আরিফ হোসেন, বরিশাল: শুরু হয়েছে শীত মৌসুম। কভিড-১৯ প্রকোপ কাটিয়ে শীতের শুরুতে জমে উঠেছে বরিশাল নগরীসহ দক্ষিণাঞ্চলের পর্যটন কেন্দ্রগুলো। এর মধ্যে পর্যটকদের সবচেয়ে বেশি আকৃষ্ট করছে বিভাগের মিনি সুন্দরবন খ্যাত পর্যটন কেন্দ্র ছৈলারচর।
এখানে প্রতিদিন বরিশাল বিভাগসহ দেশের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা থেকে পর্যটকরা আসতে শুরু করেছেন। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শীত মৌসুমের শুরুতে পর্যটকদের আগমনে উৎসবমুখর ছৈলারচর হয়ে উঠে জমজমাট। ঝালকাঠির কাঁঠালিয়া উপজেলায় বিষখালী নদীর তীরে প্রায় এক যুগ আগে জেগে ওঠা ছৈলারচর পরিণত হয়েছে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমিতে। এখানে রয়েছে পর্যটনের ব্যাপক সম্ভাবনা।
স্থানীয় প্রশাসন ছৈলারচরকে পর্যটকদের কাছে আরও আকর্ষণীয় করে তুলতে ব্যাপক উন্নয়ন কর্মসূচি নিয়েছেন। পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সহায়তা পেলে দক্ষিণাঞ্চলের অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র হতে পারে কাঁঠালিয়ার ছৈলারচর।
সূত্রমতে, বিষখালী নদীর তীরে জেগে ওঠা ৪১ একরের বিশাল চর এখন ৬১ একরে পরিণত হয়েছে। এখানে প্রাকৃতিকভাবে জš§ানো ছৈলা গাছ থেকে চরটি পরিচিতি পেয়েছে ‘ছৈলারচর’ নামে। এখানে কোনো হিংস্র প্রাণী না থাকায় এবং সহজ ও অপেক্ষাকৃত নিরাপদ যোগাযোগ ব্যাবস্থার কারণে সারাবছর ধরে ভ্রমণ পিপাসুদের ভিড় লেগে থাকে। তবে শীত মৌসুমের শুরুতে আগের চেয়ে পর্যটকদের আনাগোনা বেড়েছে।
এখানে রয়েছে ছৈলা, কেয়া, মাদার, আগুজি, নিম ও বাদামসহ নানা প্রজাতির ফলজ ও বনজ গাছ। সারাবছর পাখির কিচিরমিচির ডাকে মুখর থাকে পুরো চর। ফলে ছৈলারচরের এ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে বিমোহিত হন ভ্রমণ পিপাসুরা। পর্যটকদের কাছে চরটিকে আরাও আকর্ষণীয় করে তুলতে রোপণ করা হয়েছে নানা প্রজাতির গাছ, তৈরি করা হয়েছে বিশ্রামাগার ও শিশুদের বিনোদনের ব্যবস্থা।
চরের একদিকে ২০ একর জায়গাজুড়ে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে ডিসি ইকোপার্ক ও লেক। পার্কের মধ্যে রয়েছে একটি নয়নাভিরাম লেক। স্থানীয় উপজেলা প্রশাসন ভ্রমণ পিপাসুদের নদীর দৃশ্য উপভোগ করার জন্য নানা ব্যবস্থা চালু করেছে। চর কেন্দ্র করে কয়েকশ’ বেকার মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে। তবে সম্পূর্ণ পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে প্রয়োজন পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতা।
ইতোমধ্যে স্থানীয় সংসদ সদস্য বজলুল হক হারুনের সহযোগিতায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার সুফল চন্দ্র গোলদারের হস্তক্ষেপে ছৈলারচরে ব্যাপক উন্নয়নমূলক কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে। এছাড়া সংসদ সদস্যর হস্তক্ষেপে সড়ক পথে ছৈলারচরে যাওয়ার জন্য পর্যটকদের সুবিধার্থে আঞ্চলিক মহাসড়ক থেকে ছৈলারচর পর্যন্ত প্রায় পাঁচ কিলোমিটার সড়ক নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
স্থানীয় সংসদ সদস্য বজলুল হক হারুন বলেন, ছৈলারচর পর্যটন কেন্দ্র ও পিকনিক স্পটের উন্নয়নের জন্য আমি ব্যক্তিগতভাবে একাধিকবার অর্থ বরাদ্দ দিয়েছি। আমার নির্বাচনী এলাকা কাঁঠালিয়া-রাজাপুরসহ দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের জন্য ছৈলারচর পর্যটন কেন্দ্রটির ব্যাপক উন্নয়ন করা হবে। ইতোমধ্যে পর্যটন মন্ত্রণালয়ে এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার সুফল চন্দ্র গোলদার বলেন, ছৈলারচরে পর্যটকদের সুবিধার্থে উপজেলা পরিষদ ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে একাধিক পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। যার বেশিরভাগ বাস্তবায়ন করা হয়েছে। এখানে পর্যটকদের জন্য বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা তৈরি করতে পর্যটন মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে।