ছুটির দিনে জমজমাট বাণিজ্যমেলা

নিজস্ব প্রতিবেদক: সাপ্তাহিক ছুটির দিনে গতকাল জমজমাট হয়ে উঠেছে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলা। সকাল থেকেই রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের মেলা প্রাঙ্গণে দেখা যায় হাজার হাজার ক্রেতা-দর্শনার্থীর ভিড়। বিপুল জনসমাগমে খুশি বিক্রেতারাও। ছুটির দিন মা-বাবার সঙ্গে ঘুরতে গিয়ে শিশুরাও মেতে উঠেছে আনন্দে। ঘুরে বেড়ানো, কেনাকাটা, খাওয়া-দাওয়া আর অস্থায়ী শিশু পার্কগুলোর বিভিন্ন রাইডে উঠে খুশি তারা। গতকাল সরেজমিন বাণিজ্যমেলায় এসব দৃশ্য দেখা যায়।

ঘড়ির কাঁটা ১০টা ছোঁয়ার আগে থেকেই টিকিট কাউন্টারের সামনে দেখা যায় ক্রেতা-দর্শনার্থীর লাইন। মূল ফটক উম্মুক্ত করে দেওয়ার পরপরই দীর্ঘ সারিতে মেলায় প্রবেশ করে তারা। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে থাকে সংখ্যা। দুপুর ১২টার আগেই কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায় মেলা প্রাঙ্গণ। ছাড় বা বিভিন্ন রকম অফার চলায় এসব স্টলে দেখা যায় ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড়।

রাজধানীর মিরপুর-১ নম্বর থেকে পরিবার নিয়ে মেলায় এসেছেন শিল্পী আক্তার। তিনি জানান, যানজট আর কর্মব্যস্ততার কারণে অন্যদিন মেলায় আসা হয় না। শুক্রবার ছুটির দিন হওয়ায় পরিবারের সবাইকে নিয়ে মেলায় এসেছি। কেনাকাটার পাশাপাশি একটু ঘোরাঘুরি করব, খাওয়া-দাওয়া করব।

বিক্রির ব্যাপারে স্টাইল কালেকশনের ম্যানেজার হাবিব বলেন, এবারের মেলায় প্রথম দিকে বিক্রির পরিমাণ খুবই কম ছিল। এখন অনেক ভালো। দর্শনার্থী বেশি হলে বিক্রি বেশি হয়, এখন মেলায় দর্শনার্থীর সংখ্যা বেশি।

উপহার ও ছাড়ে পণ্য বিক্রি: মেলায় বিভিন্ন স্টলে নানা রকম উপহার ও ছাড়ে পণ্য বিক্রি চলছে। ৪০৫ টাকা মূল্যের বসুন্ধরা নুডলস পাওয়া যাচ্ছে মাত্র ৩২০ টাকায়। তা বাদেও এ প্যাকেজের সঙ্গে পাওয়া যাবে তিনটি গিফট। এর মধ্যে আছে একটি ঝুড়ি, একটি টিফিন বক্স আর একটি বাটি।

মিনিস্টার ফ্রিজ কিনলে দেওয়া হচ্ছে হরেক রকম উপহার, এর সঙ্গে থাকছে ভ্রমণ টিকিট। ওয়ালটন ইলেকট্রনিক্স পণ্য কিনলেও পাওয়া যাচ্ছে বিভিন্ন মাত্রার ছাড় ও উপহার। মোবাইল কোম্পানি স্যামস্যাং ছাড়ের পাশাপাশি ইন্টারনেট অফারও দিচ্ছে।

কাশ্মীরি আচার দিচ্ছে ২০ শতাংশ পর্যন্ত ছাড়। বিকাশ অ্যাপে কেনাকাটায় ছাড় মিলছে পাঁচ থেকে ১০ শতাংশ পর্যন্ত। অন্যদিকে গৃহস্থালি পণ্যের বিভিন্ন স্টলে দেওয়া হচ্ছে ১০ থেকে ৪০ শতাংশ পর্যন্ত ছাড়। ননস্টিক কড়াইসহ রান্নার নানা উপকরণ পাওয়া যাচ্ছে মাত্র ১৩০ টাকায়। ব্লেজারেও ৩০ থেকে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত ছাড় দেওয়া হচ্ছে অনেক স্টলে।

বিক্রি বেড়েছে: মেলায় প্রথম কয়েক দিন বিক্রিতে খরা গেলেও এখন ক্রমেই বিক্রি বাড়ছে। সপ্তাহের অন্যদিন সকালের দিকে তেমন একটা বিক্রিবাট্টা না হলেও দুপুরের পর থেকেই বিক্রি বেড়ে যায়। আর ছুটির দিন তো সকাল থেকেই শুরু হয় বিক্রি। এখন পর্যন্ত ক্রোকারিজ পণ্যই বিক্রিতে শীর্ষে আছে বলে জানান বিক্রেতারা। এরপরই রয়েছে প্লাস্টিকসামগ্রী, পোশাক ও প্রসাধন। এসব স্টলে সব সময় ক্রেতা-দর্শনার্থীর ভিড় লেগেই থাকে। এছাড়া বিক্রি বেড়েছে খাদ্যপণ্যের।

শিশুর বিনোদন ‘শিশু পার্ক’: অভিভাবকদের সঙ্গে মেলায় এসেছে শিশুরাও। কেনাকাটার চেয়ে মেলার দুই পাশে বসানো অস্থায়ী দুটি শিশু পার্কই তাদের বেশি আগ্রহের জায়গা। জাম্পিং, হানিসিং, মিনিট্রেন, মিনি হেলিকপ্টারসহ দুটি পার্কে ১০টি করে মোট ২০টি রাইড আছে। সেগুলোয় মনের আনন্দে হেসে খেলে বেড়াচ্ছে শিশুরা।

উল্লেখ্য, এ বছর মেলায় ভারত, পাকিস্তান, চীন, মালয়েশিয়া, ইরান, থাইল্যান্ড ও যুক্তরাষ্ট্রসহ ২১টি দেশ অংশ নিচ্ছে। মেলায় রয়েছে ১৩টি ক্যাটেগরিতে ৫৮০টি স্টল। এ বছরও মেলায় রয়েছে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস সমৃদ্ধ বঙ্গবন্ধু প্যাভিলিয়ন, ই-শপ, শিশুপার্ক, রক্ত সংগ্রহ কেন্দ্র, প্রাথমিক চিকিৎসাকেন্দ্র, মা ও শিশু কেন্দ্র, ফুলের বাগান ও এটিএম বুথ।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০