ছাত্রলীগ ও কর্মচারীদের ওপর দায় চাপালেন চবি উপাচার্য

প্রতিনিধি, চবি: শেষ কর্মদিবসে দেয়া নিয়োগ নিজ থেকে দেননি বলে মন্তব্য করেছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সদ্য সাবেক উপাচার্য শিরীণ আখতার। তাকে জিম্মি করে জোরপূর্বক এসব নিয়োগপত্রে সই নেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন তিনি। শাখা ছাত্রলীগের নেতা-কর্মী এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা এ কাজ করেছেন বলে জানিয়েছেন তিনি।

গত শনিবার মুঠোফোনে শেয়ার বিজকে এসব কথা বলেন শিরীণ আখতার। শেষ কর্মদিবসের নিয়োগ নিয়ে সমালোচনার পর আজই প্রথম গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন তিনি।

গত মঙ্গলবার শিরীণ আখতারকে সরিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৯তম উপাচার্য হিসেবে মো. আবু তাহেরকে নিয়োগ দেন আচার্য। নিয়োগের এ প্রজ্ঞাপন জারির পর থেকে তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী পদে ৩৭ জনকে নিয়োগ দেন উপাচার্য। নিয়োগ পাওয়া অধিকাংশ ব্যক্তি শাখা ছাত্রলীগের নেতা-কর্মী কিংবা স্থানীয় ফতেপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা।

এসব নিয়োগ নিয়ে জানতে চাইলে শিরীণ আখতার বলেন, ‘গত মঙ্গলবার শেষ কর্মদিবসে আমি একটি নিয়োগের নির্বাচনী বোর্ডে অংশ নিতে গিয়েছিলাম। প্রজ্ঞাপন আসার খবর পেয়ে আমি তাতে অংশ নিইনি। পরে দুপুর ১২টায় কিছু কর্মচারী ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা আমার কক্ষে (উপাচার্যের দপ্তর) প্রবেশ করেন। বিশৃঙ্খলা হতে পারে, এমন আশঙ্কায় আমি কার্যালয় ছেড়ে বাসভবনে চলে যাই। তবে ৩০ মিনিটের মধ্যেই সেখানেও অনেকে গিয়ে ভিড় করেন। সেখানে গিয়ে আমাকে ঘিরে ধরেন তারা। আমি দরজা বন্ধ করে দিয়েছিলাম, তবে তারা শোবার ঘরে ঢুকে আমাকে জিম্মি করে নিয়োগের সই নিয়েছেন।’

শিরীণ আখতার বলেন, ‘আমি সই করতে চাইনি। পরে বাধ্য হয়ে করেছি। রেজিস্ট্রারও বাধ্য হয়ে করেছেন। আমি তাদের সবুজ কালি দিয়ে সই করেছি। সব মিলিয়ে ১৫ থেকে ১৬টি নিয়োগে আমি সই করেছি। এর বেশি কী করে হলো, আমি জানি না। এতগুলো নিয়োগ আমি দিইনি। এরপরও আমার অজান্তে অনেক কিছু হতে পারে। সই নকল হতে পারে।’

শিরীণ আখতার আরও বলেন, ‘আমি অপমানিত বোধ করছি। আমি টাকা নিয়ে কোনো নিয়োগ দিইনি। বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু লোক যে চাকরির জন্য এভাবে হন্যে হয়ে যাবে, তা আমি ভাবতেও পারিনি। এক ঘণ্টা আমি পাগলের মতো ছিলাম। আমার সঙ্গের লোকজনও আমাকে বাঁচাতে পারেনি। আমি প্রক্টরকে ফোন করেছিলাম, তারা প্রক্টরকেও আটকে রেখেছে।’

নিয়োগ নিয়ে এসব হওয়ার পরও কাউকে জানাননি কেনÑএমন প্রশ্নের জবাবে শিরীণ আখতার বলেন, ‘আমার শরীর খারাপ ছিল, তাই কারও ফোন ধরতে পারিনি। আমার কাছে এখন সব তথ্য নেই। তথ্য পাওয়ার পর দরকার হলে সংবাদ সম্মেলন করব।’

নিয়োগ পাওয়া ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের একজন শামিমা আক্তার। শাখা ছাত্রলীগের সাবেক এ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পরিসংখ্যান বিভাগের কম্পিউটার ল্যাব সহকারী পদে নিয়োগ পেয়েছেন। জানতে চাইলে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘নিয়োগের জন্য কাউকে জোরজবরদস্তি করিনি। এসব অভিযোগ ভিত্তিহীন।’

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০