নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশের পুঁজিবাজারে পতনের মধ্য দিয়ে গতকাল রোববারের লেনদেন শেষ হয়েছে। সেই সঙ্গে আগের দিনের (ঈদের আগের শেষ কার্যদিবস, ২৬ জুন) তুলনায় টাকার অঙ্কে লেনদেন কমে ৫০০ কোটি টাকার ঘরে নেমে এসেছে। গতকাল ছিল ঈদের ছুটির পর বাজারের প্রথম কার্যদিবস। সেই সঙ্গে সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসও। এর আগে পুঁজিবাজার পাঁচ দিনের ঈদের ছুটিতে ছিল। গতকাল ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেনে অংশ নেয়া বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট দর অপরিবর্তিত ছিল। এদিন সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস এবং ঈদের ছুটি শেষে বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ ও কেনার চাপ বেশি থাকায় শেয়ারদর বেশি বেড়েছে বস্ত্র খাতের। অপরদিকে সূচক ও লেনদেন পতনেও বিনিয়োগকারীরা সাধারণ বিমা খাতে বিমুখ ছিলেন। ফলে এ খাতে বিক্রির চাপ বেশি ছিল।
গতকাল ডিএসইতে পতন হলেও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) উত্থান দেখা গেছে।
বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, গতকাল বস্ত্র খাতের শেয়ারদর বেড়েছে শূন্য দশমিক ৯০ শতাংশ। এদিন খাতটিতে মোট ৫৮টি কোম্পানির শেয়ার লেনদেন হয়েছে। লেনদেন হওয়া শেয়ারের মধ্যে ২৪টির দর বেড়েছে এবং ৩টির দর কমেছে। দ্বিতীয় স্থানে ছিল ভ্রমণ ও অবকাশ খাতের শেয়ার। খাতটিতে দর বেড়েছে শূন্য দশমিক ৯০ শতাংশ। শূন্য দশমিক ৮০ শতাংশ শেয়ারদর বেড়ে তৃতীয় স্থানে ছিল জীবন বিমা খাত। এছাড়া টেলিকমিউনিকেশন, খাদ্য ও আনুষঙ্গিক, প্রকৌশলী, পাট এবং আর্থিক খাতে শেয়ারদর বৃদ্ধির বা কমার কোনো পরিবর্তন হয়নি।
এদিকে গতকাল বিনিয়োগকারীদের বিক্রির চাপ থাকায় সাধারণ বিমা খাতের শেয়ারদর সবচেয়ে বেশি কমেছে। খাতটিতে শেয়ারদর কমেছে ১ দশমিক ১০ শতাংশ। পরের স্থানে থাকা সিমেন্ট খাতে শেয়ারদর কমেছে শূন্য দশমিক ৬০ শতাংশ। তৃতীয় স্থানে থাকা সেবা ও আবাসন খাতে শেয়ারদর কমেছে শূন্য দশমিক ৬০ শতাংশ।
অপরদিকে গতকাল লেনদেনের দিক থেকে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে বস্ত্র খাতে। খাতটিতে ডিএসইর মোট লেনদেনের ১৯ দশমিক ৩০ শতাংশ লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা জীবন বিমা খাতে ডিএসইর মোট লেনদেনের ১৪ দশমিক ৭০ শতাংশ লেনদেন হয়েছে। তৃতীয় স্থানে থাকা খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাতে ডিএসইর মোট লেনদেনের ১০ দশমিক ৭০ শতাংশ লেনদেন হয়েছে। ৯ দশমিক ৭০ শতাংশ লেনদেন হওয়া ওষুধ ও রসায়ন খাত রয়েছে চতুর্থ স্থানে।
ডিএসইর তথ্য মতে, ঈদের পর প্রথম কার্যদিবসে ডিএসইতে ৫১৫ কোটি ৭৭ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। ঈদের আগের শেষ কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিল ৭৭০ কোটি ৪৩ লাখ টাকার। এদিন ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩৬৫টি কোম্পানির মধ্যে শেয়ার ও ইউনিটের দর বেড়েছে ৮০টির এবং কমেছে ১১৬টির। শেয়ার পরিবর্তন হয়নি ১৬৯টির।
এদিন ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স দশমিক ৭৯ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ৩৪৩ দশমিক ২৯ পয়েন্টে। এছাড়া ডিএসই-৩০ সূচক দশমিক ৮৮ পয়েন্ট এবং ডিএসইএস সূচক দশমিক ৭০ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে ২ হাজার ১৯১ দশমিক ৯৩ পয়েন্টে এবং ১ হাজার ৩৭৬ দশমিক ২৯ পয়েন্টে।
অপরদিকে সিএসইতে এদিন লেনদেন হয়েছে ১১ কোটি ৫৫ লাখ টাকা শেয়ার। আগের কার্যদিবসে ৩৪ কোটি ৪০ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছিল। এদিন সিএসইতে লেনদেন হওয়া ১৮৯টি কোম্পানির মধ্যে শেয়ার ও ইউনিট দর বেড়েছে ৭৮টি, কমেছে ৪৮টি এবং পরিবর্তন হয়নি ৬৩টির।
এদিন সিএসইর প্রধান সূচক সিএএসপিআই ৩২ দশমিক ২১ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৮ হাজার ৭৩৪ দশমিক ৪১ পয়েন্টে। এছাড়া সিএসই-৫০ সূচক দশমিক ৩৮ পয়েন্ট, সিএসই-৩০ সূচক ৬ দশমিক ৩৩ পয়েন্ট, সিএসসিএক্স ১৪ দশমিক ৪৮ পয়েন্ট এবং সিএসআই সূচক দশমিক ৩৭ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে ১ হাজার ৩১৫ দশমিক ২৭ পয়েন্টে, ১৩ হাজার ৪০৪ দশমিক ৫৪ পয়েন্টে, ১১ হাজার ১৯৭ দশমিক ৪৫ পয়েন্টে এবং ১ হাজার ১৭৬ দশমিক ৬৯ পয়েন্টে।