ছয় বছরের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে সর্বোচ্চ বাণিজ্য ঘাটতি

শেয়ার বিজ ডেস্ক: গত বছর নভেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য ঘাটতি পূর্বাভাসকে ছাড়িয়ে গেছে। অভ্যন্তরীণ চাহিদা বৃদ্ধি ও রেকর্ড আমদানি বাণিজ্য ঘাটতি বাড়াতে বড় ভূমিকা রেখেছে। খবর রয়টার্স।

যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, গত বছরের নভেম্বরে দেশটির বাণিজ্য ঘাটতি হয়েছে ৫০ দশমিক পাঁচ বিলিয়ন ডলার। আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় এটি তিন দশমিক দুই শতাংশ বেশি। ২০১২ সালের জানুয়ারির পর এটিই সবেচেয়ে বেশি বাণিজ্য ঘাটতি। রয়টার্সের জরিপে অর্থনীতিবিদরা পূর্বাভাস দিয়েছিলেন নভেম্বরে বাণিজ্য ঘাটতি হবে ৪৯ দশমিক পাঁচ বিলিয়ন ডলার। অক্টোবরে বাণিজ্য ঘাটতি ছিল ৪৮ দশমিক ৯ বিলিয়ন ডলার।

মূল্যস্ফীতি সমন্বয়ের পর নভেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ৬৬ দশমিক সাত বিলিয়ন ডলারে। অক্টোবরে বাণিজ্য ঘাটতি ছিল ৬৫ দশমিক ছয় বিলিয়ন ডলার। গত বছর তৃতীয় প্রান্তিকের গড় বাণিজ্য ঘাটতি ৬২ বিলিয়ন ডলারের চেয়ে অক্টোবর ও নভেম্বরে বেশি ছিল।

এ উপাত্ত বিশ্লেষণ করে অক্টোবর-ডিসেম্বর প্রান্তিকে যুক্তরাষ্ট্রের মোট দেশজ উৎপাদনে বাণিজ্যের অবদান কমবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। আগের প্রান্তিকে তিন দশমিক দুই শতাংশ অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির মধ্যে বাণিজ্যের অবদান ছিল দশমিক ৩৬ শতাংশ। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন মনে করেছিল, বাণিজ্য ঘাটতি হ্রাস ও কর বিল সংস্কারে বার্ষিক প্রবৃদ্ধি তিন শতাংশের বেশি স্থায়ী হবে। কিন্তু নতুন করে বাণিজ্য ঘাটতি বৃদ্ধি ট্রাম্প প্রশাসনের জন্য চিন্তার কারণই হলো।

তথ্যমেত, নভেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রে আমদানি ২০৪ বিলিয়ন ডলারের পণ্য। মূলধনি পণ্য আমদানি হয়েছে রেকর্ড পরিমাণ। এছাড়া ভোগ্যপণ্য আমদানি হয়েছে ২০১৫ সালের মার্চের পর সর্বোচ্চ। ভোক্তা চাহিদা আমদানি বৃদ্ধির মূল কারণ ছিল। চীন থেকে আমদানি নভেম্বরে অপরিবর্তিত ছিল।

অন্যদিকে নভেম্বরে যুক্তরাষ্টর থেকে ২০০ দশমিক দুই বিলিয়ন ডলারের পণ্য রফতানি হয়েছে, যা কোনো মাসে রেকর্ড সর্বোচ্চ। পেট্রোলিয়াম, মূলধনি পণ্য ও শিল্প সরঞ্জাম রফতানিতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। তবে চীনে রফতানি আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় কমেছে এক দশমিক ৯ শতাংশ। দেশটির সঙ্গে নভেম্বরে বাণিজ্য ঘাটতি দশমিক ছয় শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৫ দশমিক চার বিলিয়ন ডলারে।

ট্রাম্প প্রশাসন বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে শুরু থেকেই বিভিন্ন উদ্যোগ নিচ্ছে। চীনসহ অন্য দেশগুলোর সঙ্গে এ বিষয়ে একাধিকবার আলোচনাও করেছে তারা। এমনকি চীনের অ্যালুমিনিয়ামে শুল্ক আরোপের মতো সিদ্ধান্তও নিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন।

ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেওয়ার পরই যুক্তরাষ্ট্রের প্রবৃদ্ধি চার শতাংশে নিয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন এবং নিজ দেশের সুবিধার্থে বিভিন্ন বাণিজ্য চুক্তিতে সংশধোনের জন্য উদ্বেগ নেন। তিনি দাবি করেন, তার পূর্বসূরিদের বাণিজ্যনীতি যুক্তরাষ্ট্রের কারখানাগুলোতে কর্মসংস্থান কমাচ্ছে। আমদানি বাণিজ্য ঘাটতি বাড়াচ্ছে বলে দাবি করে নতুন এ প্রেসিডেন্ট সীমান্ত পারাপারে করারোপের পক্ষেও যুক্তি দেন। প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেওয়ার পরই ১২ দেশের জোট ট্রান্স-প্যাসিফিক পার্টনারশিপ (টিপিপি) থেকে নিজেদের সরিয়ে নেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। এছাড়া ১৯৯৪ সালে স্বাক্ষরিত যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও মেক্সিকোর নাফটা চুক্তিরও পুনর্মূল্যায়ন করতে চাচ্ছেন তিনি।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০