নিজস্ব প্রতিবেদক: শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, তরুণ সমাজকে জনসম্পদে পরিণত করার জন্য শিক্ষায় বিনিয়োগের বিকল্প নেই। গতকাল বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালসে (বিইউপি) এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেন, আমাদের যে তরুণ জনগোষ্ঠী, তাদের চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের জন্য তৈরি করতে হবে। এর জন্য শিক্ষায় বিনিয়োগের বিকল্প নেই। চতুর্থ শিল্পবিপ্লবে অনেক মানুষের কর্মসংস্থান হারিয়ে যাবে বলে অনেকেই বলছেন। তবে সেইসঙ্গে অনেক সম্ভাবনাও তৈরি হবে। সেই সম্ভাবনার জন্য আমাদের শিক্ষার্থীদের তৈরি করতে হবে।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, সারা বিশ্বে করোনা সবকিছু লণ্ডভণ্ড করে দিয়েছে। শিক্ষাকে এক চরম অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দিয়েছে। ঠিক সেখানেই বিইউপি এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। তিনি বলেন, এ বিশ্ব স্থবিরতার মাঝে প্রযুক্তির ব্যবহারের মাধ্যমে বিইউপি শুরু থেকেই অনলাইন ক্লাস, পরীক্ষাসহ অন্যান্য সব প্রশাসনিক কাজ সচল রেখেছে। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর প্রাক্কালে প্রধানমন্ত্রীর স্বপ্নের ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণের আহ্বানে সাড়া দিয়ে বিইউপি যে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে, তা সত্যিই অনন্য।
শিক্ষায় বিনিয়োগ নিয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দিকনির্দেশনার কথা উল্লেখ করে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, শেখ মুজিবুর রহমান শিক্ষায় জিডিপির অন্তত চার শতাংশ বিনিয়োগের কথা বলেছিলেন। কিন্তু আমরা আজও তিন শতাংশের বেশি বিনিয়োগ করতে পারছি না। তবে অন্যান্য যেসব বিষয়ে বিনিয়োগ করা হচ্ছে, সেগুলো পক্ষান্তরে শিক্ষা খাতেই বিনিয়োগ হচ্ছে। কারণ সেগুলো শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করছে। দারিদ্র্য যেন কারও উচ্চশিক্ষা অর্জনে বাধা হয়ে না দাঁড়ায়, আমাদের সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে শিক্ষা ও গবেষণার মান আরও বাড়ানোর তাগিদ দিয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, কার কত বেশি শিক্ষার্থী আছে, সেটি দেখলে হবে না। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে নিজেদের গুণগত মান নিয়ে ভাবতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে দেখতে হবে যে, তারা শিক্ষার্থীদের নতুন কী জ্ঞান দিতে পেরেছে, যা দিয়ে দেশ ও বিশ্ব উপকৃত হবে।
এর আগে বিইউপির কমপ্রিহেনসিভ লার্নিং ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম, রিমোট প্রক্টরিং ও প্ল্যাজারিজম চেকার সফটওয়্যারের উদ্বোধন করেন শিক্ষামন্ত্রী।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিইউপির প্রশংসা করে শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেন, অনেক কারণেই আমাদের দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো র?্যাংকিংয়ে স্থান পায় না। প্ল্যাজারিজমের (চৌর্যবৃত্তি) কারণে আমাদের দেশের উচ্চশিক্ষার যে চর্চা করা উচিত সেটি করা যায়নি। শিক্ষার্থীরা উচ্চশিক্ষা নিতে এসে পড়াশোনা ছাড়া আর কিছুই করছে না। এর পেছনে নানা কারণ আছে। তবে উন্নত বিশ্বের যে কোনো বিশ্ববিদ্যালয় যেভাবে পরিচালিত হয়, তার সব উপাদান বিইউপিতে আছে। উচ্চশিক্ষায় শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে হবে। বিইউপিতে শৃঙ্খলায় কোনো ছাড় নেই। সে কারণেই বিইউপি এগিয়ে যাচ্ছে।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন বিইউপির উপাচার্য মেজর জেনারেল আতাউল হাকিম সারওয়ার হাসান। এছাড়া অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিইউপি সিনেট সদস্য এবং সাবেক মন্ত্রী লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) ফারুক খানসহ বিইউপির শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা।