ভারতীয় বিখ্যাত পরিচালক, প্রযোজক ও চিত্রনাট্যকার সুভাষ ঘাই ১৯৪৫ সালের ২৪ জানুয়ারি নাগপুরে একটি পাঞ্জাবি পরিবারে জন্ম গ্রহণ করেন। তিনি দিল্লিতে উচ্চমাধ্যমিক ও হরিয়ানার রোহতাকে স্নাতক শেষ করেন। ১৯৬৩ সালে তিনি পুনে চলে যান এবং ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন অব ইন্ডিয়ায় যোগদান করেন।
চলচ্চিত্র জগতে সুভাষ ঘাইয়ের পথচলা শুরু অভিনেতা হিসেবে। তিনি ‘তাকদির’ (১৯৬৭) ও ‘আরাধান’ (১৯৭১) এ দুটি ছবিতে ছোট ভূমিকায় অভিনয় করেন। তিনি ১৯৭৬ সালে ‘কালিচরণ’ ছবির মাধ্যমে পরিচালনা শুরু করেন। সুভাষ ঘাই ২০১৬ সাল পর্যন্ত মোট ১৬টি সিনেমা পরিচালনা করেন। এসব ছবির চিত্রনাট্যও রচনা করেন তিনি। ১৯৮০ ও ১৯৯০ সালে তিনি দিলীপ কুমারের সঙ্গে ‘বিধাতা’ (১৯৮২), ‘কর্ম’ (১৯৮৬) ও ‘সওদাগর’ (১৯৯১)Ñএ তিনটি ছবি নির্মাণ করেন। ছবিগুলোর জন্য তিনি সেরা পরিচালক হিসেবে ফিল্মফেয়ার
অ্যাওয়ার্ড লাভ করেন।
সুভাষ ঘাই-ই প্রথম ‘হিরো’ ছবির মাধ্যমে জ্যাকি শ্রফকে প্রধান চরিত্রে অভিনয়ের সুযোগ দেন। অনিল কাপুরও তার নির্মিত ‘মেরি জাং’ (১৯৮৫) ছবিটিতে অভিনয় করে তারকা খ্যাতি পান। সে সময় ‘মেরি জাং’ অনিল কাপুরের ক্যারিয়ারে নতুন মাত্রা যুক্ত করেছিল। এ ছবিতে অভিনয় করে অনিল কাপুর সেরা অভিনেতা হিসেবে ফিল্মফেয়ার অ্যাওয়ার্ডের জন্য মনোনীত হয়েছিলেন।
১৯৯৭ সালে সুভাষ ঘাই তার ‘পরদেশ’ ছবিতে শাহরুখ খানকে কাস্ট করেন। এই ছবি মহিমা চৌধুরী ও অপূর্বা অগ্নিহোত্রীকে বলিউডে পরিচিতি এনে দেয়। এরপর তিনি ঐশ্বরিয়া রাইকে নিয়ে ১৯৯৯ সালে ‘তাল’ নির্মাণ করেন। ‘যাদেন’ (২০০১) ও ‘কিসনা: দ্য অরিয়র পোয়েট’ ছবি দুটি ফ্লপের পর তিনি পরিচালক হিসেবে বিরতি নেন এবং তখন থেকে তিনি প্রযোজনা শুরু করেন। ‘এতরাজ’, ‘ইকবাল’, ‘থার্টি সিক্স চায়না টাউন’ ও ‘আপনা সপনা মানি মানি’ ছবিগুলোর প্রযোজক সুভাষ ঘাই। তিনি ২০০৬ সালে মুম্বাইয়ে হুইসেল উড ইন্টারন্যাশনাল নামে একটি ফিল্ম ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা করেন। তিন বছর বিরতির পর ২০০৮ সালে তিনি ‘ব্ল্যাক অ্যান্ড হোয়াইট’ ও ‘যুবরাজ’ ছবি দুটি পরিচালনা করেন।
তিনি ‘ইকবাল’ সিনেমাটির জন্য ২০০৬ সালে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন। ১৯৯৮ সালে ‘পরদেশ’ ছবির জন্য সেরা চিত্রনাট্যকারের পুরস্কার পান।
সুভাষ ঘাই ১৯৭০ সালে পুনের মেয়ে রেহানা আলিয়াস মুক্তাকে বিয়ে করেন। তাদের দুই মেয়ে। তিনি তার পরিবারের সঙ্গে এখন মুম্বাইয়ে বসবাস করেন।