রুবাইয়াত রিক্তা: দেশের পুঁজিবাজারে চলছে সূচকের টানা পতন। গত সপ্তাহব্যাপী প্রতিদিন অল্প অল্প করে শেয়ারের দর কমলেও বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়েছেন বিনিয়োগকারীরা। গতকাল সপ্তাহের শুরুতে এ অবস্থার শেষ হবে মনে করে অনেকেই বাজারে আসেন; কিন্তু গতকালও তারা হতাশ হন। অন্য দিনের মতো শুরুতে সূচক ঊর্ধ্বগতি থাকলেও মাত্র ১২ মিনিট পরেই পড়তে থাকে শেয়ারের দাম। তারপর অব্যাহত থাকে সূচকের পতন। দিনশেষে ১৩ পয়েন্ট সূচক পড়লেও এটাকে বিনিয়োগকারীরা মোটেই স্বাভাবিক মনে করছেন না। টানা পতনে দিশেহারা বিনিয়োগকারীরা। পোর্টফোলিও থেকে প্রতিদিন ২-৩ শতাংশ টাকা কমে যাচ্ছে। আরও বেশি পতনের ভয়ে আছেন অনেকে।
বিনিয়োগকারীরা মনে করছেন, এভাবে প্রতিদিন শেয়ারপ্রতি ১০ পয়সা, ২০ পয়সা কমতে থাকলে সপ্তাহ শেষে মোটের ওপর বড় ধরনের লোকসানে পড়বেন। এমনিতেই তারা লোকসানে রয়েছেন। এরপর সূচকের পতন হলে তাদের ধৈর্য থাকবে না। ফোর্সসেল দিয়ে অনেকেই বের হয়ে যাবেন। বড় ধরনের পতনের মুখে পড়বে বাজার। এ অবস্থায় বাজার-সংশ্লিষ্টদের উদ্যোগ নেয়া উচিত। প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের ভূমিকা নেওয়া জরুরি। বাজারে ধস শুরু হলে উদ্যোগ নিয়ে কোনো লাভ হবে না।
গতকাল বেশিরভাগ শেয়ারের দরপতন হয়েছে। ৯৮টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দর বাড়লেও কমেছে ১৮৮টির। ৪১টি কোম্পানির শেয়ারদর অপরিবর্তিত ছিল। গতকালও বেক্সিমকো বাজারে নেতৃত্ব দিতে পারেনি। নেতৃত্ব দিতে ব্যর্থ হয়েছে অ্যাপোলো ইস্পাত, ইসলামী ব্যাংক। বেক্সিমকোর শেয়ারপ্রতি দর কমেছে ৫০ পয়সা। ৪৭ লাখ ৯৫ হাজার শেয়ারের হাতবদল হলেও বাজারে তেমন প্রভাব ফেলতে পারেনি কোম্পানিটি। ইসলামী ব্যাংকের শেয়ারদরও পড়েছে। শেয়ারপ্রতি দরপতন হয়েছে ১ টাকা ৩০ পয়সা। অ্যাপোলো ইস্পাতের শেয়ারদর ১০ পয়সা কমলেও গত দশ দিনে শেয়ারটির দর কমেছে ১ টাকা ১০ পয়সা। কয়েকটি ব্যাংকের শেয়ারদর ১০-২০ পয়সা বাড়লেও বাজারের মোড় ঘোরাতে পারেনি। তবে বড় ধরনের পতন ঠেকাতে সাহায্য করেছে আর্থিক খাত। গতকাল লংকাবাংলা ফাইন্যান্সের দর বেড়েছে ১ টাকা ৫০ পয়সা। জিএসপি ফাইন্যান্স ২ টাকা ৩০ পয়সা, আইপিডিসির শেয়ারপ্রতি দর বেড়েছে ১ টাকা ৩০ পয়সা। এ শেয়ারগুলোই গতকাল বাজারে বড় বিপর্যয় থেকে বাঁচিয়েছে। গতকাল আর্থিক খাত ঘুরে না দাঁড়ালে বড় ধরনের বিপর্যয় হতে পারতো। সেক্ষেত্রে সূচক ৫০-৬০ পয়েন্ট পড়াও অসম্ভব ছিল না।
Add Comment