জনগণকে সেবা দিলে ভোটের ভাবনা থাকবে না: প্রধানমন্ত্রী

শেয়ার বিজ ডেস্ক: জনগণের সেবা নিশ্চিত করতে পারলে ভবিষ্যতে ভোটের কোনো চিন্তা থাকবে না বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে ময়মনসিংহ ও কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের নবনির্বাচিত মেয়রদের শপথ অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন।

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে এ অনুষ্ঠানে ময়মনসিংহের মেয়র ইকরামুল হক টিটু ও কুমিল্লার মেয়র তাহসীন বাহার সূচনাকে শপথ পড়ান সরকারপ্রধান। আর স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী তাজুল ইসলাম ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত ওয়ার্ডের নারী কাউন্সিলরদের শপথ পড়ান। খবর: বাসস।

নবনির্বাচিত মেয়র ও কাউন্সিলদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আপনারা জনগণের ভোটে নির্বাচিত। জনগণের সেবা নিশ্চিত করতে পারলে ভবিষ্যতে ভোটের কোনো চিন্তা থাকবে না। মানুষ আপনাদের ওপর আস্থা রাখবে, বিশ্বাস রাখবে। এই কথাটা আপনারা মাথায় রাখবেন। জনসেবার দিকে বিশেষ দৃষ্টি দেবেন, সেটাই আমরা চাই।

চিকিৎসাসেবা মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেয়ার জন্য জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রথমে ইউনিয়ন পর্যায়ে দশ শয্যার হাসপাতাল তৈরির উদ্যোগ নিয়েছিলেন, সে কথা মনে করিয়ে দিয়ে তার মেয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘তিনি সম্পন্ন করতে পারেননি। আমি সরকারে আসার পর কমিউনিটি ক্লিনিক করলাম। স্থানীয় লোক সেখানে জমি দেয়, আমরা ভবনের ব্যবস্থা করা, চিকিৎসার সরঞ্জামের ব্যবস্থা করা, স্বাস্থ্যকর্মী প্রশিক্ষণ দিয়ে সেখানে নিয়োগ দিই। ৩০ ধরনের ওষুধ আমরা বিনামূল্যে দিচ্ছি। আপনারা জনপ্রতিনিধি হিসেবে এসব দিকে নজর দেবেন যে স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলো সঠিকভাবে চলছে কি না। মানুষ চিকিৎসা সেবা পাচ্ছে কি না। মানুষ সেবা পাওয়াটাই বড় কথা।’

সরকারপ্রধান বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সবসময়ের জনগণের কল্যাণে কাজ করে, জনগণের উন্নয়নের লক্ষ্য নিয়ে কাজ করে। একমাত্র আওয়ামী লীগ যখন সরকার গঠন করেছে তখনই এদেশের মানুষ কমপক্ষে এইটুকু পেয়েছে যে, আওয়ামী লীগ জনগণের সেবক হিসেবে কাজ করে। যে কারণে বাংলাদেশের উন্নয়ন করাটা সম্ভব হয়েছে। আমরা প্রত্যেকটা এলাকাকে উন্নয়ন করার জন্য পদক্ষেপ নিয়েছি।’

দেশের উন্নতির জন্য গ্রামের উন্নয়নের ওপর জোর দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘গ্রামের মানুষের আর্থসামাজিক উন্নয়ন করতে হবে। তাদের ক্রয়ক্ষমতা বাড়াতে হবে, তাদের আর্থিক সচ্ছলতা আনতে হবে। আবার যদি শিল্পাঞ্চলের কথাও চিন্তা করি, তখন আমাদের ভাবতে হবে দেশের মানুষের ক্ষমতা বৃদ্ধি করে পণ্য উৎপাদন করার কথা, যাতে আমাদের নিজস্ব বাজার তৈরি হয়। মানুষ যাতে সেই সক্ষমতা অর্জন করতে পারে, সেদিকে লক্ষ্য রেখে আমরা কাজ করে যাচ্ছি।

জনপ্রতিনিধিদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘জনগণকে উন্নত সেবা দান, জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন, পরিকল্পিত নগর গড়ে তোলাÑএটাই হচ্ছে সরকারের লক্ষ্য। গ্রামের মানুষ শহরের সব সুবিধা পাবে সেটাকে সামনে রেখে আমরা সব পরিকল্পনা প্রণয়ন করেছি। বাংলাদেশ এখন বদলে যাওয়া বাংলাদেশ। আজকে যার বয়স ১৫ বছর, সে হয়ত ভাবতেও পারবে না যে ১৫ বছর আগে, অর্থাৎ ২০০৯-এর আগে বাংলাদেশ কী অবস্থা ছিল। আজকে বাংলাদেশ সেখান থেকে অনেক পরিবর্তন এসেছে। প্রবৃদ্ধির হার বেড়েছে, মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি পেয়েছে, সবচেয়ে বড় কথা দারিদ্র্যের হার আমরা নামিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছি।’”

সরকারপ্রধান বলেন, ‘অনেক দেশ চাইবে খাদ্য আমদানির মাধ্যমে আমরা তাদের ওপর নির্ভরশীল থাকি। তবে কোনো বড় দেশের ওপর নির্ভরশীল হয়ে থাকবে না বাংলাদেশ।’

গত ৯ মার্চ ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের সাধারণ নির্বাচন, কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের মেয়র পদে উপনির্বাচন হয়। একই দিনে হয় পাঁচ জেলা পরিষদে চেয়ারম্যান পদের নির্বাচন। বিএনপির বর্জনের মধ্যে দুই সিটির নির্বাচনে আওয়ামী লীগ এবার দলীয়ভাবে প্রার্থী দেয়নি, কাউকে দলীয় প্রতীকও দেয়া হয়নি।

ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের গতবারের মেয়র টিটু এবার টেবিল ঘড়ি প্রতীকে ১ লাখ ৩৯ হাজার ৬০৪ ভোট পেয়ে পুনর্নির্বাচিত হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী হাতি প্রতীকের সাদেকুল হক খান মিল্কী টজু পান ৩৫ হাজার ৭৬৩ ভোট।

ময়মনসিংহ নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ইকরামুল হক টিটু ২০১৯ সালের নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সিটি করপোরেশনের মেয়র হওয়ার আগে দুইবার কমিশনার এবং দুইবার পৌরসভার মেয়রের দায়িত্ব পালন করেন।

অন্যদিকে কুমিল্লার সংসদ সদস্য আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহারের মেয়ে তাহসীন বাহার সূচনা এবারই প্রথম সিটি করপোরেশনে নির্বাচন করেন। বাস প্রতীক নিয়ে সূচনা নির্বাচিত হয়েছেন ৪৮ হাজার ৮৯০ ভোট পেয়ে। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী দুইবারের সাবেক মেয়র মনিরুল হক সাক্কুর চেয়ে প্রায় ২২ হাজার ভোট বেশি পেয়েছেন তিনি।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০