নিজস্ব প্রতিবেদক: মাসে এগারো হাজার টাকা বেতনে রাজধানীর অদূরে আশুলিয়ার শিমুলতলাস্থ দি ভাই ভাই ফার্নিচারে কাজ করতেন রমজান মিয়া (১৯)। কাজ শেষে ওই এলাকার মোল্লা বাজারস্থ ভাড়া বাসায় ফেরার পথে পলমল গার্মেন্টসের সামনে তার কাছে থাকা মোবাইল ও নগদ টাকা ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে ছিনতাইকারীরা। ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে ছিনতাইকারীরা ধারালো ছুরি দিয়ে রমজানের বুকে, পেটে ও সরু রড দিয়ে গলায় আঘাত করে। পরে তার মৃত্যু নিশ্চিত করে তাকে সেখানে ফেলে যায় ছিনতাইকারীরা।
এ খুনের ঘটনার সঙ্গে জড়িত তিনজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। গ্রেফতাররা হলেন- আমিনুল (২৮), সাগর মোল্লা (২৮) ও মো. ইউনুছ (৩৫)।
সিআইডির এলআইসির একাধিক টিম অভিযান পরিচালনা করে রোববার (১৮ অক্টোবর) রাতে তাদের গ্রেফতার করে। তাদের থেকে নিহত রমজানের ব্যবহৃত লুণ্ঠিত মোবাইল ও হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ধারালো ছুরি জব্দ করা হয়।
সোমবার (১৮ অক্টোবর) দুপুরে সিআইডি কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য তুলে ধরেন সিআইডির এলআইসি শাখার বিশেষ পুলিশ সুপার মুক্তা ধর।
তিনি বলেন, নিহত রমজান মিয়া চার ভাই ও এক বোনের মধ্যে দ্বিতীয়। আর্থিক অনটনের সংসারে জীবিকার সন্ধানে প্রায় ছয় বছর আগে শিশুকালেই ঘর ছাড়তে বাধ্য হন রমজান। এরপর খালার পরিবারের সঙ্গে ভাড়া বাসায় থেকে আশুলিয়ার শিমুলতলাস্থ রানা মিয়ার ফার্নিচারের দোকানে ছয় হাজার টাকা বেতনে প্রায় তিন বছর কাজ করেন। পরবর্তীতে একই এলাকার দি ভাই ভাই ফার্নিচার দোকানে মাসিক ১১ হাজার টাকা বেতনে প্রায় তিন বছর ধরে কাজ করে আসছিলেন।
সিআইডির এ কর্মকর্তা বলেন, ঘটনাটি বিভিন্ন গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপকভাবে প্রচারিত হলে তা সিআইডির নজরে আসে। সিআইডি ঘটনাটির ছায়া তদন্ত শুরু করে। ঘটনার বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ ও গভীরভাবে বিশ্লেষণের মাধ্যমে এর সঙ্গে জড়িতদের অবস্থান শনাক্ত করা হয়। এরপর আমিনুলকে নরসিংদীর জামগড়া এলাকা, সাগর মোল্লাকে রাজধানীর মুগদা ও ইউনুছকে আশুলিয়ার জিরানী এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়।
মুক্তা ধর বলেন, গ্রেফতারকৃতরা মূলত সক্রিয় ছিনতাইকারী দলের হোতা ও সহযোগী। তারা ওই এলাকাসহ আশপাশের এলাকায় গভীর রাত থেকে ভোর পর্যন্ত রাস্তায় চলাচলকারী পথচারীদের টার্গেট করে ছিনতাই করতো।