ছোটবেলায় হাতেখড়ি হোক মানসিক শিক্ষার

পরিবারের সদস্যদের কাছ থেকে শুনে শুনে ভাষা শেখে শিশুরা। দেখে শেখে শারীরিক অঙ্গভঙ্গিও। কিন্তু মানসিক বিষয়ে কীভাবে পরিপক্ব হয় একটি শিশু? কোনো শিশুই নিজে নিজে শিখতে পারে না, তাদের আলাদাভাবে শেখাতে হয়। তবে মানসিক বিষয়ে কোনো শিক্ষা দেওয়া হয় না অনেক দেশে। সম্প্রতি আয়ারল্যান্ডের অন্যতম প্রধান শহর বেলফাস্টে হয়ে যাওয়া ‘পাবলিক হেলথ ওপেন কনফারেন্স’-এ গবেষকরা তুলে ধরলেন শিশুদের মানসিক শিক্ষার গুরুত্ব।

শিশুর মন-মানসিকতা গঠন করতে হবে এমনভাবে, যাতে হতাশা ও বিপর্যয়ের মধ্যেও তারা নিজেদের নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারে। পরিবারের অভিভাবকরা নিজেদের পাশাপাশি নজর দিতে পারেন শিশুদের মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর। তারা কীভাবে আবেগ ও বিশ্বাস নিয়ন্ত্রণ করে, তা দেখা জরুরি। এমনই পরামর্শ দিলেন গবেষকরা।

বেলফাস্টে হয়ে যাওয়া পাবলিক হেলথ ওপেন কনফারেন্সে আলস্টার ইউনিভার্সিটির স্কুল অব সোশ্যাল পলিসির শিক্ষক অধ্যাপক ডিয়াড্র হিনান পারিবারিক মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর তার গবেষণাপত্র উপস্থাপন করেন। তিনি স্কুলগুলোকে সমাজ, শিশু ও অভিভাবকের সব ধরনের সহায়তাকেন্দ্র বলে মনে করেন। শিশুরা প্রতিদিন ছয় ঘণ্টা বা তার বেশি সময় স্কুলে অবস্থান করে। তাই মানসিক সুস্থতার শিক্ষা দেওয়ার উপযুক্ত জায়গা হিসেবে বিদ্যালয়কেই তিনি যথোপযুক্ত মনে করেন।

তিনি মনে করেন, স্কুলে মানসিকভাবে সুস্থ থাকার যেসব পদ্ধতি আছে, তার একটি লম্বা তালিকা স্কুলগুলোয় থাকা উচিত। তিনি স্কুলগুলোর পাঠদান সংস্কৃতি পরিবর্তনের ব্যাপারেও পরামর্শ দিয়েছেন। তিনি মনে করেন, মানসিক স্বাস্থ্যসচেতনতার শিক্ষা সব ক্লাসে থাকা দরকার। পাশাপাশি স্কুলে শিশুর মানসিক বিকাশের সহায়ক পরিবেশও দরকার।

হিনান মনে করেন, শৈশব থেকে এ শিক্ষা দিলে শিশুদের বিপথগামী হওয়ার সম্ভাবনা কম। তাই প্রাথমিক বিদ্যালয় হতে পারে শিশুর মানসিক শিক্ষার কেন্দ্রস্থল।

একই বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অব সাইকোলজির অধ্যাপক সায়োবহান ও’নেইল বলছেন, শিশুর মানসিকভাবে সুস্থ থাকার শিক্ষা দেওয়ার আদর্শ জায়গা হলো বিদ্যালয়। তিনি মনে করেন, শিশুদের অনুভূতি ও আচরণ নিয়ন্ত্রণ করা যায়। ‘আমি ৩০ বছর বয়সে বুঝেছি কীভাবে আবেগ নিয়ন্ত্রণ করতে হয়। অনেক উচ্চমাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থী এখনও তাদের আবেগ সম্পর্কে ঠিকমতো বুঝতেই পারে না’, বলেছেন তিনি। ও’নেইল মনে করেন, আত্মহত্যার মতো বিষয়গুলো কেবল তরুণ বয়সে এসে আলোচনা করা হয়। কিন্তু তখন বড্ড দেরি হয়ে যায়। কেননা এ সময় সবারই মানসিক ধ্যান-ধারণা ও চিন্তা-চেতনা তৈরি হয়ে যায়। তাই শিশুদের স্কুল পর্যায় থেকেই উৎফুল্ল ও দুশ্চিন্তামুক্ত থাকার শিক্ষা দিতে হবে, সম্পর্কের ব্যবস্থাপনা শেখাতে হবে, দুশ্চিন্তা ও মানসিক বিপর্যয়কে কীভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে হয়Ñতা শেখাতে হবে। আর স্কুল পর্যায়ে একজন শিক্ষকের মাধ্যমেই তা করা যায়। অন্যথায় মেয়েশিশুদের মনে তৈরি হতে পারে নানা ভীতি। ছেলেশিশুরা যেতে পারে বখেÑঅনুমান তার।

 

Add Comment

Click here to post a comment

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০