ক্রীড়া ডেস্ক: ব্যাট-বল হাতে নিজেদের ঠিক মেলে ধরতে পারছে না লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ। খেসারতটা তাই আবারও দলটির দিতে হল হেরে। সোমবার ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে (ডিপিএল) নিজেদের চতুর্থ ম্যাচে নাঈম ইমলামের দল ৭ উইকেটে হেরেছে গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্সের বিপক্ষে। তাই দলটির জয়ের অপেক্ষা আরও বাড়ল।
বিকেএসপির ৪ নম্বর মাঠে সোমবার নিজেদের চতুর্থ ম্যাচে টস হেরে আগে ব্যাট করতে নেমে সুবিধা করতে পারেনি লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জের ব্যাটসম্যানরা। দলটির হয়ে সর্বোচ্চ ২৪ রান করেন মেহেদী মারুফ। তাই নির্ধারনী ২০ ওভারে নাঈম ইসলামের দল করে ৮ উইকেটে ১৩২ রান। পরে এ রানের ভর করে বোলাররা নিজেদের মেলে ধরতে পারেনি। যে কারণে ১৩ বল আগেই ৭ উইকেটের হার মানতে হয় নারায়ণগঞ্জের দলটির। এর আগে তিন ম্যাচ খেলেও তারা জয় পায়নি। প্রথম ম্যাচটি বৃষ্টির কারণে পরিত্যাক্ত হয়েছিল।
টস হেরে সোমবার ব্যাট করতে নেমে শুরু থেকেই বিপদে পড়ে রূপগঞ্জ। প্রথম ওভারের চতুর্থ বলেই ফিরে যান ওপেনার আজমীর আহমেদ। দলের অধিনায়ক নাঈম ইসলাম নামলেও ইনিংস বড় করতে পারেননি। দলীয় ১৭ রানে বাঁহাতি নাসুমের বলে বোল্ড হন তিনি (১৩)।
এদিকে দলের বিপদে মেহেদী মারুফের সঙ্গে জুটি বাঁধতে পারেননি জাকের আলীও। তাকে সাজঘরে ফেরান শেখ মেহেদী। তবে চতুর্থ উইকেট জুটিতে ঘুরে ম্যাচে ফেরার চেষ্টা করেন মারুফ ও আল-আমিন। তাদের জুটিতে আসে ৩২ রান। কিন্তু রান তোলার গতি বাড়াতে যেয়ে তারা এক পর্যায়ে পড়েন বিপদে। শেষ পর্যন্ত তাদের জুটি ভাঙেন গাজী গ্রুপের অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ। ২৪ বলে ২৫ রান করে ফিরেন মেহেদী মারুফ।
দলীয় ১২ রান যোগ করতেই সাজঘরে ফিরেন ১২ বলে ১৬ রান করা আল-আমিনও। সাব্বিরের সঙ্গে কিছুটা প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করেন সোহাগ গাজী। সাব্বির ধীর গতিতে খেললেও বড় শট খেলতে পারেননি। শেষ পর্যন্ত তাদের এই জুটি ভাঙেন মাহমুদউল্লাহ। নিজের বলে নিজেই ক্যাচ নিয়ে সাজঘরে ফেরান ২০ বলে ২১ রান করা সোহাগ গাজীকে। এর কিছুক্ষণ পরই সাজঘরে ফিরেন ২১ বলে ১৮ রান করা সাব্বিরও। শেষ পর্যন্ত ১৩২ রানেই থামতে হয় রূপগঞ্জকে।
গাজী গ্রুপের হয়ে সর্বোচ্চ দুটি করে উইকেট নেন মাহমুদউল্লা রিয়াদ ও মেহেদী ও মুগ্ধ।
অল্প পঁজি নিয়ে সোমবার বল হাতে অবশ্য শুরুটা আশা জাগানিয়ার মতোই হয়েছিল রূপগঞ্জের। ইনিংসের ৪র্থ ওভারের শেষ বলে দলটিকে উইকেট এনে দেন মোহাম্মদ শহীদ। এ পেসার দারুণ এক ডেলিভারিতে নাঈম ইসলামের ক্যাচে ফিরিয়ে দেন গাজী গ্রুপের ওপেনার মেহেদী হাসানকে। এরপর অবশ্য দলটির মাথা ব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়ান প্রতিপক্ষের সৌম্য সরকার ও মুমিনুল হক। তাদের দ্বিতীয় উইকেটের জুটি বেশ দ্রুতই রান তুলতে থাকেন। এক পর্যায়ে এ জুটি ৫৯ বলে করেন ৮২ রান। যে কারণে ম্যাচ থেকে ক্রমশ ছিটকে পড়ে রূপগঞ্জ। শেষ পর্যন্ত অবশ্য বিপজ্জনক এ জুটি ভাঙেন কাজী অনিক। ইনিংসের ১৪তম ওভারের ৫ম বলে তিনি ফিরিয়ে দেন সৌম্যকে (৪৩ বলে ৫৩ রান)। এর কিছুক্ষণ পরই নাবিল সামাদ প্রতিপক্ষ শিবিরে আঘাত হানেন। তিনি ফিরিয়ে দেন দারুণ খেলা মুমিনুল হককে (২৯ বলে ৩৪)। তারপরও ম্যাচে ফিরতে পারেনি লিজেন্ডসরা। অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ও ইয়াসির আলী সহজেই গাজী গ্রুপকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দেন ৭ বল আগে থেকেই। মাহমুদউল্লাহ ১২ বলে ১৫ রান করে অপরাজিত থাকেন। আর ইয়াসির অপরাজিত থাকেন ১০ বলে ১৩ রান করে।
রূপগঞ্জের হয়ে একটি করে উইকেট পেয়েছেন মোহাম্মদ শহীদ, কাজী অনিক ও নাবিল সামাদ। ব্যাট-বল হাতে দারুণ পারফর্ম করে ম্যাচ সেরার পুরস্কার জিতেছেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ।
সংক্ষিপ্ত স্কোর-
লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ: ১৩২/৮ (২০ ওভার) (মারুফ ২৪, সাব্বির ১৮, গাজী ২১; মাহমুদউল্লাহ ২/১৯, মেহেদী ২/২৩)।
গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্স : ১৩৩/৩ (১৭.৫ ওভার) (সৌম্য ৫৩, মুমিনুল ৩৪, মাহমুদউল্লাহ ১৫*, ইয়াসির ১৩*; নাবিল ১/১২, শহীদ ১/২২)।
ফল: গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্স ৭ উইকেটে জয়ী।
ম্যাচসেরা: মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ।