জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় প্রধান অন্তরায় অনিরাপদ খাদ্য

মাছুম বিল্লাহ ভূঞা: স্বাস্থ্যই সম্পদ। স্বাস্থ্যই সুখের মূল। স্বাস্থ্যের দুটি অংশÑএকটি শারীরিক, অন্যটি মানসিক; একটি অপরটির পরিপূরক। সুস্থ বলতে মানবদেহের উভয় অংশকেই বোঝায়। শরীর সুস্থ না থাকলে মন সুস্থ থাকে না। কারণ সুস্থ দেহের সঙ্গে সুস্থ মনের ঘনিষ্ঠ যোগসূত্র রয়েছে। জনস্বাস্থ্যকে বাদ দিয়ে টেকসই উন্নয়ন সম্ভব নয়। কারণ শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষার বিষয়টি সর্বজনীন মানবাধিকার এবং স্বীকৃত মানবোন্নয়নের সূচক। তাই ‘বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা’ ১৯৭৮ সালে আলমা-আতা ঘোষণায় স্বাস্থ্যের সংজ্ঞায় বলা হয়েছে: Health is not merely the absence of disease or infirmity. It is a state of complete, physical, mental and social well-being. (স্বাস্থ্য সম্পূর্ণভাবে শারীরিক, মানসিক ও সামাজিক সুস্থতার একটি অবস্থা, কেবল রোগ বা অসুস্থতার অভাব নয়।)

যাতায়াত ও যোগাযোগের মধ্যে যেমন তফাত রয়েছে, স্বাস্থ্য ও চিকিৎসার মধ্যেও তেমনি মৌলিক পার্থক্য রয়েছে। অজ্ঞতা ও জ্ঞানস্বল্পতার কারণে অনেকেই এগুলোকে সঠিকভাবে চিহ্নিত করতে পারেন না। এজন্য অনেকের মধ্যেই স্বাস্থ্য সম্পর্কে একধরনের ভ্রান্ত ধারণা প্রচলিত রয়েছে। তাই কিছু লোক মনে করেন স্বাস্থ্য বিষয়টি শুধু চিকিৎসানির্ভর। যদিও স্বাস্থ্য একটি বিস্তৃত শব্দ। এই স্বাস্থ্য মানে দুই পায়ের ওপর ভর দিয়ে কোনোমতে জীবন পার করে দেয়া নয় বা হাতড়ে হাতড়ে জীবন বহন করাও নয়! বরং স্বাস্থ্য বলতে বোঝায় সুস্থ, স্বাভাবিক, নীরোগ ও ভারসাম্যপূর্ণ শরীর এবং আনন্দময়, হাসি-খুশি ও সংবেদনশীল মন। শারীরিক, মানসিক ও সামাজিক সুখ-সমৃদ্ধির সম্মিলিত অবস্থাই স্বাস্থ্য। স্বাস্থ্যসেবার দুটি ধারা আছে, যেগুলো Promotive, Preventive এবং চিকিৎসাসেবার দুটি ধারা নিরাময়মূলক এবং পুনর্বাসনমূলক (Curative and Rehabilitative)খাত বলে চিহ্নিত করা হয়েছে। তাই নিরাপদ খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি, নির্মল বাতাস, পরিবেশ, বাসস্থান, উম্মুক্ত স্থান, স্যানিটেশন, হাঁটাচলা, খেলাধুলার সুযোগ নিশ্চিতের মাধ্যমে স্বাস্থ্য সুরক্ষায় কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা প্রয়োজন। কারণ নিরাপদ খাদ্য ও সুপেয় পানির জোগান এবং খেলাধুলার সুযোগ নিশ্চিত করা ছাড়া জনস্বাস্থ্য সুরক্ষা অসম্ভব। বর্তমানে বাংলাদেশে অনিরাপদ ও বিষযুক্ত খাদ্য, প্যাকেটজাত ও প্রক্রিয়াজাত খাবার, অপুষ্টি ও জলবায়ু বিপর্যয়ের কারণে খাদ্যসংকট, সুপেয় পানির হাহাকার, আর্থিক অনটন, আয়বৈষম্য ও জলবায়ু বিপর্যয় প্রভৃতি জনস্বাস্থ্যের ঝুঁকি উদ্বেগজনক পরিস্থিতিতে ফেলে দিয়েছে, যা জনস্বাস্থ্যের সুরক্ষার জন্য শাঁখের করাত হয়ে দাঁড়িয়েছে।

