Print Date & Time : 20 June 2025 Friday 10:11 pm

জমি অধিগ্রহণ জটিলতায় এক বছরে চালু হয়নি সেতু

মফিজ জোয়ার্দ্দার, চুয়াডাঙ্গা: চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার মাথাভাঙ্গা নদীর ওপর প্রায় পৌনে সাত কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত সেতুটি নির্মাণকাজ শেষ হলেও জমি অধিগ্রহণ নিয়ে জটিলতার কারণে সংযোগ সড়ক নির্মাণ নিয়ে দেখা দিয়েছে অনিশ্চয়তা। চুক্তি অনুযায়ী সেতুটি ২০২২ সালের ১৮ আগস্টের মধ্যে নির্মাণকাজ শেষ করে জনসাধারণের চলাচলের জন্য উš§ুুক্ত করে দেয়ার কথা ছিল। কিন্তু জমি অধিগ্রহণের জটিলতায় এক বছর পরও সেতুটি চালু করা সম্ভব হয়নি। 

চুয়াডাঙ্গা এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলীর দপ্তর থেকে পাওয়া তথ্য মতে, চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার পীরপুর হাটকালুগঞ্জের হাট সড়কে ২ হাজার ৫০০ মিটার চেইনেজে ৯০ মিটার পিসি গার্ডার ব্রিজ নির্মাণকাজ গত ২০২১ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হয়। এর আগে ২০২১ সালের ৩১ জানুয়ারি চুক্তিমূল্যের ৬ কোটি ৬৬ লাখ ৬৮ হাজার ১০ টাকা ব্যয়ে এ নির্মাণ কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন চুয়াডাঙ্গা-১ আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুন। এলজিইডির উপজেলা ইউনিয়ন গ্রাম সড়কে অনূর্ধ্ব ১০০ মিটার ব্রিজ নির্মাণ প্রকল্পের এ কাজটি কুষ্টিয়ার মেসার্স সৈকত এন্টারপ্রাইজ জেভিসিএ স্বত্বাধিকারী ঠিকাদার নুরুজ্জামান মিয়া পাওয়ার পর স্থানীয়ভাবে বাস্তবায়ন করছে চুয়াডাঙ্গার মেসার্স ইমি মটরর্সের স্বত্বাধিকারী ঠিকাদার ইলিয়াস হোসেন।

ব্রিজ নির্মাণ অংশে নদীর দুই পাড়ের হাটকালুগঞ্জ গাঙপাড়া ও পীরপুর গ্রামের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন ব্যক্তি জানান, সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুন যেদিন ভিত্তিপ্রস্থর স্থাপন করেন সেদিন আনন্দে আত্মহারা হয়ে নদীর দুই পাড়ের জমির মালিকরা ব্রিজের সংযোগ সড়ক করার জন্য স্বেচ্ছায় জমি দেয়ার অঙ্গীকার করেছিল। তারপর ব্রিজ নির্মাণ কাজ শেষের দিকে চলে আসায়, ঠিকাদার সংযোগ সড়ক নির্মাণের প্রক্রিয়া শুরু করলে জমির মালিকরা বাধা সৃষ্টি করে।

নির্বাহী প্রকৌশলীর দপ্তর থেকে পাওয়া তথ্যে আরও জানা যায়, এ দপ্তর থেকে ২০২৩ সালের ২ জানুয়ারি জমি অধিগ্রহণের জন্য মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠানো হয়। একই বছরের ১৬ জুলাই মন্ত্রণালয় থেকে জমি অধিগ্রহণের অনুমোদন দেয়া হয় এবং ২৩ জুলাই পরিবেশ অধিদপ্তরের অনুমোদনের জন্য প্রস্তাব পাঠানো হলে সেখান থেকে অনুমোদন পাওয়া যায় ২১ আগস্ট। তারপর জমি অধিগ্রহণের জন্য চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসকের সম্মতিতে তার দপ্তরে ২০ আগস্ট প্রস্তাব পাঠানো হয়, যা জেলা ভূমি অধিগ্রহণ শাখায় প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

চুয়াডাঙ্গা এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী জাহাঙ্গীর আলম বলেন, এই ব্রিজটি নির্মাণের জন্য হাটকালুগঞ্জ এলাকায় ০.৩৪১৮ একর ও পীরপুর এলাকায় ০.৩০৬৪ একর জমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়ায় রয়েছে। অধিগ্রহণ প্রক্রিয়ার কাজ শেষ হলে ব্রিজটির সংযোগ সড়ক ও বাকি নির্মাণকাজ শেষ হবে। তারপর ব্রিজটি চলাচলের জন্য উš§ুক্ত করে দেয়া হবে। এ বিষয়গুলো না জেনে কয়েকটি গণমাধ্যমে ব্রিজটি নিয়ে নেতিবাচক সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে যা মোটেও কাম্য নয়। যদি সংযোগ সড়ক নির্মাণ না করে ব্রিজ নির্মাণকাজ শেষ হতো তাহলে সংবাদ প্রকাশ যথার্থ হতো, কিন্তু কাজ শেষ না হতেই ব্রিজটি কীভাবে সংবাদ শিরোনাম হলো, তা অবাক করার মতো বিষয়!