ছয় কার্যদিবস পর উভয় বাজারে ইতিবাচক গতি

নিজস্ব প্রতিবেদক: টানা ছয় কার্যদিবস পর অবশেষে উভয় বাজারে ইতিবাচক গতি ফিরেছে। বেশিরভাগ শেয়ারের দর বৃদ্ধিতে সূচক ইতিবাচক হওয়ার পাশাপাশি লেনদেন বেড়েছে। আগের দিন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক পাঁচ হাজার পয়েন্টের নিচে নেমে গেলেও গতকাল ফের পাঁচ হাজার পয়েন্ট ছাড়িয়েছে। গতকাল লেনদেনের শুরু থেকে কেনার চাপ বেড়ে গেলে সূচক ঊর্ধ্বমুখী হয়। এক পর্যায়ে সর্বোচ্চ পাঁচ হাজার ২৫ পয়েন্টে পৌঁছালেও তা স্থায়ী হয়নি। সাড়ে ১২টার পর থেকে বিক্রির চাপ বাড়লে সূচক নি¤œমুখী হতে থাকে। তবে বেলা দেড়টা থেকে ফের কেনার চাপ বাড়লে সূচক ঊর্ধ্বমুখী হয়। শেষ পর্যন্ত সূচক ২৬ পয়েন্ট ইতিবাচক অবস্থানে থাকে। গতকাল ৫৪ শতাংশ কোম্পানির দর বেড়েছে। অন্যদিকে চিটাগং স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সূচক, শেয়ারদর ইতিবাচক হলেও লেনদেনে কমেছে।
বাজার পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, গতকাল ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ২৬ দশমিক ৬৪ পয়েন্ট বা দশমিক ৫৩ শতাংশ বেড়ে পাঁচ হাজার ১৩ দশমিক শূন্য এক পয়েন্টে অবস্থান করে।
ডিএসইএস বা শরিয়াহ্ সূচক আট দশমিক ২৯ পয়েন্ট বা দশমিক ৭১ শতাংশ বেড়ে এক হাজার ১৬৭ দশমিক শূন্য সাত পয়েন্টে অবস্থান করে। আর ডিএস৩০ সূচক ৯ দশমিক ৭৮ পয়েন্ট বা দশমিক ৫৫ শতাংশ বেড়ে এক হাজার ৭৫৮ দশমিক ২০ পয়েন্টে অবস্থান করে। গতকাল ডিএসইর বাজার মূলধন তিন লাখ ৭৪ হাজার ৫৪২ কোটি ৩৮ লাখ ২০ হাজার ৯৫৪ টাকা হয়। ডিএসইতে লেনদেন হয় ৪২৭ কোটি ৬৫ লাখ ৮০ হাজার ৭১০ টাকার শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিল ৩৭৫ কোটি ৫১ লাখ ৩১ হাজার টাকার শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট। এ হিসেবে লেনদেন বেড়েছে ৫২ কোটি ১৪ লাখ টাকা। এদিন ১১ কোটি সাত লাখ ৭৯ হাজার ৩০২টি শেয়ার এক লাখ ১৭ হাজার ৬৯ বার হাতবদল হয়। লেনদেন হওয়া ৩৫২ কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ১৯২টির, কমেছে ৯৭টির এবং অপরিবর্তিত ছিল ৬৩টির দর।
গতকাল টাকার অঙ্কে লেনদেনের শীর্ষে উঠে আসে ডরিন পাওয়ার। কোম্পানিটির ১১ কোটি ৫৮ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়। দর কমেছে এক টাকা ৮০ পয়সা। এরপর বেক্সিমকোর পাঁচ কোটি ৮৩ লাখ টাকা লেনদেনের পাশাপাশি দর বেড়েছে ৪০ পয়সা। তৃতীয় অবস্থানে থাকা বীকন ফার্মার পাঁচ কোটি ৫৪ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়। দর বেড়েছে ২০ পয়সা। রানার অটোর চার কোটি ৪১ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়। বিবিএস ক কেব্লসের তিন কোটি ৯০ লাখ টাকা লেনদেন হয়। এছাড়া বিএটিবিসির তিন কোটি ৮৯ লাখ টাকা, ভিএফএস থ্রেডের তিন কোটি ৮৪ লাখ টাকা, জেনেক্স ইনফোসিসের দুই কোটি ৪৪ লাখ টাকা, বঙ্গজের দুই কোটি ৩৪ লাখ টাকা এবং বার্জার পেইন্টস বাংলাদেশের এক কোটি ৪৮ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়।
৯ দশমিক ২৭ শতাংশ বেড়ে দর বৃদ্ধির শীর্ষে উঠে আসে এসইএমএল আইবিবিএল শরিয়াহ্ ফান্ড। খান ব্রাদার্স পিপি ওভেন ব্যাগ ইন্ডাস্ট্রিজের দর ৯ শতাংশ, গ্লোল্ডেন হার্ভেস্ট এগ্রোর আট দশমিক ৭৫ শতাংশ, দেশবন্ধু পলিমারের আট দশমিক শূন্য ছয় শতাংশ, খুলনা পাওয়ারের সাত দশমিক ৫৯ শতাংশ, এসইএমএ’র লেকচার ইকুইটি ম্যানেজমেন্ট ফান্ডের সাত দশমিক ৩৫ শতাংশ, ইবিএল এনআরবি মিউচুয়াল ফান্ডের ছয় দশমিক ৯৭ শতাংশ, মুন্নু জুট স্টাফলার্সের ছয় শতাংশ, ন্যাশনাল টিউবসের পাঁচ দশমিক ৯৪ শতাংশ, এসইএমএল এফবিএসএল গ্রোথ ফান্ডের দর পাঁচ শতাংশ বেড়েছে।
ছয় দশমিক ২৫ শতাংশ কমে দরপতনের শীর্ষে উঠে আসে ফার্স্ট ফাইন্যান্স। প্রাইম ব্যাংক ফার্স্ট আইসিবি এএমসিএল মিউচুয়াল ফান্ডের দর পাঁচ দশমিক শূন্য আট, শ্যামপুর সুগার মিলের চার দশমিক ৪৮, কপারটেকের চার দশমিক ৩৭, জুট স্পিনার্সের তিন দশমিক ৪৮, সি পার্ল রিসোর্টের তিন দশমিক ৩১ ও মেঘনা পিইটি ইন্ডাস্ট্রিজের তিন দশমিক ১৯, ভিএফএস থ্রেড ডায়িংয়ের দুই দশমিক ৯১, ফারইস্ট ফাইন্যান্সের দুই দশমিক ৮৫ শতাংশ ও জেমিনি সি ফুডের দর দুই দশমিক ৭৮ শতাংশ কমেছে।
সিএসইতে গতকাল সিএসসিএক্স মূল্যসূচক ৩০ দশমিক ৮৮ পয়েন্ট বা দশমিক ৩৩ শতাংশ বেড়ে ৯ হাজার ২৬৬ দশমিক ৪৬ পয়েন্টে এবং সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ৫০ দশমিক ৪৫ পয়েন্ট বা দশমিক ৩৩ শতাংশ বেড়ে ১৫ হাজার ২৬৩ দশমিক ৯০ পয়েন্টে অবস্থান করে। গতকাল সর্বমোট ২৬৩টি কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়। এর মধ্যে দর বেড়েছে ১৩০টির, কমেছে ৯৭টির এবং অপরিবর্তিত ছিল ৩৬টির দর।
সিএসইতে এদিন ১৫ কোটি ৪০ লাখ ৫২ হাজার ২০৯ টাকার শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট লেনদেন হয়। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিল ১৬ কোটি ১৭ লাখ ৪৫ হাজার ৪০৬ টাকার শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট। এ হিসাবে লেনদেন কমেছে ৭৬ লাখ ৯৩ হাজার টাকা। সিএসইতে গতকাল লেনদেনের শীর্ষে অবস্থান করে ডরিন পাওয়ার। কোম্পানিটির দুই কোটি ১৮ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়। গ্রীন ডেল্টা মিউচুয়াল ফান্ডের এক কোটি ৫০ লাখ টাকার, ইউনাইটেড পাওয়ারের ৭৫ লাখ টাকার, খুলনা পাওয়ারের ৬৭ লাখ টাকার, বেক্সিমকোর ৫৮ লাখ টাকার, মুন্নু সিরামিকের ৫৭ লাখ টাকার, কপারটেকের ৪২ লাখ টাকার, সিলকো ফার্মার ৩০ লাখ টাকার, সি পার্ল রিসোর্টের ৩০ লাখ টাকার ও ইন্দোবাংলা ফার্মার ২৯ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়।