মানুষের মৌলিক চাহিদাগুলোর অন্যতম খাদ্য। যদিও ধান, আম, পেয়ারা আলু প্রভৃতি ফসল ও ফল উৎপাদনে বাংলাদেশ শীর্ষ আটটি দেশের মধ্যে রয়েছে। কৃষির উন্নয়নে এ সাফল্য পৃথিবীব্যাপী বহুলভাবে প্রশংসিত ও নন্দিত হলেও বর্তমানে আমরা এমন একটা সময়ে বাস করছি, যেখানে প্রতিদিন লাখ লাখ মানুষ এই মৌলিক চাহিদা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। অসাধু ব্যবসায়ীদের দৌরাত্ম্য ও অপতৎপরতার কারণে মানুষ এখন চরম খাদ্য নিরাপত্তাহীনতার শিকার। বাজারে বর্তমানে এমন কোনো খাবার খুঁজে পাওয়া যাবে না, যেখানে কোনো ভেজাল নেই। খাদ্যদ্রব্যে বিভিন্ন ধরনের কেমিক্যাল আর বিষাক্ত দ্রব্যের অতিরঞ্জিত ব্যবহারে নির্ভেজাল খাবার পাওয়াই দায়। ভেজাল খাদ্যের প্রভাবে ক্যানসার, লিভার সিরোসিস ও কিডনি অকেজো হওয়ার মতো অন্যান্য ক্রনিক রোগ ব্যাপকহারে ছড়িয়ে পড়ছে। নিত্যপাতের  চার সবজিতেই (বেগুন, ফুলকপি, শিম ও বরবটির নমুনায়) ১১ থেকে ১৪ শতাংশের মধ্যে মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর মাত্রায় রাসায়নিক কীটনাশকের উপস্থিতি পাওয়া গেছে, যেসব তথ্য বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বারি) গবেষণায় উঠে এসেছে।

ফল খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী বটে, কিন্তু বাংলাদেশের মৌসুমি ফলেও ফরমালিন মেশানোর ঘটনা ধরা পড়ছে বিভিন্ন জায়গায়। ইথোফেন নামের বিষাক্ত হরমোনাল স্প্রে দিয়ে কাঁচা ফল পাকানো হয়। আবার পচা ফল তাজা রাখতেও কেমিক্যাল রয়েছে। তরমুজের ভেতর সিরিঞ্জ দিয়ে ক্ষতিকর এরিথ্রোসিন বি এবং স্যাকারিন পুশ করে লাল ও মিষ্টি করার কাণ্ডও ধরা পড়েছে। বাদ পড়ছে না জাতীয় ফল কাঁঠাল, আম, কলা, পেঁপে, পেয়ারা ও আনারসও। এ তালিকার সবচেয়ে বেশি বিষাক্ত ফলের নাম কলা। পরিপক্ব হওয়ার সময়ের আগে কলায় বড় করতে হরমোন স্প্রে করা হয়। অপরিণত কলা রাইপেন-ইথোফেন বা কার্বাইড স্প্রে করে পাকানো হয়। এমনকি টমেটো, মাল্টা ও লিচুতে সবচেয়ে বিপজ্জনক মাত্রায় এর ব্যবহার হয়ে থাকে, যা স্বাস্থ্যের জন্য খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। বাংলাদেশের ন্যাশনাল ফুড সেফটি ল্যাবরেটরির গবেষণায়ও গরুর দুধ ও দইয়ের মধ্যে বিপজ্জনক মাত্রায় অণুজীব, অ্যান্টিবায়োটিক, কীটনাশক ও সিসা পাওয়া যায়। জনস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের পরীক্ষাগারে বাজারের বিভিন্ন কোম্পানির তরল দুধের নমুনা পরীক্ষা করে এতে অ্যালড্রিনের উপস্থিতি পাওয়া গেছে। যুক্তরাজ্যভিত্তিক দি ইকোনমিস্ট ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (ইআইইউ) ‘গ্লোবাল ফুড সিকিউরিটি ইনডেক্স, ২০২২’ শীর্ষক প্রতিবেদনে বাংলাদেশের সর্বত্রই ভেজাল খাবারের চিত্র তুলে ধরা হয়েছে, যার কারণে বাংলাদেশে প্রতি বছর দুই লাখ ৭৭ হাজার মানুষ হƒদরোগে মারা যায়, যার ৪ দশমিক ৪১ শতাংশের জন্য দায়ী ট্রান্সফ্যাট। ফলমূল, মাছ, গোশত থেকে শুরু করে শাকসবজি, দুধ ও অন্যান্য দ্রব্য সর্বত্র ভেজালের ছড়াছড়ি। যদিও নাগরিকদের জন্য নিরাপদ খাদ্যের জোগান নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের অন্যতম প্রধান দায়িত্ব।

জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও) ‘ক্রপ প্রসপেক্টস অ্যান্ড ফুড সিচুয়েশন’ শীর্ষক ২০২২ সালে প্রকাশিত প্রান্তিক গবেষণা প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, মারাত্মক খাদ্যনিরাপত্তাহীনতার হুমকিতে থাকা দেশের তালিকায় বাংলাদেশের নাম রয়েছে। দেশে সাড়ে তিন কোটি মানুষ এখন মধ্যম ও গুরুতর মাত্রার খাদ্যনিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে, যা বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার ২১ শতাংশ। দ্রব্যমূলের ঊর্ধ্বগতিতে একটা শ্রেণির মানুষের জীবনযাত্রা প্রায় অসহনীয় পর্যায়ে চলে গেছে। অপর আরেক জরিপে বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির (ডব্লিউএফপি) ‘বাংলাদেশের খাদ্যনিরাপত্তা ও বিপন্নতা পর্যবেক্ষণ’ শীর্ষক প্রতিবেদন প্রকাশ করে ২২ নভেম্বর। এতে বলা হয়, ৩৭ শতাংশ মানুষের আয় কমেছে এবং ৮৮ শতাংশ মানুষের ব্যয় বেড়ে যাওয়া খাদ্য নিরাপত্তাহীনতারই ইঙ্গিত। এই জরিপে খাদ্যনিরাপত্তার যে চিত্র তুলে ধরা হয়েছে, তা খুবই উদ্বেগজনক। বেঁচে থাকার জন্য মানুষের সর্বাগ্রে প্রয়োজন খাদ্য। সেই খাদ্যপণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ার পাশাপাশি মানুষের আয় কমে গেলে পরিস্থিতি কতটা ভয়াবহ হতে পারে, অনুমান করা কঠিন নয়। পাওয়ার অ্যান্ড পার্টিসিপেশন রিসার্চ সেন্টার ও ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অব গর্ভন্যান্স স্টাডিজের গবেষণা অনুযায়ী, মূল্যস্ফীতির প্রভাবে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য বেড়ে যাওয়ায় বর্তমানে দেশে ২১ লাখ মানুষ নতুন করে দরিদ্র হয়ে পড়েছে। করোনার আগে ২০১৭ সালে দরিদ্র মানুষের মাথাপিছু আয় ছিল ১১৭ টাকা। ১৭ কোটি মানুষের দেশে ৮০ শতাংশ মানুষই দরিদ্র ও নি¤œবিত্ত শ্রেণির। 

