জঙ্গল সলিমপুর নিয়ে আগামী সপ্তাহে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে বৈঠক

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম: চট্টগ্রামে সীতাকুণ্ড জঙ্গল সলিমপুরে অবৈধভাবে দখলকৃত প্রায় তিন হাজার ১০০ একর জমি উদ্ধার করেছে জেলা প্রশাসন। এলাকার পরিবেশ, প্রতিবেশের ভারসাম্য ও জীববৈচিত্র্য রক্ষার্থে বিভিন্ন উদ্যোগ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে আগামী ১২ সেপ্টেম্বর দুপুরে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে সরকারের উচ্চপর্যায়ের এক সভা অনুষ্ঠিত হবে।

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পরিচালক ডা. মোহাম্মদ মহিবুল হাসান স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে এ তথ্য জানানো হয়। সভায় উপস্থিত থাকবেন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস।

সভায় জননিরাপত্তা বিভাগ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়, স্থানীয় সরকার বিভাগ, বিদ্যুৎ বিভাগ, ভূমি মন্ত্রণালয়, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগ, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন-বিষয়ক মন্ত্রণালয়, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়, সুরক্ষা সেবা বিভাগ, আইন ও বিচার বিভাগের সিনিয়র সচিব সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ, পুলিশ, র‌্যাব, আনসার ও গ্রাম রক্ষা বাহিনীর প্রধানরা চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসকসহ সংশ্লিষ্ট সংস্থার প্রতিনিধিদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। এছাড়া চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র এম রেজাউল করিম ও সিডিএ চেয়ারম্যানকে বিশেষ আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।

প্রায় তিন দশক ধরে জঙ্গল সলিমপুরের পাহাড়ে হাজারো অবৈধ স্থাপনা গড়ে উঠেছে। এছাড়া এখানে বিভিন্ন সন্ত্রাসী বাহিনী গড়ে উঠেছে। এক মাস ধরে জেলা প্রশাসন সেখানে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করে আসছে।

একসময় জঙ্গল সলিমপুর চট্টগ্রামের এক বিচ্ছিন্ন এলাকা হিসেবে পরিচিত ছিল, যেখানে প্রবেশ করতে গেলেও ভূমিখেকো ও সন্ত্রাসীদের দেয়া পরিচয়পত্র ছাড়া কেউ ঢুকতে পারত না। প্রশাসনের কেউ যাতে প্রবেশ করতে না পারে, সেজন্যে তাদের নজরদারি ছিল। এলাকাটি ছিল সন্ত্রাসীদের অভয়ারণ্য। জঙ্গল সলিমপুর এলাকাটিতে অনেক পাহাড় রয়েছে, কিন্তু ভূমিখেকো ও সন্ত্রাসীরা পাহাড় কেটে সাবাড় করে প্লট বিক্রি করছিল। তারা পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতি করেছে বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ।

সম্প্রতি এ বিষয়ে নজর দেয় চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন। গত কয়েকদিনে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে জঙ্গল সলিমপুরে বেশ কয়েকটি অভিযানে প্রায় তিন হাজার ১০০ একর খাসজমি উদ্ধারের কার্যক্রম চলছে। জঙ্গল সলিমপুরের ভূমিদস্যু ও সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি মামলা করা হয়।

জেলার ডেপুটি কমিশনার (ডিসি) মোহাম্মদ মমিনুর রহমান বলেন, আমরা জঙ্গল সলিমপুর এলাকার বেহাত হয়ে যাওয়া প্রায় তিন হাজার ১০০ একর খাসজমি উদ্ধার করেছি। বেহাত হওয়া খাসজমি ভূমিদস্যুরা সাধারণ মানুষের কাছে প্লট অনুযায়ী  দখলস্বত্ব বিক্রি করে কোটি কোটি টাকা লুটপাট করেছে। তাদের বিরুদ্ধে এরই মধ্যেই বেশ কয়েকটি মামলা করা হয়েছে এবং কয়েকজন কারাগারেও আছেন।

তিনি আরও বলেন, জঙ্গল সলিমপুরের উদ্ধারকৃত তিন হাজার ১০০ একর খাসজমির বিষয়টি সরকারের নজরে আসে। সেজন্যই পাহাড় ও বন রক্ষা করে পরিবেশ ও প্রতিবেশের ভারসাম্য আনয়ন ও জীববৈচিত্র্য রক্ষার্থে আবার কীভাবে জঙ্গল সলিমপুর এলাকাটিকে সবুজায়নের মাধ্যমে সরকারের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা যায়, তার নিমিত্তে আগামী ১২ সেপ্টেম্বর সরকারের উচ্চপর্যায়ের একটি বৈঠক হতে যাচ্ছে। এ মাস্টার প্ল্যানের মাধ্যমে জঙ্গল সলিমপুর এলাকার অন্ধকার যুগের অবসান ঘটবে।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০