নিজস্ব প্রতিবেদক: ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বৃহস্পতিবারের সংবাদ সম্মেলনে একটি বক্তব্যের সমালোচনা করে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদিন ফারুক বলেছেন, ক্ষমতায় থাকলে বড় কথা বলা যায়। ক্ষমতায় থাকলে গ্রেপ্তরও করা যায়। ক্ষমতায় থাকলে বিনা কারণে খালেদা জিয়াকে জেলে রাখা যায়। কিন্তু জনগণ যখন রাস্তায় নেমে পড়বে, তখন এসব কথায় কোনো কাজ হবে না।
গতকাল শুক্রবার রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বেগম খালেদা জিয়া, খায়রুল কবির খোকন, হাবিব উন নবী খান সোহেল, সুলতান সালাউদ্দিন টুকুসহ বিএনপি নেতাদের নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে এসব কথা বলেন তিনি।
ফারুক বলেন, তখন ক্ষমতা আপনাকে ছাড়তেই হবে। তাই বলব, জনগণের কাছে হেরে যাওয়ার আগে ক্ষমতা ছেড়ে দিন। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আইনটা পাস করে দিয়ে নীরবে বিদায় নেন।
বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করে স্বাধীনতা অধিকার আন্দোলন। সমাবেশে বিএনপির এই নেতা আরও বলেন, বিএনপির তো অস্তিত্বই নেই। বিএনপি নাকি টিকবে না, বিএনপি অসত্য কথা বলে। বিএনপি বাসে আগুন দেয়, বিএনপি মানবাধিকার লঙ্ঘন করে, তাই বিএনপির অস্তিত্ব থাকতে পারে না। এসব কথা আওয়ামী লীগ নেতাদের মুখ থেকে ১৬টি বছর ধরে শুনে আসছি এবং এখনও শুনতে হচ্ছে।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর একটি সংবাদ সম্মেলন পত্রিকায় এসেছে। যে দেশে মানবাধিকার ও সংবিধান লুণ্ঠিত হচ্ছে, এমন একটি দেশের প্রধানমন্ত্রী সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, আমাকে ছাড়া আর এদেশে কাকে প্রধানমন্ত্রী করবে, কে বা আছে? কিন্তু আমি বলব, আপনাকে সরানোর ইচ্ছা আমাদের ছিল না। কারণ বিএনপি এমন একটি নেতার দল, যে নেতা বাংলাদেশকে তলাবিহীন ঝুড়ি থেকে ঝুড়িতে রূপান্তরিত করেছে। তাই এমন নেতার দল কস্মিনকালেও ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য ষড়যন্ত্র করতে পারে না।
ষড়যন্ত্র মূলত আওয়ামী লীগ করে বলে মন্তব্য করে ফারুক বলেন, আপনারা যদি ষড়যন্ত্র না করতেন, তাহলে ২০১৪ সালে কেন বিএনপিকে বাদ দিয়ে নির্বাচনে গেলেন। কেন ২০১৮ সালে বিএনপির সঙ্গে অঙ্গীকার করার পরও দিনের ভোট রাতে করলেন। কেন ২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারি ‘ভাই ভাই ডামি’ ভোট করলেন। এসব কথার উত্তর আপনাকে একদিন দিতে হবে।
ফারুক বলেন, বিএনপি আপনাকে এবং আপনার দল আওয়ামী লীগকে ক্ষমতা থেকে সরাতে চায় এ কারণে যে জনগণ চায় না আপনারা আর ক্ষমতায় থাকেন। কারণ জনগণ চায় না তিন টাকার কলা ১৪ টাকায় কিনতে। দ্রব্যমূল্যের এই ঊর্ধ্বগতির মধ্যে আপনি বিরোধী দলের নেতাদের যেভাবে বিনা কারণে জেলখানায় রাখছেন, তাতে জনগণ মনে করে আপনার দ্বারা সুষ্ঠু নির্বাচন কখনোই সম্ভব না। আর আপনার আমলে অর্থনীতি চাঙা হবে না। তাই জনগণ চাচ্ছে আপনি সরে যান, যার প্রমাণ জনগণ ৭ জানুয়ারির ভোটে দিয়েছে, কয়েক পার্সেন্টও ভোট পড়েনি।
স্বাধীনতা অধিকার আন্দোলনের কাজী মনিরুজ্জামান মনিরের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবীব, বিএনপির শিশুবিষয়ক সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ সিদ্দীকী, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মোহাম্মদ রহমাতুল্লাহ, আলমগীর হোসেন, ওলামা দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক মাওলানা আলমগীর হোসেন, ছাত্রদলের সাবেক সহসভাপতি এজমল হোসেন পাইলট, মৎস্যজীবী দলের সদস্য ইসমাইল হোসেন সিরাজী, আদর্শ নাগরিক আন্দোলনের সভাপতি মীর আমির হোসেন আমু প্রমুখ।