ছুটির দিনে সকাল থেকেই জমে ওঠে বইমেলা

নিজস্ব প্রতিবেদক: ছুটির দিন শুক্রবার সকালেই জমে ওঠে বইমেলা। শিশুদের উপস্থিতিও ছিল চোখে পড়ার মতো। গরম এড়াতে অনেকে সকালেই চলে আসেন। সকালে মেলার দ্বার খোলার পর থেকেই আসতে শুরু করে শিশু-কিশোরের দল। তাদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়তে থাকে বড়দের আগমনের হার। প্রকাশক ও বিক্রয়কর্মীরা বলছেন, মেলার অন্য দুই শুক্রবারের তুলনায় গতকাল সকালে পাঠকের উপস্থিতি ও বিক্রি বেশি ছিল।

সকাল ১১টা থেকে ছিল ‘শিশু প্রহর’। নানা বয়সের শিশুদের পদচারণায় মুখর ছিল শিশু চত্বর। অভিভাবকদের হাত ধরে এক স্টল থেকে আরেক স্টলে ঘুরে বই কিনেছে তারা। শিশুদের মুখে হাসি ফোটাতে পেরে খুশি অভিভাবকরাও।

ছোট ভাই নবীনকে নিয়ে মেলায় এসেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তামান্না। তিনি বলেন, ‘ছোটদের মুখের হাসি পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর দৃশ্য মনে হয় আমার কাছে। আর মেলায় এসে ছোট ভাই নতুন বই পেয়ে অনেক খুশি। তার মুখে হাসি দেখে সত্যি অনেক ভালো লাগছে।’

আরশিয়ার বয়স মাত্র দেড় বছর। তবে বাবা তাকে এখনই নিয়ে এসেছেন বাংলা একাডেমির অমর একুশে বইমেলায়। আরশিয়ার জন্য একটা বইও কেনা হয়েছে। আর বইটা তার এতটাই ভালো লেগেছে যে, মেলা প্রাঙ্গণেই খুলে বসেছে তার মলাট। ছবির রঙে পড়তে শুরু করেছে পরীর গল্প। বইমেলার শিশু প্রহরে আসা প্রায় সব শিশুই বুদ হয়ে ছিল নতুন বইয়ের মধ্যে। কয়েকজনকে তো আবার রাস্তার মাঝখান দিয়ে হাঁটার সময়ও বই পড়তে পড়তেই হাঁটতে দেখা গেল।

কথা হয় আরশিয়ার বাবা রেজওয়ান হাসান ফাহিমের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘গ্রন্থমেলায় শিশুদের জন্য একটা আলাদা প্রহর সত্যিই অনেক চমৎকার ব্যাপার। এখানে অন্যদের থেকে শিশুদের অধিকারটা বেশি। তারা ইচ্ছামতো এই সময়টা উপভোগ করতে পারে। আর ছোট থেকেই বইয়ের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিতেই ওকে বইমেলায় নিয়ে আসা।’

কথা হলো বইমেলায় আসা ছোট্ট নেহার সঙ্গে। চার বছরের নেহার চোখ তখন রাস্তার পরিবর্তে বইয়ের গল্পে। বাবার কাছে অবশ্য বকুনিও খেয়েছে সে একটু। তবু চোখ ওঠেনি বই থেকে। কথা হলে অবন্তি বলে, এ বইটা আমি হালুম আর ইকরির দোকান থেকে কিনেছি। এ গল্পগুলো আমার ভীষণ ভালো লেগেছে।

ছোটদের মেলা প্রকাশক ফয়সাল বলেন, ‘অন্য শুক্রবারগুলোর তুলনায় আজ সকালে পাঠক বেশি। বলতে গেলে সকাল থেকেই মেলা জমে উঠেছে।’ টইটম্বুরের বিক্রয়কর্মী সাদিয়াও একই কথা বলেন।

বাংলা প্রকাশের বিক্রয়কর্মী নুরুজ্জামান বলেন, ‘অন্য শুক্রবারগুলোতে সকালে ছোটদের বই বিক্রি বেশি হলেও গতকাল বড়দের বইয়ের বিক্রিও বেশ ভালো ছিল।’

পাঠকরা বলছেন, মার্চের বিকালে গরম বেশি থাকায় ও ধুলোবালির জন্য সকালে অনেকে এসেছেন।

অভিভাবক সীমা খন্দকার বলেন, ‘মেলায় এসে শিশুরা এই ছোট্ট বয়স থেকেই যেভাবে বইয়ের সঙ্গে পরিচিত হচ্ছে, তা তাদের সৃজনশীল মেধা বিকাশে সহায়তা করবে। শুধু বয়স অনুযায়ী নির্দিষ্ট বইটা তাদের হাতে তুলে দিতে পারলেই হলো, কেননা তারা বইয়ের প্রতি প্রচণ্ড আগ্রহী।’

শিশুবেলা প্রকাশনীর বিক্রয় কর্মকর্তা ইমরান হাসান জানান, বইয়ের বিক্রি তুলনামূলকভাবে বেশ ভালো। অভিভাবকেরাও তাদের সন্তানদের হাতে তুলে দিচ্ছেন বিভিন্ন বিষিয়ভিত্তিক দারুণ সব বই।

ঝিঙেফুল প্রকাশনীর বিক্রয় প্রতিনিধি বলেন, ‘ছোট্ট শিশুরা তো পড়ার তুলনায় দেখার ওপর বেশি আগ্রহী। সেজন্য কার্টুনের বইগুলো বেশি বিক্রি হচ্ছে। তবে থেমে নেই তথ্যভিত্তিক আর গল্পের বইগুলোও।’

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০