Print Date & Time : 19 June 2025 Thursday 8:24 pm

ছয় ব্যাংকের এমডিকে কারণ দর্শানোর নোটিশ

নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশে ডলার বাজারে চলছে অস্থিরতা। এর মধ্যে কয়েকটি ব্যাংক ডলার কারসাজি করে অতিরিক্ত মুনাফা আদায় করেছে। এ কারণে আরও প্রকট হয়ে উঠেছে ডলারের বাজার। এমন পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ ব্যাংক ব্যাংকগুলোর ও মানি চেঞ্জারে পরিদর্শন করে। ফলে গত ৮ আগস্ট ডলার কারসাজি করে অতিরিক্ত মুনাফা আদায় করার কারণে দেশি পাঁচটি ও বিদেশি একটি ব্যাংকের ট্রেজারি প্রধানকে সরিয়ে দেয়ার নির্দেশ দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। একই কারণে নতুন করে ওই ছয় ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও প্রধান নির্বাহীকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। গত বুধবার রাতে ছয় ব্যাংকের এমডির কাছে এ চিঠি পাঠানো হয়। এছাড়া আরও কিছু ব্যাংক ডলারে অস্বাভাবিক মুনাফা করেছে বলে বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিদর্শনে উঠে এসেছে। এজন্য সব ব্যাংকের কাছে বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেনের তথ্য চাওয়া হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের একটি সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. সিরাজুল ইসলাম শেয়ার বিজকে বলেন, ডলার কেনাবেচার সময় ব্যাংকগুলো অধিক মুনাফা করেছে। এজন্য ওই ছয় ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের কাছে ব্যাখ্যা চেয়ে চিঠি দেয়া হয়েছে। এছাড়া আরও অনেক ব্যাংক অধিক মুনাফা করেছে। প্রতিটি ব্যাংককে ইন্সপেকশনের

আওতায় আনা হবে। এ রকম প্রমাণ পেলে তাদেরও ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এর আগে ব্র্যাক ব্যাংক, ডাচ-বাংলা, প্রাইম ব্যাংক, সিটি ব্যাংক, সাউথইস্ট ব্যাংক ও বিদেশি খাতের স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক অতিরিক্ত মুনাফা করে ডলার বাজার অস্থির করে। ফলে ওই ছয় ব্যাংকের ট্রেজারি প্রধানকে সরিয়ে দিতে বলে বাংলাদেশ ব্যাংক। একই কারণে নতুন করে ছয় ব্যাংকের এমডিকে শোকজ করা হয়।

এদিকে দেশে ডলারের সংকট কাটাতে কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে নিয়ন্ত্রণ সংস্থা বাংলাদেশ ব্যাংক। আমদানিতে দেয়া হয়েছে নানা শর্ত। রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়াতে দেয়া হয়েছে নীতিগত ছাড়। এছাড়া ব্যাংক ও মানি চেঞ্জারগুলোর সঙ্গে বৈঠক করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ডলার কারসাজিদের ধরতে অভিযান চালিয়েছে। অনিয়মকারীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থাও নেয়া হচ্ছে।

ডলারের বাজারে স্থিতিশীলতা আনতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক গত বুধবার মানি চেঞ্জারগুলোর সঙ্গে বৈঠক করেছে। ওই বৈঠকে প্রতি ডলারে সর্বোচ্চ দেড় টাকা মুনাফার সীমা ঠিক করে দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। আর গত রোববার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সঙ্গে ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীদের সংগঠন এবিবি ও বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেনকারী ব্যাংকের সংগঠন বাফেদা বৈঠক করে। সেখানে বলা হয়, ব্যাংকগুলো ডলার কেনাবেচায় কত টাকা মুনাফা করবে তা তারা নিজেরাই ঠিক করবে, তবে বেচাকেনার মধ্যে পার্থক্য যেন এক টাকার বেশি না হয়। এসব পদক্ষেপের কারণে সাময়িক ডলারের দাম কিছুটা কমতে শুরু করেছে।

জুলাইয়ের পর আগস্টেও প্রবাসী আয়ে ভালো প্রবৃদ্ধি আছে। চলতি মাসের ১৬ দিনে ১১৭ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স এসেছে, যা আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে ১৬ দশমিক ৩০ শতাংশ বেশি। কমছে এলসি খোলার হার। সব মিলিয়ে অনেক বেড়ে

যাওয়া ডলারের দর কিছুটা কমেছে। গত বুধবার ব্যাংকগুলো আমদানিতে ১০৮ টাকা পর্যন্ত দর নিয়েছে। খোলাবাজারেও দর ১১০ টাকায় নেমেছে। রপ্তানিকারক ও রেমিটারদের থেকে কিনেছে

১০৪ থেকে ১০৫ টাকা দরে। সম্প্রতি আমদানি ডলারের সর্বোচ্চ দর ওঠে ১১২ টাকা। আর খোলাবাজারে ১২০ টাকা পর্যন্ত।