Print Date & Time : 20 June 2025 Friday 4:05 am

জয়পুরহাটে সরকারি জায়গায় স্থাপনা নির্মাণের অভিযোগ

এটিএম সেলিম সরোয়ার, জয়পুরহাট: জয়পুরহাটের কালাই উপজেলার উলিপুর-ভেরেণ্ডি মোড়ে রাস্তার জায়গা জোরপূর্বক দখলে নিয়ে স্থাপনা নির্মাণের কাজ অব্যাহত রেখেছেন প্রভাবশালীরা। জায়গা উদ্ধারের জন্য স্থানীয় মাত্রাই ইউপির সদস্য জিয়াউর রহমানসহ দুই গ্রামের প্রায় শতাধিক ব্যক্তির স্বাক্ষরে কালাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দেয়া হয়েছে। নির্বাহী কর্মকর্তা অভিযোগ পেয়ে তার কার্যালয় থেকে প্রতিনিধি পাঠিয়ে নির্মাণ কাজ বন্ধ করার কথা বলে এলেও প্রভাশালীরা বিভিন্ন কৌশলে ওই জায়গাতে স্থাপনা নির্মাণের কাজ অব্যাহত রেখেছেন।

গতকাল সোমবার সকালে সরেজমিনে গিয়ে এবং অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, উলিপুর-ভেরেণ্ডি গ্রামের মোড়ে অর্থাৎ কালাই-মাত্রাই সড়কের পূর্ব পাশে এবং ঈদগাহ মাঠের পশ্চিম পাশে উলিপুর গ্রামের মৃত মতিউর রহমানের ছেলে রেজা আহম্মেদের দুই শতক জমি রয়েছে। তিনি ঈদগা মাঠ কমিটির সাধারণ সম্পাদক ভেরেণ্ডি গ্রামের শহিদুল ইসলাম এবং সদস্য হায়দার আলীকে সঙ্গে নিয়ে তার জমি বাদ রেখে সামনের সরকারি জায়গা দাগ নং ৬৩৮-এর ওপর ব্যক্তিগত স্থাপনা নির্মাণের কাজ চলমান রেখেছেন। সরকারি জায়গায় ব্যক্তিমালিকানা স্থাপনা নির্মাণ করায় স্থানীয় লোকজন বাধা দিলে তাদের মধ্যে বাকবিতণ্ডাও হয়। এরপর স্থানীয় মাত্রাই ইউনিয়নের সদস্য ও ভেরেণ্ডি গ্রামের বাসিন্দা জিয়াউর রহমান বাদশাসহ দুই গ্রামের শতাধিক লোকজনের স্বাক্ষরে সরকারি জায়গা উদ্ধারের জন্য লিখিত অভিযোগ দেন কালাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন দপ্তরে।

অবশ্য কালাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা টুকটুক তালুকদার ওই অভিযোগ পেয়ে প্রতিনিধি পাঠিয়ে কাজ বন্ধ করার কথা বলে এলেও তারা স্থাপনা নির্মাণের কাজ অব্যাহত রেখেছেন।  

স্থানীয় সার্ভেয়ার ছামসুল হক ও আব্দুল কুদ্দুস জানান, সরকারি জায়গায় কাজ শুরুর আগে তারা দুজন মিলেই রেজার জায়গার সীমানা নির্ধারণ করেছেন। সে অনুযায়ী খুঁটিও পুঁতে রাখা হয়েছে। তারপরও রেজা মাঠ কমিটির লোকজনদের সঙ্গে যোগসাজশ করে জোরপূর্বক সরকারি জায়গায় ব্যক্তিগত স্থাপনা নির্মাণ করছেন।

ঈদগাহ মাঠ কমিটির সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বলেন, ওই জায়গা সরকারি নয়। যে স্থাপনা নির্মাণ করা হচ্ছে তা হলো ঈদগাহ মাঠের মেহেরাব। সরকারি বরাদ্দের টাকায় ওই কাজ করা হচ্ছে। এর বাইরে কিছুই নয়।

অভিযোগকারী ও ইউপি সদস্য জিয়াউর রহমান বাদশা বলেন, ঈদগাহ মাঠের পশ্চিম পাশে রেজার দুই শতক জায়গা বাদ রেখে সামনে সরকারি জায়গায় ব্যক্তিমালিকানায় ভবন নির্মাণ করছেন, যা নির্মাণ করা হচ্ছে তা ঈদগাহ মাঠের মেহেরাব নয়। যারা ঈদগাহ মাঠের কথা বলে নিজের স্বার্থে সরকারি জায়গায় স্থাপনা নির্মাণ করতে পারে, তারা আসলেই ভয়ানক লোক। ইউএনও লোক পাঠিয়ে কাজ বন্ধ করে গেলেও তিনি আবার কাজ শুরু করেছেন।

অভিযুক্ত রেজা আহম্মেদ বলেন, যে জায়গায় নির্মাণকাজ হচ্ছে সে জায়গা আমাদের। কোনো সরকারি জায়গা নয়। ঈদগাহ মাঠের জন্য সেখানে মেহেরাব নির্মাণ করা হচ্ছে। কোনো ব্যক্তিমালিকানাধীন ভবন নয়। তারা যে অভিযোগ করেছে তা মিথ্যা। 

কালাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা টুকটুক তালুকদার বলেন, অভিযোগ পাওয়ার পর সেখানে লোক পাঠিয়ে কাজ বন্ধ করা হয়েছে। তারপরও যদি কাজ চলমান থাকে, তাহলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।