জমি অধিগ্রহণ ২৫ একর ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে ৪৬৫ একর এলাকায়!

ইসমাইল আলী: মাতারবাড়িতে নির্মাণ করা হবে এলএনজিভিত্তিক ৬০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্র। এজন্য জমি অধিগ্রহণে পৃথক প্রকল্প নিয়েছে কোল পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি (সিপিজিসিবিএল)। প্রকল্পটির আওতায় জমি অধিগ্রহণ করা হবে ২৫ একর। অথচ ৪৬৫ একর এলাকার ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য পুনর্বাসন ও ক্ষতিপূরণের প্রস্তাব করেছে কোম্পানিটি। এছাড়া জমি অধিগ্রহণ ব্যয়ও ধরা হয়েছে তুলনামূলকভাবে বেশি। এ প্রস্তাবগুলোতে আপত্তি তুলেছে বিদ্যুৎ বিভাগ।

সম্প্রতি এ-সংক্রান্ত উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব (ডিপিপি) বিদ্যুৎ বিভাগে পাঠায় সিপিজিসিবিএল। যাচাই-বাছাই শেষে সংশোধনের জন্য প্রকল্প প্রস্তাবটি ফেরত দেওয়া হয়েছে।

প্রকল্প যাচাই কমিটির কার্যপত্রে বলা হয়েছে, সিপিজিসিবিএল ও জাপানের মিতসুই যৌথভাবে এলএনজিভিত্তিক ৫০০-৬০০ মেগাওয়াট কম্বাইন্ড সাইকেল বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করবে। এজন্য ভূমি অধিগ্রহণ, ভূমি উন্নয়ন ও সম্ভাব্যতা যাচাই করা হবে। পাশাপাশি ৬৫ লাখ ৯৬ হাজার ঘনমিটার ভূমি উন্নয়নসহ বাঁধ নির্মাণ করা হবে। এছাড়া চার কিলোমিটার অস্থাীয় ফেঞ্চিং, এক হাজার ৭৫০ বর্গমিটার অস্থায়ী সাইট অফিস, এক হাজার ৭৫০ বর্গমিটার অস্থায়ী পুলিশ ব্যারাক, চার কিলোমিটার অভ্যন্তরীণ রাস্তা ও তিন কিলোমিটার সংযোগ সড়ক নির্মাণ করা হবে।

এদিকে এলএনজি পরিবহনে সাত কিলোমিটার পাইপলাইন ও বিদ্যুৎ সঞ্চালনে সাড়ে পাঁচ কিলোমিটার সোর্স লাইন নির্মাণ করা হবে। চলতি বছর শুরু হয়ে ২০২১ সালের জুনের মধ্যে প্রকল্পটি শেষ করা হবে। এতে ব্যয় ধরা হয়েছে ৫৮৮ কোটি ৪৩ লাখ টাকা। এর মধ্যে ৫৭৪ কোটি ৫৩ লাখ টাকা চাওয়া হয়েছে সরকারের তহবিল থেকে। আর ১৩ কোটি ৯০ লাখ টাকা সরবরাহ করবে কোম্পানিটি।

বৈঠকে বলা হয়, প্রকল্পটির আওতায় মাতারবাড়িতে কোহেলিয়া নদীর পাশে ২৫ একর জমি অধিগ্রহণ করা হবে। তবে লাইভলিহুড অ্যান্ড ইনকাম লস রেস্টোরেশন অ্যান্ড কম্পেনসেশন প্ল্যান বাস্তবায়ন খাতের ব্যয় প্রাক্কলন প্রস্তুত করা হয়েছে ৪৬৫ একরের জন্য। প্রকল্প এলাকায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষকে পুনর্বাসন ও ক্ষতিপূরণ প্রদানের উদ্দেশ্যে এটি নেওয়া হয়েছে। এ অংশের ব্যয় প্রাক্কলন প্রকৃত অধিগৃহীতব্য ভূমির পরিমাণের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হওয়া প্রয়োজন।

এদিকে সিপিজিসিবিএল ‘বাংলাদেশ-সিঙ্গাপুর ৭০০ মেগাওয়াট আল্ট্রা সুপার-ক্রিটিক্যাল’ কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে ভূমি অধিগ্রহণ করছে, যা এলএনজিভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের পাশেই অবস্থিত। কয়লাভিত্তিক এ প্রকল্পের পরিশোধিত মূল্যের চেয়ে এলএনজিভিত্তিক প্রকল্পে ভূমির ব্যয় দ্বিগুণ হারে প্রাক্কলন করা হয়েছে। এ বিষয়েও আপত্তি তোলা হয় বৈঠকে।

‘বাংলাদেশ-সিঙ্গাপুর ৭০০ মেগাওয়াট আল্ট্রা সুপার-ক্রিটিক্যাল’ বিদ্যুৎ প্রকল্পে অস্থায়ী সাইট অফিস, অস্থায়ী পুলিশ ব্যারাক ও সোর্স লাইন রয়েছে। তাই এক্ষেত্রে দ্বৈততা পরিহার করা যেতে পারে বলে বৈঠকে জানানো হয়। এছাড়া বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য এলএনজি পরিবহনে সাত কিলোমিটার পাইপলাইন নির্মাণ মূল প্রকল্পের আওতায় বাস্তবায়ন করা উচিত। তাই জমি অধিগ্রহণ থেকে এ ব্যয় বাদ দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়।

জানতে চাইলে বিদ্যুৎ বিভাগের সচিব ড. আহমদ কায়কাউস বলেন, এলএনজিভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রটি নির্মাণে জমি অধিগ্রহণের প্রস্তাব দিয়েছে কোল পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি। এতে কিছু অসংগতি রয়েছে, যেগুলো সংশোধনে সুপারিশ করা হয়েছে।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০