একনেক সভায় উঠছে আগামীকাল

জনশুমারির ব্যয় বাড়ছে সাতগুণ

নিজস্ব প্রতিবেদক: ২০২১ সালে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া জনশুমারি ও গৃহগণনা প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে এক হাজার ৭৬১ কোটি ৭৯ লাখ টাকা। সর্বশেষ ২০১১ সালে অনুষ্ঠিত আদমশুমারি ও গৃহগণনায় ব্যয় হয়েছিল ২৫৩ কোটি টাকা। সে হিসেবে আসন্ন জনশুমারির প্রস্তাবিত ব্যয় বাড়ছে প্রায় সাতগুণ। ‘জনশুমারি ও গৃহগণনা ২০২১’ শীর্ষক প্রকল্পটি অনুমোদনের জন্য জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় উত্থাপন করা হচ্ছে আগামীকাল।

জানা গেছে, প্রকল্প গ্রহণের শুরুতে এই ব্যয় ধরা হয়েছিল তিন হাজার ৫০০ কোটি টাকা। তবে শেষমেশ ওই ব্যয় কাটছাঁট করে এক হাজার ৭৬১ কোটি ৭৯ লাখ টাকায় নামিয়ে আনা হয়েছে। প্রস্তাবিত এই ব্যয়ের মধ্যে সরকারের নিজস্ব অর্থায়ন এক হাজার ৫৭৮ কোটি ৬৮ লাখ টাকা। প্রকল্প সহায়তা হিসেবে পাওয়া যাবে ১৮৩ কোটি ১১ লাখ টাকা। এক্ষেত্রে সম্ভাব্য উন্নয়ন সহযোগী প্রতিষ্ঠান রয়েছে ইউএনএফপিএ, ইউএসএআইডি, ইউনিসেফ ও ডিএফআইডি। অনুদান হিসেবে এ অর্থ পাওয়া যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।

পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের উদ্যোগে ষষ্ঠবারের মতো অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া জনশুমারি ও গৃহগণনার এ প্রকল্প বাস্তবায়নের দায়িত্বে রয়েছে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস)।

সম্প্রতি জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় বিবেচনার জন্য এ প্রকল্পের সারসংক্ষেপ উপস্থাপন করা হয়। এতে অর্থপ্রাপ্তির নিশ্চয়তার বিষয়ে বলা হয়, গত ৩১ জুলাই পরিকল্পনা কমিশনের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ ও ইউএনএফপিএ’র যৌথ আয়োজনে এ-সংক্রান্ত সভা অনুষ্ঠিত হয়। এরই ধারাবাহিকতায় গত ২৫ আগস্ট ডিএফআইডি’র প্রতিনিধি এবং গত ৪ সেপ্টেম্বর ইউএসএআইডি ও ইউনিসেফ প্রতিনিধিদের সঙ্গে বিবিএসের মহাপরিচালক মোহাম্মদ তাজুল ইসলামের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সংস্থাগুলো অর্থায়নের সম্মতি দেয়। তবে এখন পর্যন্ত কোনো আনুষ্ঠানিক সম্মতি পাওয়া যায়নি। এক্ষেত্রে বিদেশি অনুদান না পাওয়া গেলে সরকারই এ ব্যয় বহন করবে বলে ডিপিপিতে উল্লেখ রয়েছে।

জনশুমারি ও গৃহগণনার এ প্রকল্পের মেয়াদ চলতি বছরের জুলাই থেকে শুরু হয়ে ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত। একটি নির্দিষ্ট তারিখে প্রতিটি খানা ও শতভাগ জনগণকে এ গণনার অন্তর্ভুক্ত করা হবে। বিদেশে অবস্থানরত প্রবাসী বাংলাদেশি ও বাংলাদেশে অবস্থানরত বিদেশি নাগরিকদেরও এ গণনার মধ্যে আনা হবে। ২০১১ সালে অনুষ্ঠিত আদমশুমারির তথ্যমতে, তখন লোকসংখ্যা ছিল ১৪ কোটি ৪০ লাখ ৪৩ হাজার ৬৯৭ জন।

দেশে প্রথমবার গৃহগণনা হয় ১৯৭৩ সালে। প্রথম আদমশুমারি অনুষ্ঠিত হয় ১৯৭৪ সালে। ১৯৮১ সালে আদমশুমারি ও গৃহগণনা একসঙ্গে পরিচালিত হয়। পরবর্তীকালে তৃতীয়, চতুর্থ ও পঞ্চমবার আদমশুমারি এবং গৃহগণনা পরিচালিত হয় যথাক্রমে ১৯৯১, ২০০১ ও ২০১১ সালে। ২০১৩ সালের পরিসংখ্যান আইনের মাধ্যমে ‘আদমশুমারি ও গৃহগণনা’র নাম পরিবর্তন করে ‘জনশুমারি ও গৃহগণনা’ রাখা হয়। ২০২১ সালের মার্চে পরবর্তী শুমারি অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।

টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট (এসডিজি) সূচক ১৭.১৯.২ অনুযায়ী প্রতিটি দেশে প্রতি ১০ বছরে অন্তত একবার জনশুমারি ও গৃহগণনা পরিচালনার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। আসন্ন জনশুমারিতে এসডিজি সূচকগুলোর মধ্যে ২৫টি সূচকের তথ্য সরাসরি সংগ্রহ করা হবে। ৯৭টি সূচকের বিভাজক হিসেবে এর তথ্য ব্যবহƒত হবে। সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার চূড়ান্ত মূল্যায়ন ও অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা উন্নয়ন ফলাফল কাঠামোর সূচকগুলো অর্জনে এ শুমারি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে।

বিষয় ➧

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০