শেয়ার বিজ প্রতিনিধি, সৈয়দপুর: জনবল সংকটে উৎপাদন বন্ধ হওয়ার উপক্রম হওয়ায় সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানায় লোক নিয়োগের দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। গতকাল বুধবার রেলওয়ে কারখানার প্রধান ফটকের সামনে স্মরণকালের চার কিলোমিটার দীর্ঘ মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়। সৈয়দপুরের সর্বদলীয় সব রেলওয়ে ট্রেড ইউনিয়ন, রেলওয়ে ডিপ্লোমা প্রকৌশলী ও মুক্তিযোদ্ধা সংসদ রেলওয়ে কমান্ডের ব্যানারে আয়োজন করা হয় ওই মানববন্ধন কর্মসূচি।
গতকাল বেলা সাড়ে ১১টায় শুরু হওয়া ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধনে রেলওয়ের সব ট্রেড ইউনিয়ন ও রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীসহ সর্বস্তরের নারী-পুরুষ অংশ নেন। রেলওয়ে কারখানার খাবার বিরতির সময় কারখানার সব শ্রমিক-কর্মচারী কারখানা থেকে বেরিয়ে যোগ দেন মানববন্ধনে। এ সময় অংশগ্রহণকারীরা জনবল সংকট নিরসনে অবিলম্বে লোক নিয়োগের দাবি জানিয়ে প্ল্যাকার্ড, ফেস্টুন ও ব্যানার প্রদর্শন করেন।
বক্তারা দেশের বৃহৎ এ রেল কারখানার চরম জনবল সংকটের চিত্র তুলে ধরে বলেন, এক সময় এ রেল কারখানায় ১০ হাজার লোক কাজ করত। কিন্তু লোক নিয়োগের ধারাবাহিকতা না থাকায় জনবল এখন এক হাজার ৫০০ জনে এসে ঠেকেছে। জনবলের অভাবে রেলকোচের যন্ত্রাংশ তৈরির মেশিনপত্র চালানো যাচ্ছে না। মাসিক রেলওয়ে কোচ ও ওয়াগন মেরামতের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করা সম্ভব হচ্ছে না। বর্তমান জনবলের বেশিরভাগ শ্রমিক কারিগরের চাকরির মেয়াদ শেষ হয়ে আসায় প্রতি মাসেই অবসরে যাচ্ছেন দক্ষ শ্রমিক-কারিগররা। এ অবস্থায় কারখানার উৎপাদন বন্ধের উপক্রম হয়েছে।
বক্তারা আরও বলেন, কারখানায় প্রায় তিন হাজার শূন্যপদ রয়েছে। শূন্যপদে লোক নিয়োগ না হলে কারখানা অচিরেই বন্ধ হয়ে যাবে। একই সঙ্গে বেকারদের কর্মসংস্থানের বিপুল সম্ভাবনাও বিলুপ্ত হবে। বক্তারা কারখানা বাঁচাতে অবিলম্বে শূন্যপদে লোক নিয়োগে সরকারের প্রতি দাবি জানান। অন্যথায় দাবি আদায়ে আরও কঠোর আন্দোলনের কর্মসূচি দেওয়ার হুশিয়ারি দেওয়া হয়। মানববন্ধন শেষে জনবল নিয়োগের দাবিতে প্রধানমন্ত্রী বরাবর দেওয়া একটি স্মারকলিপি রেলওয়ে কারখানার বিভাগীয় তত্তাবধায়ক (ডিএস) কুদরত-ই-খুদার হাতে তুলে দেন রেলওয়ে শ্রমিক লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সৈয়দপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. মোখছেদুল মোমিন। এ সময় কর্মসূচির আয়োজক সংগঠনের অন্যান্য নেতা উপস্থিত ছিলেন।
মানববন্ধন কর্মসূচিতে রেলওয়ের ১১টি ট্রেড ইউনিয়ন, রেলওয়ে ডিপ্লোমা প্রকৌশলী সমিতি ও মুক্তিযোদ্ধা সংসদ রেলওয়ে কমান্ড এবং সৈয়দপুর পৌর পরিষদ, আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টি, ওয়ার্কার্স পার্টি, সিপিবি, জাসদ (ইনু), সৈয়দপুর বণিক সমিতিসহ বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক ও পেশাজীবী সংগঠনের স্থানীয় শাখার নেতা ছাড়াও সর্বস্তরের নারী-পুরুষ অংশ নেন।