জয়পুরহাটে সামান্য বৃষ্টিতে পাকা সড়কে হাঁটুপানি

প্রতিনিধি, জয়পুরহাট : জয়পুরহাটের কালাই উপজেলার আহম্মেদাবাদ ইউনিয়নের হাতিয়র তিন রাস্তার মোড়ে কামিল মাদ্রাসা ও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ আশপাশের ৭-৮টি গ্রামের কয়েক হাজার মানুষের চলাচলের একমাত্র রাস্তা ও পয়ঃনিষ্কাশন নালার অবস্থা নাজুক। পাকা রাস্তার দুই পাশে বসতবাড়িগুলো উচুঁ স্থানের নির্মাণ হওয়ায় সামান্য বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে যায়। আশপাশের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোতে ঢুকে পড়ে পানি। দীর্ঘদিন ধরে এমন দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন হাতিয়র কামিল মাদ্রাসা ও একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কোমলমতি শত শত শিক্ষার্থী, শিক্ষক-কর্মচারী ও পথচারীরা। তবে সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জানিয়েছেন, এসব সমস্যা সমাধানে কাজ চলছে।

জানা গেছে, ১৯২৮ সালে হাতিয়র কামিল মাদ্রাসা ও ১৯৭২ সালে হাতিয়র সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপিত হয়ে সুনামের সঙ্গে পরিচালিত হয়ে আসছে। এর পাশাপাশি হাতিয়র তিনমাথা মোড়ে গড়ে উঠেছে একটি বাজার। বাজারে রয়েছে স্থায়ী শতাধিক ব্যবসা-প্রতিষ্ঠান। রয়েছে বড় বড় রাইচ মিল ও ধান শুকানোর চাতাল। দুটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রতিদিন যাতায়াত করে প্রায় দুই হাজারের মতো শিক্ষার্থী। এছাড়া বাজারে যাতায়াত করে আশপাশের ৭-৮টি গ্রামের বাসিন্দারা। বিশেষ করে বর্ষা মৌসুমে এ রাস্তায় যাতায়াত করতে চরম ভোগান্তি পোহাতে হয় তাদের।      

হাতিয়র বাজারের কয়েকটি ব্যবসা-প্রতিষ্ঠানের মালিকের সঙ্গে সম্প্রতি কথা হয়। তারা বলেন, এখানকার মিল-চাতালের উৎপাদিত চাল এবং কৃষকদের উৎপাদিত ধান ও আলু প্রতিদিন ১০-১২টি পণ্যবাহী ট্রাক লোর্ড করে জয়পুরহাটের বিভিন্ন এলাকা ছাড়াও দেশের বিভিন্ন জেলায় নেয়া হয়। তবে সড়ক ও ড্রেনেজ সমস্যা প্রকট আকার ধারণ করেছে। সামান্য বৃষ্টি হলেই সড়ক পানিতে তলিয়ে যায়। ব্যবসা-প্রতিষ্ঠানের ভেতরও পানি উঠে যায়। পানি জমে থাকায় অনেকাংশ পাকা সড়কের পিচের ঢালাই উঠে গেছে। গর্তে ও ড্রেনে ময়লা-আবর্জনা জমে আছে। বর্ষাকালে এ দুর্ভোগ চরমে ওঠে। এসব সমস্যার সমাধান না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন তারা।

হাতিয়র বাজারের কাজী রাইচ মিলের স্বত্বাধিকার কাজী আব্দুল মোমেন বলেন, এ সড়ক এখন চলাচলের অনুপযোগী। হেঁটে চলাও কঠিন। কৃষি পূর্ণ নিতে আসা ট্রাক ও অটো চালকরা ভোগান্তিতে পড়েন।

বাজারের ফার্মেসি মালিক জহুরুল ইসলাম বলেন, রাস্তা নির্মাণ হয়েছে অনেক আগে, আর দুই পাশে বাড়ি নির্মাণ হয়েছে অনেক পরে। নকশা ছাড়া অপরিকল্পিতভাবে রাস্তা থেকে বসতবাড়িগুলো উঁচুতে নির্মাণ করার কারণে এ সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। তাই আজ এ ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে সবাইকে।

হাতিয়র সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফাহিমা আক্তার বলেন, এ রাস্তায় প্রায় হাঁটুপানি জমে রয়েছে। ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় জমানো পানিগুলো বেরও হয় না। ছোট ছোট শিশুরা এ রাস্তায় চলাচল করতে গিয়ে অনেক সময় তাদের পরনের কাপড় ভিজে যায়। আবার বই-খাতা পানিতে পড়ে নষ্ট হয়ে যায়। এ রাস্তা দ্রুত সংস্কার করার জন্য সংশ্লিষ্টদের অনুরোধ জানান তিনি।  

হাতিয়র কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আমিনুল ইসলাম বলেন, একটি কামিল মাদ্রাসা ও একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ আশপাশের ৭-৮টি গ্রামের লোকজনদের যাতায়াতের একমাত্র রাস্তা এটি। বসতবাড়ি থেকে রাস্তা নিচু হওয়ায় কি বর্ষা আর কি শুষ্ক সব সময় এ রাস্তায় পানি জমে থাকে। তবে বর্ষার সময় বেশি। ফলে শিক্ষার্থীসহ পথচারীদের যাতায়াত করতে অনেক কষ্ট পোহাতে হয়। এ সমস্যা সমাধানের অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি। 

স্থানীয় আহম্মেদাবাদ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলী আকবর বলেন, চলতি বর্ষা মৌসুমে রাস্তার কাজ সংস্কার করা হবে।

কালাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জান্নাত আরা তিথি বলেন, দুই পাশে উঁচু করে বসতবাড়ি নির্মাণ করায় রাস্তা নিচু হয়েছে। যে কারণে আশপাশ থেকে বৃষ্টির পানি এখানে ঢোকে। রাস্তার উন্নয়নসহ অন্যান্য সমস্যা সমাধানের পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০