Print Date & Time : 22 June 2025 Sunday 4:35 pm

জমি বা ফ্ল্যাট কেনার জন্য ঋণ

নিজস্ব প্রতিবেদক: সীমিত আয়ের মানুষের জমি বা ফ্ল্যাট কেনার জন্য দরকার হয় ব্যাংক লোন। লোন নেয়ার জন্য ব্যাংকও কিছু বিষয়ের নিশ্চয়তায় চায়। আর নিশ্চয়তা পূরণ হলে ফ্ল্যাট বা জমি কেনার জন্য ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোও ঋণ দিতে আগ্রহী হয়। অর্থাৎ দুইয়ে দুইয়ে চার হলেই আপনি পাবেন লোন। লোন নিয়ে চট্টগ্রাম মহানগরের কাতালগঞ্জ এলাকায় ফ্ল্যাট কিনেছেন বাহার চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘ফ্ল্যাট কেনার জন্য একসঙ্গে অনেক টাকার প্রয়োজন। এতগুলো টাকা একসঙ্গে জোগাড় করা আমাদের মতো মধ্যবিত্তদের জন্য বেশ কষ্টসাধ্য। তাই ফ্ল্যাট কেনার জন্য ব্যাংক থেকে লোন নিয়েছি।’

আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ নেয়াটা অনেকটাই ঝুঁকিমুক্ত ও নিরাপদ। ঋণ পাওয়াও তুলনামূলক সহজ। আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ঋণ দেয়ার ক্ষেত্রে কিছু শর্ত রয়েছে। শর্তগুলো মানলে সহজেই পেয়ে যাবেন প্রয়োজনীয় ঋণ। ব্যাংক কর্মকর্তা নেয়ামত উল্লাহ বলেন, বর্তমানে ফ্ল্যাট কেনার জন্য ব্যাংক থেকে ঋণ নিলে সুদের হার সর্বোচ্চ ৯ শতাংশ। তবে ব্যাংকভেদে এই সুদ ৮ থেকে ৯ শতাংশ। আবার কিছু আর্থিক প্রতিষ্ঠানে এ সুদের হার বেশি। ফ্ল্যাট বা জমি কেনার জন্য ঋণ গ্রহণের শর্ত ৭০ বনাম ৩০ শতাংশ। অর্থাৎ আপনি যদি এক কোটি টাকার একটি ফ্ল্যাট কিনবেন বলে মনস্থির করেন, তাহলে ব্যাংক আপনাকে ঋণ দেবে ৭০ লাখ, বাকি ৩০ লাখ টাকা দিতে হবে আপনাকে। তবে ব্যাংক থেকে আপনি কত টাকা ঋণ পাবেন, সেটি নির্ভর করে আপনার মাসিক বেতন ও আয়ের ওপর।

গ্রাহকেরা সবচেয়ে বেশি আবাসন ঋণ নেন ব্যাংক থেকে। আইএফআইসি ব্যাংকের ‘আমার বাড়ি’ নামে আলাদা একটি স্কিম রয়েছে। আইএফআইসি ব্যাংক লিমিটেডের মোহাম্মদ সরওয়ার বলেন, ‘যাঁরা নিজের একটি বাড়ির স্বপ্ন দেখেন, তাদের জন্য আইএফআইসি ‘আমার বাড়ি’ একটি আর্থিক সমাধান। এটি বাংলাদেশের সব ঋণযোগ্য ব্যক্তির জন্য একটি আকর্ষণীয় লোন সুবিধা। আইএফআইসি ‘আমার বাড়ি’ ঋণ প্রজেক্টের আওতায় গ্রাহকদের কয়েকটি শর্তে দুই কোটি টাকা পর্যন্ত ঋণ দিয়ে থাকে, যা ২০ থেকে ২৫ বছর পর্যন্ত কিস্তি পরিশোধের সুবিধা পাবে। আর অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের লোন টেকওভারের জন্য কোনো প্রসেসিং ফি নেই।’

সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য অল্প সুদে গৃহনির্মাণ ঋণ পাওয়ার সুযোগ রয়েছে। রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী, জনতা, অগ্রণী ও রূপালী ব্যাংক এবং বাংলাদেশ হাউস বিল্ডিং ফাইন্যান্স করপোরেশন ছাড়াও ইসলামী ব্যাংকসহ বেসরকারি খাতের পাঁচটি ব্যাংক থেকেও গৃহনির্মাণ ঋণ নিতে পারবেন সরকারি চাকরিজীবীরা।

অর্থ মন্ত্রণালযয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এখন থেকে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড, পূবালী ব্যাংক, ট্রাস্ট ব্যাংক, কমিউনিটি ব্যাংক বাংলাদেশ ও স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক থেকেও গৃহনির্মাণ ঋণ নিতে পারবেন। চাকরি স্থায়ী হওয়ার পাঁচ বছর পর থেকে সরকারি চাকরিজীবীরা এ ঋণ পাওয়ার যোগ্য হবেন।

নীতিমালায় সর্বোচ্চ ঋণসীমা ৭৫ লাখ টাকা ও সর্বনি¤œ ঋণ ২০ লাখ টাকা করা হয়েছে। ঋণের বিপরীতে সুদের ওপর সুদ, অর্থাৎ চক্রবৃদ্ধি সুদ নেয়া হবে না। এ ছাড়া কোনো ‘প্রসেসিং ফি’ বা আগাম ঋণ পরিশোধের ক্ষেত্রে কোনো ‘অতিরিক্ত ফি’ দিতে হবে না। ঋণ পরিশোধের মেয়াদকাল সর্বোচ্চ ২০ বছর। সরকারি চাকরিতে চুক্তিভিত্তিক, খণ্ডকালীন ও অস্থায়ী ভিত্তিতে নিযুক্ত কেউ এ ঋণ পাবেন না।