জয়পুরহাটে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে চলছে পাঠদান

প্রতিনিধি, জয়পুরহাট: জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল উপজেলার ধামশন্ডা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শ্রেণিকক্ষ সংকটে জরাজীর্ণ পাকা ভবনে ঝুঁকি নিয়ে চলছে পাঠদান। দেয়াল থেকে খসে পড়ছে পলেস্তারা। বেরিয়ে গেছে ছাদের রড। ফাটল দেখা দিয়েছে দেয়াল, ছাদ, পিলার ও বিমে। শ্রেণিকক্ষ সংকটে এক বেঞ্চে গাদাগাদি করে অবস্থান করছে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার মানোন্নয়নে নতুন ভবন নির্মাণের দাবি শিক্ষকদের।

বিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল উপজেলা সদর থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার দূরে নিভৃত পল্লিতে অবস্থান ধানশন্ডা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের। ১৯৭২ সালে ৪৯ শতক জায়গায় স্কুলটি প্রতিষ্ঠিত হলেও ১৯৯৪ সালে নির্মিত তিন কক্ষের একটি পাকা ভবনে চলছে এর পাঠদান। পাঁচ শিক্ষকের তত্ত¡াবধানে আশপাশের তিনটি আবাসন প্রকল্পসহ কয়েকটি গ্রামের ১৭৮ শিক্ষার্থী অধ্যয়ন করছে এই বিদ্যালয়ে। কিন্তু বর্তমানে সম্পূর্ণ ড্যামেজ হয়ে গেছে ভবনটি। বিম থেকে পলেস্তারা খসে পড়ায় জং ধরা রড বেরিয়ে গেছে। মাঝেমধ্যেই দেয়াল থেকে খসে পড়ছে পলেস্তারাও। তারপরও ঝুঁকিপূর্ণ ভবনেই পাঠদান চলছে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের। এ ছাড়া কক্ষ সংকটে গাদাগাদি করে বসে ক্লাস চললেও পড়ালেখায় মনোযোগ থাকে না শিক্ষার্থীদের। ঝড়-বৃষ্টি আর গরমে অতিষ্ঠ কোমলমতি শিক্ষার্থীরা।

আব্দুল করিম নামে এক অভিভাবক বলেন, ওই বিদ্যালয়ে আমার দুই সন্তানই পড়াশোনা করে। বিদ্যালয়ের ভবন এমন ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় সন্তানদের স্কুলে পাঠিয়ে আতঙ্কে থাকি। দীর্ঘদিন পেরিয়ে গেলেও বিদ্যালয়ের নতুন ভবন করা হচ্ছে না।

বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী আনিকা রহমান বলেন, ক্লাস চালাকালে ছাদের পলেস্তারা খুলে আমাদের শরীরে পরায় অনেক ভয় লাগে। আকাশে মেঘ দেখলেই বাবা-মা স্কুলে আসতে দিতে চান না। পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছামিউল আলম বলে, শ্রেণিকক্ষ সংকটে এক বেঞ্চে গাদাগাদি করে ক্লাস করতে হয়। এতে আমাদের পড়াশোনায় মন বসে না।

বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নাজিম উদ্দিন বলেন, একদিকে শ্রেণিকক্ষের স্বল্পতার জন্য শিক্ষার্থীদের গাদাগাদি করে বসতে হয়, যার জন্য পাঠদান ব্যাহত হয়। অপরদিকে ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। পাঠদানের সময় প্রায়ই বাচ্চাদের সামনেই পলেস্তারা খুলে পড়ে। এতে বাচ্চারা ভয় পেয়ে যায়। আবার ভবনে বাচ্চাদের জন্য কোনো ওয়াশরুম না থাকায় বাচ্চারা অনেক সময় ক্লাসরুমই নোংরা করে ফেলে।

প্রধান শিক্ষক তোজাম্মেল হোসেন তালুকদার বলেন, বিদ্যালয়ের ভবন কয়েক বছর ধরে জরাজীর্ণ অবস্থায় পরিণত হয়েছে। ভবনটির ছাদের পলেস্তারা প্রায়ই শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের ওপরে খুলে পড়ে। বিকল্প উপায় না থাকায় বাধ্য হয়েই শিক্ষার্থীদের এ ভবনে পাঠদান করা হচ্ছে।

বিদ্যালয়টির বিষয়ে ক্ষেতলাল উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মোজাম্মেল হক বলেন, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক একটি লিখিত দিয়েছে। ওটা আমরা আমলে নিয়েছি। শিক্ষা কমিটির রেজুলেশন নিয়ে পাঠিয়ে দেব। নতুন যেসব ভবন হবে সেগুলোর মধ্যে ওটাও থাকবে।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০