সাম্প্রতিক বৈশ্বিক ক্ষুধা সূচকের (জিএইচআই) প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘খাদ্যের নিরাপত্তার অভাবকে না মিটিয়ে দীর্ঘমেয়াদি শান্তি অসম্ভব। করোনার অভিঘাত ও নিত্যপণ্যের অতিরিক্ত মূল্যবৃদ্ধির কারণে বৈশ্বিক ক্ষুধা সূচকে বাংলাদেশের অবস্থানের আরও অবনতি হয়েছে। এ বছর ১২১টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ ৮৪তম স্থানে আছে, যা ২০২১ সালে ৭৬ এবং ২০২০ সালে ১০৭টি দেশের মধ্যে ছিল ৭৫তম। অতিসাম্প্রতিক আয়ারল্যান্ডভিত্তিক মানবিক সংস্থা কনসার্ন ওয়ার্ল্ডওয়াইড এবং জার্মানির ওয়েল্ট হাঙ্গার হিলফ যৌথভাবে ‘বৈশ্বিক ক্ষুধা সূচক, ২০২২’ প্রকাশ করেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘ক্ষুধার বিরুদ্ধে লড়াই বিপজ্জনকভাবে পথভ্রষ্ট’ হয়ে পড়েছে। বৈশ্বিক ক্ষুধা সূচক আমাদের এক ভয়াবহ বাস্তবতার মুখোমুখি করেছে। আর এই সংকট ধীরে ধীরে বিপর্যয়কর রূপ নিতে শুরু করেছে। বাংলাদেশে সরকারিভাবে কোনো তথ্য প্রকাশ করা না হলেও ২০২০ ও ২০২১ সালে প্রকাশিত বেশ কয়েকটি বেসরকারি গবেষণার ফলাফল দেখায় যে, করোনা পরিস্থিতিতে দেশে দারিদ্র্য হারে উল্লম্ফন ঘটেছে। এ হার দাঁড়িয়েছে ৩৫ থেকে ৪২ শতাংশে। এসব দরিদ্র মানুষের উল্লেখযোগ্য একটি অংশ যে ক্ষুধার্ত অবস্থায় দিন কাটাচ্ছে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। এজন্য বাংলাদেশে জনস্বাস্থ্য ও জনপুষ্টি দুটিই যে অত্যন্ত নাজুক তাতে সন্দেহ নেই। পুষ্টি উপাদানের অভাবে বিভিন্ন বয়সের মানুষ নানারকম রোগবালাইয়ে ভুগছে। বর্তমানে অপুষ্টি হলো একটি জাতীয় সমস্যা। সম্প্রতি একটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত রিপোর্টে অপুষ্টির নতুন কিছু তথ্য প্রকাশ পেয়েছে। মায়ের ওজন বেশি বা স্থূলকায়; কিন্তু তার সন্তানের ওজন কম, শরীর শীর্ণ ও বয়সের তুলনায় বৃদ্ধি কম, যেগুলো আসলে অপুষ্টির নমুনা। বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) ওই গবেষণায় দেখা গেছে, দেশের ২১ শতাংশ পরিবার এ ধরনের অপুষ্টির শিকার। এর মধ্যে অতি ওজনের মা ও খর্বকায় বা কৃশকায় বা কম ওজনের সন্তানের হার ১৩ শতাংশের বেশি। আর কম ওজনের মা ও অতি ওজনের সন্তানের হার প্রায় আট শতাংশ। বিভিন্ন সংস্থা কর্তৃক প্রাপ্ত জরিপ অনুযায়ী, করোনার আঘাতে নতুন করে দারিদ্র্যসীমার নিচে চলে যাওয়া আড়াই কোটি মানুষের দুরবস্থা কাটিয়ে উঠতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা দরকার। খাদ্য উৎপাদন, সংরক্ষণ ও প্রক্রিয়াজাতকরণে অতিমাত্রায় রাসায়নিক ও কীটনাশকের ব্যবহার এরই মধ্যে ‘গোদের ওপর বিষফোঁড়া’ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ‘প্রোলিফারেশন অব মাইক্রোপ্লাস্টিক ইন কমার্শিয়াল সি সল্টস ফ্রম দ্য ওয়ার্ল্ড লংগেস্ট সি বিচ অব বাংলাদেশ’ শীর্ষক সাম্প্রতিক গবেষণা প্রতিবেদন তথ্যে মানুষের শরীরের জন্য ক্ষতিকর মাইক্রোপ্লাস্টিক বাংলাদেশে উৎপাদিত লবণে পাওয়া গেছে। মাইক্রোপ্লাস্টিকের উপস্থিতি এখন ভয়ংকর রূপ ধারণ করেছে। লবণ থেকে শুরু করে মাছের পেটেও এর উপস্থিতি মিলছে। এ লবণের প্রতি কেজিতে গড়ে প্রায় দুই হাজার ৬৭৬টি মাইক্রোপ্লাস্টিক রয়েছে। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, দেশের মানুষ যে হারে লবণ গ্রহণ করে, তাতে প্রতি বছর একজন মানুষ গড়ে প্রায় ১৩ হাজার ৮৮টি মাইক্রোপ্লাস্টিক গ্রহণ করে। এছাড়া বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট ও বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীদের একটি যৌথ গবেষণায় দেখা গেছে, বঙ্গোপসাগর থেকে আহরিত বিভিন্ন প্রজাতির মাছ ও অণুজীবের পেটে ক্ষুদ্র আকারের মাইক্রোপ্লাস্টিকে অস্তিত্ব পাওয়া যাচ্ছে। যে কয়টি উপাদান মানবদেহে ক্যানসার সৃষ্টি করে, তার মধ্যে মাইক্রোপ্লাস্টিক অন্যতম, যা মানুষের স্বাস্থ্যঝুঁকি অনেকগুণ বাড়িয়ে দিচ্ছে।

বাংলাদেশের মানুষের অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন, আয়বৈষম্য, অনিরাপদ খাদ্য ও অপুষ্টির কারণে স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ছে এবং জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে চিকিৎসানির্ভরতা হ্রাস করা প্রয়োজন। আমরা জানি, প্রতিকারের চেয়ে প্রতিরোধই উত্তম। জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় লক্ষ্যে চিকিৎসা থেকে রোগপ্রতিরোধের গুরুত্ব দিয়ে কাজ করা দরকার, যাতে জীবনযাপনের প্রণালি ও খাদ্যভ্যাসের পরিবর্তন এনে মানুষ এসব রোগব্যাধি থেকে মুক্ত থাকতে পারে। একটু সচেতন হলেই অসংক্রামক রোগ এড়ানো যায়। সরকারের ভাষ্যমতে, যেহেতু আমরা এখন মধ্য আয়ের দেশে উপনীত হয়েছি। তাই রাষ্ট্রের অন্যতম মৌলিক দায়িত্ব ও প্রাথমিক কর্তব্য হচ্ছে জনগণের জীবনধারণের মৌলিক উপকরণের ব্যবস্থা করার পাশাপাশি জনগণের পুষ্টির স্তর ও জনস্বাস্থ্যের উন্নতি সাধন করা। এছাড়া জাতীয় স্বাস্থ্যনীতির মূল লক্ষ্য সমাজের সর্বস্তরের মানুষের কাছে সংবিধান ও বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সনদ অনুসারে পুষ্টির স্তর উন্নয়ন ও জনস্বাস্থ্যের উন্নতি সাধন করা। সামগ্রিক বিষয় বিবেচনায় রোগপ্রতিরোধ ব্যবস্থার প্রতি জোর দেয়ার ক্ষেত্রে আমাদের সাংবিধানিক দায়িত্ব রয়েছে। এজন্য স্বাস্থ্যঝুঁকির লাগাম টেনে ধরতে এবং জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় তদারকি বাড়াতে হবে।

আইনজীবী

masumbillahlaw06@gmail.com 

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০