাম ধরা হয়েছে, তা-ও ঘোষণার সঙ্গে মিল ছিল না। ফলে গত বছরের একই সময়ের চেয়ে গত মে মাসে বাড়তি মুনাফা হয়েছে। মে মাসে ডলার কেনাবেচার যে পার্থক্য (স্প্রেড) ছিল, তা-ও গত বছরের একই সময়ের চেয়ে অনেক বেশি। এ প্রেক্ষাপটে চিঠি দিয়ে ব্যাংকগুলোর নির্বাহীদের ব্যাখা তলব করেছিল বাংলাদেশ ব্যাংক।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সম্পদ দায় ব্যবস্থাপনা নীতিমালা অনুযায়ী, ট্রেজারি বিভাগের রিপোর্টিং প্রধান সরাসরি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক। তাই ব্যাংক কোম্পানি আইনের ৪৬ ধারা অনুযায়ী তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে না, তা আগামী সাত কার্যদিবসের মধ্যে জানতে চেয়েছিল বাংলাদেশ ব্যাংক। ব্যাংক কোম্পানি আইনের ৪৬ ধারা অনুযায়ী, ব্যাংকের পরিচালক ও প্রধান নির্বাহীদের অপসারণ করতে পারে বাংলাদেশ ব্যাংক।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০