নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজপথে ছাত্রদলের মাধ্যমে বিএনপির আন্দোলন শুরু হয়ে গেছে বলে মন্তব্য করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের ‘শান্তিপূর্ণ মিছিলে’ ছাত্রলীগের হামলার প্রতিবাদ জানাতে আয়োজিত এক প্রতিবাদ সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন। গতকাল শুক্রবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এ সমাবেশের আয়োজন করে বিএনপির ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ শাখা।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে সাংবাদিক সমিতির কার্যালয়ে গত মঙ্গলবার সকালে ছাত্রদলের একটি সংবাদ সম্মেলন হওয়ার কথা ছিল। সেদিন মিছিল নিয়ে সেখানে যাওয়ার পথে কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারের সামনে তাদের ওপর হামলা করে ছাত্রলীগ। হামলায় সংগঠনটির অন্তত ৩০ নেতাকর্মী আহত হন। পরে ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্ হলের সামনে ও দোয়েল চত্বরে ছাত্রলীগকে ধাওয়া দেয় ছাত্রদল। ছাত্রলীগ পাল্টাধাওয়া দিলে ছাত্রদল ক্যাম্পাস ত্যাগ করে। এরপর গতকাল বৃহস্পতিবারও রাজধানীতে ছাত্রলীগ ও ছাত্রদলের নেতা-কর্মীদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ সময় গুলিবর্ষণের ঘটনাও ঘটে।
বিএনপির সমাবেশে সম্প্রতি ছাত্রদলের ‘শান্তপূর্ণ মিছিলে’ হামলার প্রতিবাদ ও নিন্দা জানান সমাবেশে উপস্থিত নেতাকর্মীরা। ছাত্রদলের শুরু করা আন্দোলনে সবাইকে এগিয়ে নেয়ার পরামর্শ দেন খন্দকার মোশাররফ হোসেন।
শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রীসহ অনেক নেতাকে হটানোর উদাহরণ টেনে খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘জনগণের সমর্থন থাকলে কেউ গুণ্ডামিতে যায় না। আপনাদের পায়ের নিচে মাটি নেই। ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা এ দেশের মানুষের সন্তান। ছাত্রদলের সঙ্গে বিএনপির অঙ্গসংগঠনগুলো রয়েছে।’
ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের ওপর হামলাকারীদের পরিণতি বিশ্বজিৎ এবং আবরার ফাহাদের হত্যাকারীদের মতো হবে বলে হুঁশিয়ারি করে বলেন, ‘ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের ওপর হামলাকারীদের শুধু স্মরণ করে দিতে চাই, বিশ্বজিৎকে এই ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরাই হত্যা করেছে, বুয়েটের ছাত্র আবরার ফাহাদকে হত্যা করেছিল তারাই। আজকে যারা গুণ্ডামি করছেন, অন্যদের প্ররোচনায়। বিশ্বজিৎ ও ফাহাদের যে পরিণতি হয়েছে, এই হামলাকারীদেরও আজ হোক বা কাল সেই পরিণতি হবে।’
হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে বিচারের আওতায় আনার দাবি জানিয়ে খন্দকার মোশাররফ হোসেন অভিযোগ করে বলেন, বিশ্বজিৎ, আবরারের মতো অনেককে হত্যা করেছে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। যারা প্ররোচনা দিচ্ছেন, তারা বিনা ভোটে নির্বাচিত সরকার। তাদের কোনো কমিটমেন্ট নেই।
ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের হামলার পর হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে গেলে সেখানেও আবার হামলা করা হয়েছে বলে দাবি করে মোশাররফ বলেন, তারা নারী নেত্রীদেরও ছাড় দেয়নি। নেত্রীদের ওপর যে হামলা করেছে, এটা শুধু দেশে নয় সারা বিশ্বে ভাইরাল হয়ে গেছে। আওয়ামী লীগের সিন্ডিকেটই দ্রব্যমূল্যর ঊর্ধ্বগতি একমাত্র কারণ দাবি করে বিএনপির এ নেতা বলেন, এই কারণে তারা দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না।
শেখ হাসিনাকে পদত্যাগের পরামর্শ দিয়ে আমানউল্লাহ আমান বলেন, পদত্যাগ না করলে গণভবন থেকে জনগণ বের করে নিয়ে আসবে। ১৯৯০-এর মতো ঢাকার মাটিতে আরেকটি গণ-অভ্যুত্থান হবে। শুধু প্রতিবাদ নয়, নেতাকর্মীদের প্রতিরোধের প্রস্তুতি রাখতে হবে।